এইদিন ওয়েবডেস্ক,কোচবিহার,১৩ নভেম্বর : সোমবার দিল্লিতে আত্মঘাতী গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে এরাজ্যের যোগসূত্র ক্রমশ গভীর হচ্ছে ৷ প্রথমে মুর্শিদাবাদের নাম উঠে আসে ৷ মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানার নিম গ্রামের মইনুল হাসান নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে যায় এনআইএ। ওই ব্যক্তিকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক মইনুলের সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল বলে তদন্তকারীরা জানতে পারেন । এবারে দিল্লি হামলায় জুড়ে গেল কোচবিহারেরও নাম । কিন্তু যার খোঁজে এনআইএ বুধবার ভোরে নিঃশব্দে হানা দিয়েছিল সেই বাংলাদেশি আরিফ হোসেন কোনো ভাবে খবর পেয়ে তার আগেই চম্পট দেয় । তবে দিনহাটা-২ ব্লকের বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন নয়ারহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের নন্দিনা গ্রামে আরিফের শ্বশুরবাড়িতে প্রায় চার ঘন্টা ধরে এনআইএ-র তিন সদস্যের বিশেষ দল অভিযান চালিয়ে তার ব্যাঙ্কের পাশ বই খতিয়ে দেখার পর তার ফোনটি সঙ্গে করে নিয়ে যায়। পাশাপাশি এনআইএ -এর তরফে আরিফের শ্বশুর বাড়িতে সিজার লিস্ট দেওয়া হয় । তাতে সন্ত্রাসী যোগ, সন্ত্রাসী কার্যকলাপে সমর্থন করা, সন্ত্রাসে অর্থ সহযোগিতার মত গুরুতর ধারা আনা হয়েছে বলে খবর ।
জানা গেছে,আরিফ হোসেন বাংলাদেশের ঢাকার বাসিন্দা৷ বছর দশেক আগে সে ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করেছিল ৷ দিনহাটার নয়ারহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের নন্দিনা গ্রামের বাসিন্দা পেশায় কৃষক ইসমাইল মিয়াঁর মেয়ের সঙ্গে সে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে ৷ পরে তার সঙ্গেই বিয়ে করে আরিফ৷ তবে সে যে অনুপ্রবেশকারী একথা আগে থেকেই সব জানতেন বলে জানিয়েছেন আরিফ হোসেনের শাশুড়ি সাহেরা বিবি। দিল্লিতে বছর পাঁচেক কাজ করার পর শ্বশুরবাড়িতেই ঘাঁটি গেড়ে বসে যায় আরিফ ৷ তাকে নয়ারহাটে একটি ছোটো কাপড়ের দোকান করে দেয় শ্বশুর ৷ ওই দোকানে বসেই সে উগ্রপন্থী কার্যকলাপ চালাচ্ছিল বলে সন্দেহ ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে ।
যদিও স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মনসুর আলির আবার আরিফের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যোগের কথা মেনে নিতে পারছেন৷ তার কথায়, তাঁর ভোটার কার্ডও রয়েছে, বিধানসভা ও লোকসভা ভোটও দিয়েছে সে। তবে তাকে নিয়ে যে আশঙ্কা করা হচ্ছে তা ঠিক নয়৷ কিন্তু একজন অনুপ্রবেশকারীকে কে ভোটার কার্ড করে দিল ? এই প্রশ্নও উঠছে ৷
শুভেন্দু অধিকারী আজ বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন,’পশ্চিমবঙ্গ সন্ত্রাসীদের সেভ সেল্টার । এটা আমরা সবাই জানি । বিগত এক বছরে পশ্চিমবঙ্গ থেকে একাধিক কুখ্যাত সন্ত্রাসী গ্রেফতার হয়েছে । তার মধ্যে মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ার সাদ শেখ । যার সঙ্গে সরাসরি বাংলাদেশী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আনসারুল বাংলার সংযোগ ছিল । তাকে আসামের স্পেশাল ট্রাক্স ফোর্স গ্রেফতার করেছে। দ্বিতীয় ক্যানিং থেকে জাভেদ মুনশি গ্রেপ্তার হয়েছে। তাকে কাশ্মীর পুলিশের স্পেশাল ট্রাক্স ফোর্স গ্রেফতার করেছে । সেও একজন কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী ।’কোচবিহারের এনআইএ-এর অভিযান প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’আমি নিজে গিয়ে দেখে এসেছি কোচবিহারের রোহিঙ্গার বাংলাদেশি মুসলিমরা সম্পূর্ণ জঙ্গি ।’।
