এইদিন ওয়েবডেস্ক,প্যারিস,২৮ নভেম্বর : ফ্রান্সের গ্রামে সশস্ত্র মুসলিম শরণার্থীদের হামলার ঘটনা ঘটেছে রবিবার । হামলাকারী শরণার্থীদের দল ১৬ বছরের এক ফরাসি কিশোরকে নির্মমভাবে কুপিয়ে খুন করেছে । মৃত কিশোরের নাম থমাস । সে একজন প্রতিশ্রুতিশীল রাগবি খেলোয়াড় ছিল । হামলায় আহত হয়েছে আরও অন্তত ১৭ জন । যাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে । ফরাসি কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার সন্দেহভাজন ‘জাতিগত উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ হামলায় একজন ফরাসি কিশোরকে মারাত্মক ছুরিকাঘাতের পর হত্যার সন্দেহে নয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে ।
সন্দেহভাজন নয়জনই দক্ষিণ-পূর্ব ফ্রান্সের ড্রোম অঞ্চল থেকে এসেছিল । গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সাতজন প্রায় ৪৫০ কিলোমিটারেরও বেশি পথ পাড়ি দিয়ে টুলুস শহরে পালিয়ে গিয়েছিল যেখান থেকে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছিল । ক্রেপোলের ২০ কিলোমিটার দক্ষিণে একটি কমিউন রোমান-সুর- ইসের থেকে অন্য দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয় ।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন,রবিবার ফ্রান্সের ক্রেপোলের গ্রামে হামলার সময় মুসলিম শরণার্থীরা বলছিল, ‘আমরা শ্বেতাঙ্গদের হত্যা করতে এসেছি ।’
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে,রবিবার ভোরে মৃত কিশোরের থমাস অনুশীলনের পর যখন রাগবি বল বাড়িতে রাখতে যায় তখন তার উপর হামলা হয় । তার বুকে এবং ঘাড়ে ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল । তাকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হয় আরও ১৭ জন । আহত ১৭ জনের মধ্যে ২০ বছর বয়সী দু’জনকে গুরুতর জখম অবস্থায় লিয়নের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং আরও কয়েকজনকে ছুরিকাঘাতের জন্য চিকিৎসা করা হয়েছিল । মিডিয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে, দুটি যুবকের ঝগড়া থেকে হামলার সূত্রপাত ।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী ফরাসি মিডিয়াকে বলেছেন, ‘এটি আমাদের অভ্যস্ত লড়াই ছিল না, যেখানে একে অপরের দিকে সামান্য ঘুষি নিক্ষেপ করা হয়েছে । আমরা ১৫ থেকে ২০ জনকে আসতে দেখেছি। আমরা তাদের চিনতাম না, তারা ছুরি বের করেছিল, তারা সেখানে এসেছিল আমাদের হত্যা করার জন্য। আমরা এটি একটি পরিকল্পিত আক্রমণ হিসাবে অনুভব করেছি ।’ অন্য এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেছেন,’আমার মেয়ের বন্ধুদের মতে তারা প্রায় ত্রিশজন ছিল । তারা চিৎকার করে বলেছিল, ‘আমরা শ্বেতাঙ্গদের হত্যা করতে যাচ্ছি ।’ তারা শ্বেতাঙ্গদের উউদ্দেশ্যে আরবি ভাষায় গালাগালি করছিল ।’
প্রসঙ্গত,ভারত ও ইউরোপের দেশগুলিতে মুসলিম শরণার্থী ব্যাপক আকারে ঢুকে পড়েছে । আরবের দেশ থেকে আগত ফ্রান্সের শরণার্থীরা কার্যত মাথা ব্যাথার কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে । বিপুল সংখ্যক আরবি অভিবাসী প্রথমে প্যারিস, মার্সেইলিস, লিয়নের মত শহরগুলিতে ভিড় করে । এখন তারা গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে । ফলে ফ্রান্সের গ্রামাঞ্চলের মানুষ এখন মুসলিম শরণার্থীদের কারনে নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে ৷ আরবের জনজাতি চুরি,ডাকাতি,মাদক পাচারের মত অপরাধে যুক্ত হওয়ায় আআইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হিমসিম খেতে হয় ফরাসি পুলিশকে । পাশাপাশি ফ্রান্সের যেসমস্ত গ্রামে এক সময় অপরাধ শুণ্য ছিল, শরণার্থীদের আসার পর অপরাধ নিত্যদিন লেগেই থাকে বলে অভিযোগ ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ,৫৩২ জনসংখ্যার ক্রেপোলের মত ছোট্ট গ্রামে তিন ডজন ছুরি বহনকারী আরবদের আক্রমণে যদি একজন ফরাসি ছেলেকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় এবং ১৭ জন আহত হয়, তবে আজ দেশের কোন স্থানই নিরাপদ নয় ।
এদিকে অভিবাসন নিয়ে নরম নীতির কারনে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুল ম্যাক্রোঁর জনপ্রিয়তা তলানির দিকে । ফ্রান্সে ২০২৭ সালে ফরাসি রাষ্ট্রপতি এবং সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৷ নরম অভিবাসন নীতির কারনে ম্যাক্রোঁর পরাজয় একপ্রকার নিশ্চিত বলে মনে করা হচ্ছে । অনুমান করা হচ্ছে যে নেদারল্যান্ডসের গির্ট ওয়াল্ডার্সের মতই ফ্রান্সেও দক্ষিণপন্থী মেরিন লে পেন বা এরিক জেমুর – ক্ষমতায় আসতে চলেছেন ।।