এইদিন ওয়েবডেস্ক,আউশগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),০৯ অক্টোবর : রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের এক শ্রেণীর নেতাকর্মীদের মধ্যে দুর্বৃত্তায়ন যেভাবে বেড়ে গেছে তাতে বামফ্রন্ট জমানার সন্ত্রাসকেও টেক্কা দিতে শুরু করেছে । কারন একদিকে যখন উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার ডুয়ার্সের নাগরাকাটায় বিজেপির সাংসদ ও বিধায়ককে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদল, পাশাপাশি অন্যদিকে দক্ষিণবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রামে খোদ পুলিশকে পিটিয়ে আসামী ছিনতাই করার অভিযোগ উঠেছে আউশগ্রাম-২ ব্লকের অমরপুর অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি গোলাম মোল্লা ও তার দলবলের বিরুদ্ধে । যদিও আউশগ্রামের ঘটনাটি নাগরাকাটার ঘটনার দিন পাঁচেক আগে ঘটেছিল । গতকাল রাতে আউশগ্রামের বেলেমাঠ গ্রামের বাসিন্দা গোলাম মোল্লা ও তার এক সাগরেদ জাকির শেখকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ।
আজ বৃহস্পতিবার দু’জনকেই বর্ধমান আদালতে তোলা হয়। তাদের মধ্যে গোলাম মোল্লাকে দশদিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়ে পুলিশ আবেদন জানায় । এদিকে দলীয় নেতার এহেন কীর্তিতে বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছে শাসকদল। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় এক সিপিএম কর্মীকে খুনের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত গোলাম মোল্লা। তাকে জেলেও যেতে হয় । বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত ছিলেন। কিন্তু জামিন পেতেই ফের তার বিরুদ্ধে ওঠে এলাকায় সন্ত্রাস চালানোর অভিযোগ ।
জানা গেছে,ঘটনার সূত্রপাত গত ২৭ সেপ্টেম্বর।অমরপুর গ্রামপঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান বেলেমাঠ গ্রামের বাসিন্দা তৃণমূল নেতা এবাদত শেখ ও গোলাম মোল্লার মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল । তারই জের ধরে ওই দিন এবাদত শেখ যখন তাঁর মেয়েকে হোষ্টেল থেকে বাড়ি যাচ্ছিল তখন বিষ্ণুপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে পথ আটকে তাকে বেদম পিটিয়ে দেয় গোলাম মোল্লা ও তার কয়েকজন অনুগামী।এবাদতকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় । এই ঘটনায় এবাদত শেখের স্ত্রী মোমেনা বেগম আউশগ্রাম থানায়
জাকির শেখ, আমানত শেখ, জীবন মোল্লা এবং নাসির শেখ এই চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন । কিন্তু পুলিশ তাদের গ্রেপ্তারে তেমন উৎসাহ দেখায়নি বলে অভিযোগ । এরপর এবাদত শেখ জেলা পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হন । শেষ পর্যন্ত এসপির নির্দেশে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে সক্রিয় হয় আউশগ্রাম থানার পুলিশ ।
জানা যায়,গত ১ অক্টোবর আউশগ্রাম থানার পুলিশ বেলেমাঠ গ্রামে অভিযুক্তদের সন্ধানে অভিযান চালিয়ে জাকির মোল্লা নামে অভিযুক্তকে পাকড়াও করে । কিন্তু পুলিশ তাকে গাড়িতে করে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় গোলাম মোল্লা দলবল নিয়ে এসে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে দেয় । তারপর পুলিশকে লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে আসামি জাকির মোল্লাকে ছিনতাই করে নিয়ে যায় গোলাম মোল্লারা । এই ঘটনায় গোলাম মোল্লা সহ আটজনের বিরুদ্ধে একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধাদান,আসামিকে পুলিশের হাত থেকে ছিনতাই এবং পুলিশকে মারধর প্রভৃতি একাধিক গুরুতর ধারায় মামলা করা হয় । এদিকে মামলা হতেই বেপাত্তা হয়ে যায় গুনধর তৃণমূল নেতা গোলাম মোল্লা । শেষ পর্যন্ত গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বুধবার গভীর রাতে পুলিশ বেলেমাঠ গ্রামে হানা দিয়ে মূল অভিযুক্ত গোলাম মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পাশাপাশি এবাদত শেখের উপর হামলার ঘটনায় জাকির শেখকেও গ্রেপ্তার করা হয়।।

