এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,০২ সেপ্টেম্বর : বাংলাদেশে ফের মন্দিরে আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটেছে । এবারে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার হামিন্দপুর (কামারপাড়া) এলাকায় দুর্গাপূজা উপলক্ষে নির্মাণাধীন প্রতিমায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা ৷ সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে হামিন্দপুর সর্বজনীন দুর্গামন্দিরের পাশে এই ঘটনা ঘটে । আগুনে মুহূর্তের মধ্যেই প্রতিমা ও সাজসজ্জার সমস্ত উপকরণ ভস্মীভূত হয়ে যায়। খবর পেয়ে দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়৷
স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় জানায়, দীর্ঘদিন ধরে মন্দিরের ক্যাশিয়ার কার্তিক চন্দ্রের সঙ্গে কমিটির বিরোধ চলে আসছিল। কয়েকদিন আগে তিনি মন্দিরের প্রধান দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেন। এর ফলে পূজার আয়োজনের জন্য মন্দিরের দক্ষিণ পাশে খোলা জায়গায় ছাপরা ঘর তুলে প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করে স্থানীয়রা। গত পাঁচ-ছয় দিন ধরে প্রতিমা তৈরির কাজ চলছিল। দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশের প্রতিমা প্রায় সম্পূর্ণ হয়ে এসেছিল। কিন্তু রাতের অন্ধকারে দুর্বৃত্তরা হঠাৎ আগুন লাগিয়ে দেয়। মুহূর্তেই আগুন সবকিছু ভস্মীভূত করে দেয়।
মন্দির কমিটির প্রাক্তন সভাপতি অনুকূল চন্দ্র রনু বলেন, “আমরা কয়েকটি পরিবার মিলে পূজার আয়োজন করছিলাম। কিন্তু আগুনে সব শেষ হয়ে গেল। পরিকল্পিতভাবে প্রতিমায় আগুন দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় কার্তিক চন্দ্রের সম্পৃক্ততা আছে।”
স্থানীয় বাসিন্দা টুলু বলেন, “বিরোধ মেটানোর জন্য এর আগেও কয়েকবার বৈঠক হয়েছিল। কিন্তু কার্তিক চন্দ্র জোর করে মন্দিরের দরজায় তালা মেরে লোকজনের প্রবেশে বাধা দেয়। প্রতিমা পুড়ে যাওয়ার পর মানুষের মনে ভীতি তৈরি হয়েছে। আমরা প্রশাসনের কাছে দ্রুত দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।”
ঘটনার খবর পেয়ে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজউদ্দীন খন্দকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, “রাতের আঁধারে প্রতিমায় দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। দোষীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এছাড়া বিরোধ সমাধানের জন্য উভয়পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছে।”
এ সময় সাদুল্লাপুর উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রভাত চন্দ্র অধিকারীও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, “মন্দির নিয়ে বিরোধের বিষয়টি এর আগেও সমাধানের চেষ্টা হয়েছিল। আবারও বৈঠকের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার আগেই এই ঘটনা ঘটেছে। আমরা প্রশাসনের সহযোগিতায় দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করবো।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে কার্তিক চন্দ্রের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। রাতে তার বাড়িতে গিয়েও সাড়া মেলেনি।এই ঘটনায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে । তারা মনে করছেন, এমন ঘটনা আসন্ন দুর্গাপূজার প্রস্তুতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।।