এইদিন ওয়েবডেস্ক,চট্টগ্রাম,২৬ অক্টোবর : দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে রুখে দাঁড়ানো ছাড়া বিকল্প কোনো রাস্তা নেই…সেটাই শুক্রবার দেখিয়ে দিল বাংলাদেশের নির্যাতিত সংখ্যালঘু হিন্দুরা । ইসলামি উগ্রপন্থীদের দ্বারা প্রতিনিয়ত অত্যাচারিত হতে হতে হিন্দুরা নিজেদের মধ্যে জাতপাতের বিভেদ ভুলে রুখে দাঁড়ালো । আট দফা দাবিতে চট্টগ্রামের লালদিঘির স্কুল মাঠে প্রায় দুই লক্ষ হিন্দুর জমায়েত হয় । প্রচুর সাধু সন্ন্যাসীদেরও মঞ্চে দেখা যায় । বক্তারা এই সঙ্কটকালে হিন্দুদের জাতপাত ভুলে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানান । চিন্ময় কৃষ্ণদাস প্রভু বলেছেন, ‘আমাদের নিয়ে আর খেলতে দেবো না, দাবি না মানলে লংমার্চ টু ঢাকা!’
এদিকে বাংলাদেশের নির্যাতিত হিন্দুদের আহ্বান জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন । চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানের ঐতিহাসিক মহাসমাবেশের ভিডিও শেয়ার করে তিনি এক্স-এ লিখেছেন,’বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সনাতনী সম্প্রদায়ের উপর আধিপত্য বিস্তার ও নিপীড়নের চলমান প্রচেষ্টার মধ্যে, হিন্দুরা আজ বাংলাদেশের চট্টগ্রাম (চট্টগ্রাম) শহরের ঐতিহাসিক লাল দীঘিতে সমবেত হয়েছে।আমি সীমান্তের ওপারের আমার সনাতনী বোন ও ভাইদের আশ্বস্ত করতে চাই, এই সংকটের সময়ে আমরা আপনাদের পাশে আছি। প্রকৃতপক্ষে, সারা বিশ্বের সমগ্র সনাতন সম্প্রদায় আপনার সাথে আছে। শুধু ধরে থাকুন, ঐক্যবদ্ধ থাকুন এবং শক্ত থাকুন ।’
উল্লেখ্য,যে ৮ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম শহরের লাল দীঘিতে হিন্দুরা জমায়েত হয়েছিল সেগুলি হল : ১) সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচারের জন্য “দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল” গঠন করে দোষীদের দ্রুততম সময়ে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান, ক্ষতিগ্রস্তদের যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
২)অনতিবিলম্বে “সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন” প্রণয়ন করতে হবে।
৩)”সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয়” গঠন করতে হবে।
৪)হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে “হিন্দু ফাউন্ডেশন” এ উন্নীত করতে হবে। পাশাপাশি বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টানধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকেও ফাউন্ডেশনে উন্নীত করতে হবে।
৫) “দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন” প্রণয়ন এবং “অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন” যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে।
৬) সরকারি/ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের জন্য উপাসনালয় নির্মাণ এবং প্রতিটি হোস্টেলে প্রার্থনাকক্ষ বরাদ্দ করতে হবে।
৭)”সংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ড” আধুনিকায়ন করতে হবে এবং অষ্টম দাবি হল, শারদীয় দুর্গাপূজায় ৫ দিন ছুটি দিতে হবে। পাশাপাশি প্রতিটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রধান প্রধান ধর্মীয় উৎসবে প্রয়োজনীয় ছুটি প্রদান করতে হবে।।