এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,০৬ আগস্ট : সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে জুলাইয়ের শুরুতে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, সময়ের ব্যবধানে তা সরকার পতনের একদফা দবিতে রূপ নেয় । আন্দোলনের নামে দেশ জুড়ে ব্যাপক নাশকতা শুরু করে বাংলাদেশের দুই জঙ্গি দল জামাত ও বিএনপি । সরকারি দল ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে মৃত্যু হয় কয়েকশ মানুষের। একপর্যায়ে প্রাণ বাঁচাতে সোমবার (৫ আগস্ট) দুপুরে পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করতে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশের ২৪ লাইভ নিউজপেপার বলেছে যে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছাড়ার আগেই পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে দেশ ছাড়েন মন্ত্রী ও সাংসদসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের শতাধিক নেতা। তারা ভারত, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, থাইল্যান্ড, চীন, দুবাইসহ বিভিন্ন গন্তব্যে পাড়ি জমান। তাদের অনেকেই পরিবার সঙ্গে নিয়ে গেছেন।
আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কৌতুহল দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের অবস্থান নিয়ে। গত শনিবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে শেষবারের মতো কথা বলতে দেখা যায় তাকে। এরপর তাকে আর কোথাও দেখা যায়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,একটি সূত্র জানায় যে ওবায়দুল কাদের রবিবার (৪ আগস্ট) রাতে সিঙ্গাপুর চলে গেছেন। তবে আরেকটি সূত্র দাবি করছেন, তিনি বর্তমানে নয়াদিল্লিতে অবস্থান করছেন। পাশাপাশি দেশ ছেড়ে সিঙ্গাপুরে গেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। শনিবার (৩ আগস্ট) সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের ফ্লাইটে করে মেয়র তাপস সিঙ্গাপুরে যান। এ সময় তার সঙ্গে অবশ্য কেউ ছিলেন না।
দলবল নিয়ে দেশ ছেড়েছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শায়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসানসহ বেশ কিছু ছাত্রনেতা সোমবার সিলেট সীমান্ত দিয়ে দেশ ছাড়েন বলে জানা যায়।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক দেশত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে, তবে তাদের গন্তব্য সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীরও সোমবারের মধ্যেই দেশত্যাগ করার কথা ছিল। গত মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও সাংসদরা দেশ ছাড়তে শুরু করেন বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে । বলা হয়েছে যে এই সময় তাদের অধিকাংশের সঙ্গেই ছিল পরিবারের অন্য সদস্যরা। এর মধ্যে পরিস্থিতি কিছুটা ঠাণ্ডা হলে কয়েকজন ফিরে আসেন। তবে অধিকাংশই বিদেশে রয়ে গেছেন।
আর যাদের বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি, তাদেরকেও গত দুইদিন ধরে জনসমক্ষে দেখা যাচ্ছে না। অনেকের ফোনও বন্ধ রয়েছে। গত দুইদিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে মন্ত্রী ও সাংসসহ আওয়ামী লীগের অনেক নেতার বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। ভাঙচুর থেকে বাদ যায়নি তাদের দলীয় কার্যালয়গুলোও। ফলে এখন তারা গোপন অবস্থানে থাকাকেই শ্রেয় বলে মনে করছেন।
এছাড়া আওয়ামী লীগ ঘেষা হিসেবে পরিচিত পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও পরিচিত জায়গা এড়িয়ে চলছেন। তারা নিজেদের বাড়ি বা সরকারি কোনো আবাসস্থল এড়িয়ে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে অবস্থান করছেন বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে ।।