এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৬ জুলাই : গলায় কন্ঠি ও মাথায় শিখা(টিকি) দেখে রিপাবলিক বাংলার সাংবাদিকের উপর হামলা হয়েছিল এবং হামলাকারীরা তাকে “হিন্দু কুত্তা” বলেছিল বলে জানালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । আজ বুধবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাংবাদিকের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘আজকের তাকে আক্রমণ করার কারণ হচ্ছে যে তিনি রাষ্ট্রবাদী এবং হিন্দুদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে খবর করেন । ওনার গলায় কন্ঠি ছিল । আর মাথার চুলে শিখা ছিল৷ এগুলো দেখে চিহ্নিত করে হামলা করেছে ।’ তিনি আরও বলেন,’যে ভাষা বলে ওকে আক্রমণ করেছে… হিন্দু কুত্তা । পশ্চিমবাংলার হিন্দুরা কুত্তা ? এটা যেমন সমাজ বিরোধীদের কাজ, পুলিশের ব্যর্থতা, সাথে সাথে কিশলয়কে যেভাবে ফালাফালা করে কেটেছে ব্লেড ছিল বলে হয়তো বেঁচে গেছে কিন্তু হরগোবিন্দ দাস চন্দন দাসকে যেভাবে পশু কাটার ছুরি দিয়ে খুন করেছিল সেভাবে যদি হামলা চালাত তাহলে ওকে আজকে আমরা পেতাম না । ওর মায়ের চোখের জল এমনি পড়ছে তখন কি হতো কেউ জানে না ।’
বিরোধী দলনেতা বলেন,’আক্রমণটা ওর একার উপর হয়নি । আমি মনে করি সমগ্র বাঙালি হিন্দুদের উপর আক্রমণ হয়েছে । প্রতিবাদীদের ওপর আক্রমণ হয়েছে । মেরুদন্ড সোজা করে চোখে চোখ রেখে লড়াই করা সংবিধানের চতুর্থ স্তম্ভ সংবাদমাধ্যমের উপর আক্রমণ হয়েছে । এর শেষ আছে এবং শেষ হবে৷ একটা কথা আছে, ‘অতি বাড় বেড়োনা ঝড়ে পড়ে যাবে’ এবং ‘পীপিলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে’ । এরা যত বাড়ছে পতন তত দ্রুত হবে ।’
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার গভীর রাতে বাড়ি ফেরার সময় কলকাতার ব্যস্ততম এলাকা পার্ক সার্কাসের কাছে দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হন রিপাবলিক বাংলার সাংবাদিক কিশলয় মুখার্জী । তার শরীরের একাধিক জায়গায় ব্লেড চালিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে দেওয়া হয় । পুলিশকে নিশানা করে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘কলকাতা সিপি, আগেরটা বিনীত গোয়েল যেমন ছিল এটাও( মনোজ কুমার ভার্মা) তেমনি । এটা আবার আরো খারাপ । বৃষ্টি পড়লে এবং সন্ধ্যা হলে কোথাও কলকাতাতে পুলিশ পাবেন না । ভয়ংকর অবস্থা । সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা এখানে শেষ করে দিয়েছে সেই পুলিশ সিস্টেম ৷ সেই কারণে কলকাতা পুলিশ এবং পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ দুটোকেই এখন মমতা পুলিশ বলে । এদের লাজ লজ্জা বলে কিছু নেই ।’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে নিশানা করে তিনি বলেন,’গত পরশুদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে মুখ্যমন্ত্রী ও পুলিশমন্ত্রী তো নিজেই বলে দিয়েছেন যে এদিকে ওদিকে তাকাবেন না পুরো সরকার একুশে জুলাই প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছে । তাই নেমে পড়েছেন তারা । তাদেরও বাস জোগাড় করতে হচ্ছে, দিন জোগাড় করতে হচ্ছে, চাই জোগাড় করতে হচ্ছে, মেহমানরা কোথায় বাথরুম করবে তার ব্যবস্থা করতে হচ্ছে ।’ তিনি বলেন,’২০২৪ সালে মুখ্যমন্ত্রী কিছু সাদা হাতি পুষেছেন – অমিত মিত্র, হরিকৃষ্ণ দ্রিবেদী,আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়দের মত । তাদের ক্যাবিনেট মন্ত্রীর পদ মর্যাদা । অভয়া বোনের সাথে ঘটনার পরে এরা একটা অ্যাডভাইসরি দিয়েছিল যেটা সুপ্রিমকোর্টের থাপ্পড় দিয়ে প্রত্যাহার করতে হয়েছিল । এরা পরামর্শ দিয়েছিল যে রাতে মহিলারা যতটা সম্ভব কাজকর্ম করতে থেকে বিরত থাকুন । তারপর সুপ্রিম কোর্ট সেটা ধরলে প্রত্যাহার করে নেয় । এখন যা পরিস্থিতি হয়েছে তাতে আজ সন্ধ্যেবেলায় অথবা কালকে একটা অ্যাডভাইসরি বের করতে হবে যে পুরুষরা রাত্রিবেলায় কাজে বের হবেন না । এই হচ্ছে পশ্চিমবাংলার অবস্থা ।’
তিনি জখম সাংবাদিকের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে বলেছেন,’সাংবাদিক কিশলয় মুখার্জি দ্রুত সুস্থ হয়ে নিজের কর্মক্ষেত্রে ফিরুন করুণাময় ঈশ্বরের কাছে এই প্রার্থনা করি। এই সময় আমি ওনার পাশে আছি।’।

