এইদিন ওয়েব ডেস্ক,১৩ নভেম্বর ঃ দেশের উন্নয়ন ব্যক্তিবাদের উপর নয়, ব্যষ্টিবাদের উপর নির্ভর করে। এর অন্যথায় যা পাকিস্থানের চিত্র তুলে ধরে । বর্তমানে পাকিস্তানের অর্থনীতি নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে পাকিস্তানের সেনাদলের নির্মম কারবারের দ্বারা । যে সেনা পাকিস্থানের সমস্ত রকম কারখানা,রুটির কারখানা, দোকান থেকে কৃষি খামার ও গল্ফের মাঠ পর্যন্ত অধিকার করে আছে । এএনআইয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পাকিস্থানের সেনাদলে মোট সৈন্য সংখ্যা ৬২০০০০. যার জন্য পাকিস্থান বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম সেনাদল হিসাবে গর্ব করে । কিন্তু নেপথ্যে রয়েছে অন্য চিত্র । ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর থেকে পাকিস্থানী সেনা পাকিস্থানী অর্থনীতির সাথে নিজেদের জড়িয়ে ফেলেছে । ধীরে ধীরে কিন্তু গভীরে । এতটাই গভীরে যে পাকিস্থানী মিলেটারি কোথায় থামবে তা বলা কঠিন । এ যেন ‘free market capitalism’.
পাকিস্থানি অর্থনীতিবিদ ও গবেষক ডঃ আয়েশা সিদ্দিকার কথায়, ‘নৌবাহিনীর দ্বারা দশ বিলিয়ন পাউন্ড মুল্যের সম্পদ নিয়ন্ত্রিত । আরও একশ জন মিলিটারি অফিসারের অধিকারে থাকা সম্পদের মুল্য ৩.৫ বিলিয়ন পাউন্ড । পাকিস্থানের বড় বড় নিগম মিলিটারির অধীনে। পাকিস্থানের আর্মি, এয়ারফোর্স ও নেভি যাদের অধীনে রয়েছে ফৌজি,সাহিন ও বাহরিয়া ফাউন্ডেশন, তাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত একশটি পৃথক বানিজ্যিক সংস্থা,যেগুলি সিমেন্ট থেকে খাদ্যশষ্যের কারবারে যুক্ত।’
ডঃ সিদ্দিকার মত অনুযায়ী, ফৌজি ফাউন্ডেশনের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সম্পদ কয়েক বিলিয়ন পাউন্ড । এই ফাউন্ডেশন মরক্কো সরকারের সাথে একটি তেলের টার্মিন্যাল ও ফসফেটের অস্থায়ী কারবার চালায়। দেশের রুটির চাহিদা মেটায় মিলিটারি নিয়ন্ত্রিত রুটি কারখানা৷ সেনা নিয়ন্ত্রিত ব্যাঙ্কগুলি গচ্ছিত নেয় ও জনসাধারনকে ঋন দেয় । দেশের ভারী কারখানার এক তৃতীয়াংশ এবং ব্যক্তি সম্পদের ৭ শতাংশ সেনার হাতে রয়েছে । দেশের জনসাধারন বছরে দেড় হাজার পাউন্ড আয় করে। যেটা দেশকে আরও গরীবতর করে তুলেছে ।
চিত্রটা এখাই থেকেই স্পষ্ট যে,পাক আর্মিকে অর্থনৈতিক স্বশাসন দেওয়ার ফলে তাদের মধ্যে বিপজ্জনক এক প্রভুত্বকারী মানসিকতার জন্ম দিয়েছে। যার ফলে কোনও রাজনৈতিক নেতা বা নেত্রী যখন পাক আর্মির বিরুদ্ধে সরব হয় তারা প্রতিবাদীদের অবদমিত করে । তার প্রকৃষ্ট দৃষ্টান্ত হল বেনজির ভুট্টো । ডঃ সিদ্দিকার মতে, পাক সেনারা সামন্ততান্ত্রিক জমিদারের মত আচরন করে । তাই পাকিস্থানে গনতন্ত্রের কথা উঠলে সবচেয়ে ভীত হয় পাকিস্থানি সেনাদল।
একথা অকপটেই বলা যায় যে,অনান্য দেশের যেখানে সেনাদল রয়েছে সেখানে পাকিস্থানের সেনাদের জন্য রয়েছে আস্ত একটা দেশ – সেটা হল পাকিস্থান । এই কারনেই পাকিস্থান এফএটিএফের ধুসর তালিকা থেকে বেরোতে পারছে না। ফেলে দিতে পারছে না সন্ত্রাসবাদ নামক ভয়ঙ্কর হাতিয়ারকে ।।