প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৮ মে : নির্মম ভাবে পিটিয়ে মাকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে ছেলে সৌম্য মণ্ডল কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।অন্যদিকে কুপ্রস্তাবের প্রতিবাদ করা এক দম্পতি ও তাঁদের কন্যাকে রামদা দিয়ে কোপানোর অভিযোগে পুলিশ প্রৌঢ় বাচ্চু রাজবংশী ওরফে তুড়ি নামে এক প্রৌঢ়কে গ্রেপ্তার করেছে।পূর্ব বর্ধমানের রায়না ও মেমারি থানা এলাকায় হওয়া এই দুটি ঘটনায় ধৃতদের পুলিশ শনিবার বর্ধমান আদালতে পেশ করে । কিন্তু সভ্য সমাজে বাসবাস করেও এমন জঘন্য অপরাধের ঘটনা ঘটানোর দায়ে গ্রেপ্তার হওয়া ধৃতদের কারুই হয়ে এদিন মামলা লড়েন না আইনজীবীরা । বিচারক দুই ধৃতকে বিচারবিভাগীয় হেপাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন । পাশাপাশি তিনি ধৃতদের হয়ে আইনজীবী নিয়োগের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন ।
পুলিশ জানিয়েছে ,রায়না থানার দেরিয়াপুর গ্রামে বাড়ি ধৃত যুবক সৌম্য মণ্ডলের। তাঁর বাবা মারা গিয়েছেন।তার পর থেকে সৌম্য বেশ কিছুদিন ধরে তাঁর মা সীমা মণ্ডলের উপর অকথ্য অত্যাচার চালাচ্ছে। তার মা মুখ বুজে সব অত্যাচার সহ্য করছিলেন। কিন্তু, গত বৃহস্পতিবার অত্যাচার সীমা ছাড়ায়।নেশা করে সৌম্য বাড়িতে নিজের মাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা শুরু করে। সীমা দেবী তার প্রতিবাদ করায় সৌম্য একটি বাঁশ দিয়ে তাঁকে পেটানো শুরু করে ।মায়ের গলাও সে টিপে ধরে। চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে গেলে সৌম্য বাড়ি থেকে দৌড়ে পালায়। ঘটনার কথা জানিয়ে ওইদিনই সীমাদেবী রায়না থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়ে মারধর ও খুনের চেষ্টার ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ শুক্রবার রাতে সৌম্য কে গ্রেপ্তার করে ।
অপর কুকীর্তির ঘটনায় ধৃত বাচ্চু রাজবংশী ওরফে তুড়ি-র বাড়ি মেমারি থানার পালশিটের স্বস্তিপল্লিতে। অভিযোগ মাস দেড়েক আগে বাচ্চু ওই ব্যক্তির ছোট ছেলের স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দেয়। বিষয়টি শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে জানান গৃহবধূ। এনিয়ে গৃহবধূর শ্বশুর ও শাশুড়ির সঙ্গে বাচ্চুর তর্কাতির্ক হয়। লোক জানাজানি হওয়ায় তখনকার মতো বাচ্চু চুপ করে যায় । এরপর গত ১৭ মে রাত ২টো নাগাদ ওই ব্যক্তি যখন ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন, সেই সময় বাচ্চু রামদা নিয়ে তাঁর উপর হামলা চালায়। রামদার ঘায়ে ওই ব্যক্তি জখম হন। তাঁর চিৎকার শুনে পাশের ঘরে থাকা মেয়ে মিনু নাগ তাঁকে বাঁচাতে আসেন। রামদার কোপে তাঁর বাঁ হাতের বুড়ো আঙুল শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মেয়ে ও স্বামীকে বাঁচাতে এসে রামদার কোপে জখম হন ওই ব্যক্তির স্ত্রীও। চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে আশপাশের লোকজন এলে বাচ্চু পালিয়ে যায়। জখমদের মেমারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর স্বামী-স্ত্রীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরিবারের লোকজন মিনুকে হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে বর্ধমান শহরের একটি নার্সিংহোমে ভির্ত করে দেন । এই ঘটনা বিষয়ে দায়ের হওয়া অভিযোগে ভিত্তিতে পুলিশ মামলা রুজু করে তদন্তে নামে ।শনিবার সকালে রসুলপুর বাজার থেকে পুলিশ বাচ্চুকে ধরে ।তার ডেরা থেকে পুলিশ রক্তমাখা রামদাটিও বাজেয়াপ্ত করেছে।।