এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,১৪ ডিসেম্বর : বাংলাদেশের সংখ্যাগুরু মুসলিমদের দ্বারা চূড়ান্ত নৈরাজ্যের শিকার হচ্ছে সেই দেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ । কোথাও হিন্দু মহিলাকে মুসলিম মৌলবীরা ঘিরে ধরে জোর করে ধর্ম পরিবর্তন করাচ্ছে । কোথাও রাতের অন্ধকারে হিন্দু বাড়িতে আগুন ধরিয়ে গোটা পুরি পরিবারকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার চেষ্টা হচ্ছে । কোথাও মন্দিরে হামলা চালিয়ে হয়েছে দেবদেবীর মূর্তি৷ কোন দরিদ্র হিন্দু চাষীর জমির ধানে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে । বাংলাদেশের ইসলামিক জঙ্গি সংগঠনমূলক ক্ষমতায় আসার পর সংখ্যালঘুদের জীবন কার যত নরকে পরিণত করে দিয়েছে সেদেশের মুসলিমরা।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) রাত প্রায় ২ টা নাগাদ দিকে বাংলাদেশের চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় ভূজপুর চৌধুরী বাড়ির বাসিন্দা বাবু কান্তি দে-এর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায় মুসলিমরা । গোয়াল সহ গোটা বাড়ি আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেছে । পরিবারের লোকজন কোন রকমের প্রাণে বেঁচে গেলেও গোয়ালের সমস্ত গবাদিপশু আগুনের ঝলসে মারা গেছে । ওই হিন্দু পরিবারটি অত্যন্ত হতদরিদ্র । অনেক কষ্টে তারা নিজেদের সংসার চালান । সবকিছু হারিয়ে তারা কার্যত এখন পথে বসে গেছে ।
বাংলাদেশের জামালপুর জেলার একটি হিন্দু মন্দিরে হামলা চালিয়েছে মুসলিমরা । জামালপুর জেলার শরিষাবাড়ী উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নে কেন্দ্রীয় মহাশ্মশানের কালী মাতা মন্দিরে হামলা চালিয়ে কালীমূর্তি সহ সমস্ত দেবদেবীর মূর্তির মাথা কেটে ফেলা হয়েছে ।
চট্রগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার পাঁচপুকুরিয়া এলাকার বাসিন্দা পেশায় কৃষক শিবু দত্তর প্রায় ৮ কানি (৪০শতক বা ডেসিমালে ১ কানি) জমির পাকা ধানে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে মুসলিমরা । জমির পাকা ধান কেটে জ্যামিতি স্তুপ করে রেখেছিলেন তিনি । শুক্রবার সন্ধ্যার পর বাড়িতে রাতের খাবার খেতে এসছিলেন শিবু দত্ত৷ সেই সুযোগে মুসলিমরা ওই ধানের গাদায় আগুন ধরিয়ে দেয় । শিবু দত্ত যখন ফের মাঠে আসেন দেখেন জমির সমস্ত ধান ভষ্মীভূত হয়ে গেছে । ওই জমির ধানের ভরসাতে তার সারা বছরের খোরাকি চাল হত । এমতবস্থায় পরিবার নিয়ে তিনি চরম বিপাকে পড়ে গেছেন ।
তবে সবথেকে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশের নোয়াখালীতে । ওই এলাকার এক হিন্দু মহিলাকে জোর করে ধর্ম পরিবর্তন করা হয়েছে । প্রতিবেদন অনুযায়ী, মহিলাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে এসে মৌলবীরা তাকে ঘিরে ধরে জোর করে ধর্ম পরিবর্তন করে । সেই ভিডিও এরাজ্যের একটি বৈদ্যুতিক চ্যানেলে সম্প্রচার করা হয়েছে৷ ভিডিওতে ওই মহিলাকে আর্ত চিৎকার করেতে শোনা গেছে । ওই চ্যানেলের প্রতিবেদনটি নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেছেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল । তিনি লিখেছেন,বাংলাদেশে আজকের ঘটনা TV9 Bangla প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একজন হিন্দু মহিলাকে জোরপূর্বক ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করা হচ্ছে।বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর এই আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানাই।হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের জোরপূর্বক ধর্মান্তরকরণ, জমি দখল এবং মন্দিরে হামলা সহ হিন্দুদের উপর অকথ্য অত্যাচার হচ্ছে।এই ঘটনা নিয়ে ইউনুস সরকার নীরব। বাংলাদেশের ইউনুস সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে।আপনি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।এক্ষেত্রে সমালোচনা উঠে আসে নোবেল বিজয়ী মোহাম্মদ ইউনূসের প্রতিও যিনি তার আন্তর্জাতিক খ্যাতি সত্ত্বেও এই মানবাধিকার লঙ্ঘন বিষয়গুলির উপরে উল্লেখযোগ্যভাবে নীরব থেকেছেন। ক্ষুদ্রঋণ এবং দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য পরিচিত ইউনূস সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দুর্দশা নিয়ে কথা বলতে বা নিন্দা জানাতে তার প্রভাব ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়েছেন।অনেকের কাছেই তার নোবেল শান্তি পুরস্কার তার নৈতিক গুরুত্ব হারাচ্ছে এবং এটি এখন শুধুমাত্র একটি অলংকারস্বরূপ পুরস্কার হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে।ওনার নীরব থেকে স্পষ্ট এটা ন্যায়বিচার এবং সমতার প্রতিশ্রুতি নয়।বাংলাদেশের হিন্দুদের সুরক্ষা ও অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে হিন্দুদের একজোট হয়ে প্রতিবাদ করতে হবে।’
শুধু বাংলাদেশের সাধারণ মুসলিমরাই নয়, মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে সে দেশের সরকারের চূড়ান্ত নিপীড়নের শিকার হচ্ছে সংখ্যালঘু হিন্দুরা৷ স্কুলের সন্ন্যাসীর চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে বিনা অপরাধে জেলে আটকে রেখে দেওয়া হয়েছে । যাতে তার কেউ জামিন করাতে না পারে সেজন্য হিন্দু আইনজীবীদের খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে রাষ্ট্রীয়ভাবে৷ এছাড়া চট্টগ্রামের হাজারী গলির ঘটনা ও কোর্ট বিল্ডিং-এর ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত সারা দেশে প্রায় ৩০০০ এর অধিক জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছে আবার অনেক হিন্দু চট্টগ্রামে থাকতে পারছেন না। যারা মামলার স্বীকার হয়েছে তাদের অনেকেই তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। তারা ঘর ছাড়া হয়ে যাওয়ায় এখন তাদের পরিবারগুলো আজ বিপর্যস্ত। অনেকের পরিবার না পারতেছে মুখ ফুটে বলতে না পারতেছে কারো সাথে যোগাযোগ করে সাহায্য চাইতে। কেউ কেউ পরিবারকে বাঁচাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সহায়তা করার জন্য কাতর আবেদন জানাচ্ছেন ।।