প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৭ ডিসেম্বর : মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য প্রায় এক বছর ধরে প্রশাসনের দরজায় দরজায় ঘুরে বেরিয়েছিলেন মা।কিন্তু মেয়ের ওবিসি না পেয়ে দিনের পর দিন হতাশ হয়েই বাড়ি ফিরছিলেন পূর্ব বর্ধমানে মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস । এই খবর বৃহস্পতিবার প্রকাশ হবার পর শুক্রবারাই প্রাথমিক বিব্যালয়ে পড়ুয়া মেয়ে পর্ণার ওবিসি শংসাপত্র হাতে পেয়ে গেলেন মা ঊর্মিলাদেবী । বছরের শুরুতে আবেদন করার পর অবশেষে বছরের শেষের দেড়গোড়ায় মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র মিলে যাওয়ায় খুশি ছাত্রীর বাবা মা ।
ঊর্মিলা দাস এদিন জানান, তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী। বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা পর্ণা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীর পড়ুরা । এবার সে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি হবে । ঊর্মিলাদেবী জানান, তাঁর মেয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য আবেদন করেন । তারপর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না ।
মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি-১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান । জাতি শংসাপত্র বিষয়ের দায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করে নিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন,তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি ।
ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস,আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু বছর শেষ হতে চললেও মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র না মেলায় গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি ।মেয়ে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি হতে যাবার আগে যাতে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পান সেই আবেদন গত বৃহস্পতিবার তিন লিখিত ভাবে ব্লকের বিডিওকে জানান । এই সংক্রান্ত খবর শুক্রবার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয় । ঊর্মিলাদেবী বলেন , এদিন সকালেই গোপগন্তার ২ পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ও ও ব্লক প্রশাসন থেকে ফেন করে আমাকে আমার মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র নিয়ে যাবার কথা বলা হয় । দুপুরে পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে তিনি মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র হাতে পেয়ে যান স্কুল ছাত্রী পর্ণা দ্রুত ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যাবে বলে বৃহস্পতিবার আশ্বাস দিয়ে ছিলেন ।সেই মত বিডিও সাহেবও একদিনের মধ্যে মেয়ের ওবিসি শংসাপত্রের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন । এর জন্য সংবাদমাধ্যম ও মেমারি ১ ব্লকের বিডিওকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ঊর্মিলাদেবী ও তাঁর স্বামী মানিক দাস ।।