দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান) : পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে হল জটিল অস্ত্রোপচার । বছর ষোলোর এক কিশোরের পায়ে গেঁথে যাওয়া ১০ মিলিমিটারের ৬২ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের একটি লোহার রড অস্ত্রপচার করে বের করলেন হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক ডাঃ সন্দীপ কুমার বাড়ী । তাঁকে সাহায্য করেন ওটি বিভাগের কর্মী কাজল দাস । অভিজিৎ মাজি মাঝি নামে ওই কিশোর বর্তমানে বিপদন্মুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা । এদিকে এই জটিল অস্ত্রোপচার কাটোয়া হাসপাতালে হওয়ায় আপ্লুত কিশোরের পরিবার । অভিজিতের মা দিপালীদেবী বলেন,’ আমরা ভেবেছিলাম ছেলেকে কলকাতায় নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে । আমাদের অত সামর্থ্য নেই । ছেলেকে বাঁচাতে বাধ্য হয়ে ধারদেনা করতে হত । কিন্তু কাটোয়া হাসপাতালেই যে এতবড় অপারেশন হবে তা আশা করিনি । কাটোয়া হাসপাতালের চিকিৎসকদের অসংখ্য ধন্যবাদ ।’
জানা গেছে,কেতুগ্রামের সীতাহাটি পঞ্চায়েতের নৈহাটি গ্রামের উত্তরপাড়ায় বাসিন্দা অভিজিতরা তিন ভাইবোন । দুই দিদির বিয়ে হয়ে গেছে । তাদের বাবা ছোটন মাঝি কেরলে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন । ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে থাকেন ছোটনবাবুর স্ত্রী দিপালী মাঝি । ঘটনাটি ঘটে শনিবার রাত প্রায় সাড়ে দশটা নাগাদ ।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে,নৈহাটি গ্রামে যাতায়াতের রাস্তায় একটি কালভার্ট নির্মানের কাজ চলছে । ঢালাইয়ের আগে লোহার রডের খাঁচা বেঁধে রাখা হয়েছে । চলাচলের জন্য ঠিক তার পাশেই একটি বাঁশের তৈরি সরু সাঁকো করে দেওয়া হয়েছে । শনিবার রাতে গ্রামের ক্লাবে ক্যারাম খেলার পর সাইকেলে চড়ে ওই সাঁকোর উপর দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে অভিজিৎ । আর তখনই সে টাল রাখতে না পেরে কালভার্টের জন্য বেঁধে রাখা খাঁচার উপরে পড়ে । একটি বড় লোহার রড তার বাম পায়ের জানু এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে যায় । বেশ কিছুক্ষন ওই অবস্থায় থাকার পর এক গ্রামবাসীর বিষয়টি নজরে পড়ে । তৎক্ষনাৎ তিনি গ্রামে এসে খবর দেন । তারপর রড কেটে কিশোরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে আনা হয় । চিকিৎসক ডাঃ সন্দীপ কুমার বাড়ী জানিয়েছেন,ঠিক সময়েই ওই কিশোরকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল । একটু দেরি হলেই তার প্রাণহানী পর্যন্ত হতে পারতো ।
কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার ডাঃ সৌভিক আলম বলেন, ‘হাসপাতালে পুরুষ বিভাগে রেখে ওই কিশোরের চিকিৎসা চলছে । তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে ।’।