এইদিন ওয়েবডেস্ক,বারাণসী,০৪ আগস্ট : এলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী আজ শুক্রবার সকাল থেকে জ্ঞানবাপী মসজিদ প্রাঙ্গনে বৈজ্ঞানিক জরিপ শুরু করল ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ (এএসআই) । আঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ (এআইএম) পরিচালন কমিটি দ্বারা দায়ের করা আবেদনটি খারিজ করে বৃহস্পতিবার সকালে জ্ঞানবাপী মসজিদের এএসআই জরিপ পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছিলেন এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রীতিঙ্কর দিওয়াকারের নেতৃত্বে একটি বেঞ্চ । আদালতের এই নির্দেশের পরেই এদিন সকালে জ্ঞানবাপী মসজিদ প্রাঙ্গনে পৌঁছে যায় এএসআই-এর একটি দল । তার আগে গোটা এলাকা নিরাপত্তার চাদড়ে মুড়ে ফেলা হয় । হিন্দু পক্ষের প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবী সুধীর ত্রিপাঠী এদিন সংবাদমাধ্যমের কাছে বলেছেন, ‘জরিপ শেষ করতে কত দিন সময় লাগবে তা এএসআইই বলতে পারবে। অযোধ্যায় রাম মন্দিরের জরিপ শেষ করতে ৭-৮ মাস লেগেছিল ।’
জানা গেছে, হাইকোর্টের আদেশে ‘ওজুখানা’ সিল করা জায়গা বাদ দিয়ে মসজিদ প্রাঙ্গণের ব্যারিকেডেড এলাকার ‘বৈজ্ঞানিক’ জরিপের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে । বৃহস্পতিবার এআইএম এর আবেদন খারিজ করার সময় প্রধান বিচারপতি প্রিতঙ্কর দিওয়েকরের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বলেছিলেন, ‘বারাণসী আদালত প্রাঙ্গনে একটি এএসআই সমীক্ষার আদেশ দেওয়া ন্যায়সঙ্গত ছিল। ন্যায়বিচারের স্বার্থে বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা প্রয়োজন ।’
প্রসঙ্গত,গত ২১ শে জুলাই, বারাণসী জেলা আদালতের বিচারক ডঃ এ কে বিশ্বেশা এএসআইকে একটি বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা চালানোর নির্দেশ দেন যে মসজিদটি আসলেই পূর্ব-বিদ্যমান মন্দিরের জায়গায় নির্মিত হয়েছিল কিনা । বারাণসী জেলা আদালতের আদেশ মেনে এএসআই ২৪ শে জুলাই সমীক্ষা শুরু করেছিল, কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তিন ঘন্টার মধ্যে এটি স্থগিত করেছিল, যা জেলা আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য মুসলিম পক্ষ সূযোগ পেয়ে যায় ।
এআইএম ২৫ শে জুলাই বারাণসী জেলা আদালতের ২১ জুলাইয়ের আদেশের বিরুদ্ধে এলাহাবাদ হাইকোর্টে আবেদন করেছিল, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে যা ২৬ জুলাই সন্ধ্যা পর্যন্ত এএসআই সমীক্ষা স্থগিত করা হয় । তিন দিন ধরে এই বিষয়ে শুনানির পর, হাইকোর্ট ২৭ জুলাই রায় সংরক্ষিত করেছিল এবং বলেছিল যে এএসআই-এর বৈজ্ঞানিক সমীক্ষার উপর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারা আরোপিত অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ ৩ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হবে ।
বৃহস্পতিবার শুনানির সময়, এএসআই কর্মকর্তাদেরও তলব করা হয়েছিল আদালতে ।আদালত বলেছে যে এএসআইকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে কাঠামোর কোনও ক্ষতি হবে না। এএসআই আদালতকে আশ্বস্ত করেছিল যে কাঠামোগত ক্ষতি না করে বা কোনও খনন না করে জরিপ করার প্রযুক্তিগত ক্ষমতা রয়েছে তাদের কাছে । এরপর মহামান্য এলাহাবাদ হাইকোর্ট এএসআইকে বিতর্কিত কাঠামোয় বিজ্ঞান সম্মত জরিপের ছাড়পত্র দেয় ।
উত্তরপ্রদেশের ডেপুটি মুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ের পরে বলেছিলেন, ‘আমি এই রায়কে স্বাগত জানাই। আমি নিশ্চিত যে এএসআই সমীক্ষার পরে সত্য বেরিয়ে আসবে এবং জ্ঞানবাপি সমস্যাটি সমাধান করা হবে ।’ এর আগে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ প্রশ্ন তুলেছিলেন, বিতর্কিত কাঠামোয় ত্রিশুল,শিবলিঙ্গ ও দেওয়ালে বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি খোদাই থাকা কিসের ইঙ্গিত দেয় ?