১৫ আগস্ট ভারতে এত বিশেষ কেন ? এটি কেবল ভারতের স্বাধীনতা দিবস নয়, বরং একটি বিশ্বব্যাপী ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক প্রতীক। ১৯৪৫ সালের এই দিনে জাপান আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আত্মসমর্পণ করে, যার ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। জাপান হল সেই দেশ যা সেই সময়ে এশিয়ার একটি প্রধান অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত পরাশক্তি ছিল, যুদ্ধের ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়নি। কিন্তু ৬ এবং ৯ আগস্ট হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা ফেলে আমেরিকা সেই পরাশক্তিকে প্রায় ধ্বংস করে দেয়।
এই দিনটিকে স্মরণ করার অর্থ কেবল যুদ্ধের সমাপ্তি নয়, বরং বিশ্বব্যাপী শক্তি সংগ্রামের গল্পও, যেখানে ইউরোপ এবং আমেরিকা নিজেদেরকে “শ্বেতাঙ্গ মানুষ” হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল,যারা বিশ্ব শাসন করার জন্য সবচেয়ে যোগ্য, যখন অন্যান্য সমস্ত দেশ তাদের অধীনস্থ বলে বিবেচিত হয়েছিল। এই ‘হোয়াইট ম্যান সিনড্রোম’ এখনও বিদ্যমান। তারা এশিয়ার দেশগুলির, বিশেষ করে ভারত ও চীনের অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে তাদের বিশ্বশক্তির জন্য হুমকি বলে মনে করে। এই কারণেই তারা ভারত ও চীনের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিকে সহ্য করতে পারে না আমেরিকা । প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার মেয়াদের শেষ পর্যায়ে ভারতের বিরুদ্ধে তার রাজনৈতিক ও গোয়েন্দা কৌশলগুলি সক্রিয় করেছেন।
তিনি তার “ডিপ স্টেট”কে ‘শাসন পরিবর্তনের’ ষড়যন্ত্র অর্থাৎ ভারতে সরকার পরিবর্তনের জন্য কাজে লাগিয়েছেন, যা কিছু বিদেশী মদতপুষ্ট রাজনৈতিক নেতা এবং বাম-উদারপন্থী উপাদানের সাথে যোগসাজশে দেশে অস্থিতিশীলতা ছড়িয়ে দিচ্ছে।এই দেশবিরোধী উপাদানগুলি আমাদের সমাজের দুর্বলতা, জাতিগত উত্তেজনা, কৃষক আন্দোলন, ছাত্র বিক্ষোভ, সংবিধান এবং নির্বাচন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগকে পুঁজি করে দেশকে বিভক্ত এবং হতাশ করার চেষ্টা করছে।
কিন্তু তারা বুঝতে পারছে না যে প্রধানমন্ত্রী মোদীর মতো নেতারা এই সমস্ত সংকট থেকে আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠেন। অস্থিরতা এবং ষড়যন্ত্রের মুখে মোদীর শক্তিশালী নেতৃত্ব দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছে। ভারতকে থামানোর জন্য আমেরিকা এবং তার মিত্রদের কাছে কেবল একটি বিকল্প অবশিষ্ট আছে – ভারতকে দীর্ঘ এবং ক্লান্তিকর যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আটকে রাখা যাতে এর অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতি ব্যাহত হয়।
তারা চায় ভারতের চকচকে মার্সিডিজ এবং উন্নত শিল্পগুলি পাকিস্তানের পুরানো এবং আবর্জনা বোঝাই ট্রাকের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হোক। এই কারনে পাকিস্তান বারবার ভারতকে পরমানু হামলার হুমকি দিচ্ছে যাতে ভারত ফের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে ।
এটি কোনও ষড়যন্ত্র নয় বরং ‘শ্বেতাঙ্গ মানুষ’ এবং তার এজেন্টদের প্রচ্ছন্ন হুমকি। মুনিরের মতো সন্ত্রাসীরা এবং ভারতের কিছু নেতা ও দল এই খেলায় কেবল ছোট ছোট দাবার গুটি । তাই সময় এসেছে আমাদের সমাজে লুকিয়ে থাকা এই বিশ্বাসঘাতকদের চিহ্নিত করে তাদের মুখোশ খুলে দেওয়ার । দেশপ্রেমের চেতনায় অনুপ্রাণিত হয়ে তাদের অভিসন্ধি প্রকাশ্যে আনা জরুরি যাতে তারা ভারতের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করতে না পারে।
রাজনৈতিক নেতৃত্বকেও এই ধরণের হুমকির প্রতি সতর্ক থাকতে হবে এবং কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
যতদূর পাকিস্তানের কথা, সেখানকার অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিরও ক্রম অবনতি ঘটছে। পরবর্তী নির্বাচনের মাধ্যমে সেখানে অনেক নতুন রাজনৈতিক ও ভৌগোলিক পরিবর্তন ঘটতে পারে। এক কথায় বলতে গেলে পাকিস্তান রাষ্ট্র গর্ভবতী এবং এর প্রসববেদনা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে।
তবুও একটি বড় সত্য আছে – সাদা মানুষ হোক বা লাল পতাকা, তারা যাই করুক না কেন, ২০৩৫ সালের মধ্যে চীনের অর্থনীতি আমেরিকাকে ছাড়িয়ে যাবে এবং ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতের অর্থনীতি চীনের অর্থনীতিকে ছাড়িয়ে যাবে। এই পরিবর্তনগুলি অনিবার্য, এবং জাতীয়তাবাদী ভারতীয়দের অবশ্যই তাদের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিতে হবে।
তাই ১৫ আগস্ট কেবল স্বাধীনতা দিবস নয়, বরং একটি বিশ্ব রাজনৈতিক প্রতীক, যেখানে শক্তিগুলি তাদের স্বার্থের জন্য কৌশল তৈরি করে। আমাদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে, দেশপ্রেমের সাথে আমাদের ইতিহাস, বর্তমান এবং ভবিষ্যত বুঝতে হবে এবং সাহসের সাথে প্রতিটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে।।