সম্ভলে পাওয়া ভয়াবহ স্টেপওয়েল বাওলির কি কলিযুগের সমাপ্তির লক্ষণ ? খননের সময় সুড়ঙ্গ থেকে এমন একটি প্রাচীন জিনিস বেরিয়ে আসে যে, খননকারী ও উপস্থিত দর্শকদের চোখ জ্বলতে শুরু করে৷ সম্ভলের ১৫০ বছরের পুরনো স্টেপওয়েল বাওলির রহস্য কি?
আসলে, উত্তর প্রদেশের সম্ভল জেলার চান্দৌসি এলাকায় অবস্থিত একটি প্রাচীন স্টেপওয়েল খননের সময় এক ভয়াবহ দৃশ্য সামনে এসেছে, যা দেখে ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ (এএসআই) দলকে বাধ্য হতে হয়েছে কাজ বন্ধ করতে । এই স্টেপওয়েল খননের সময় যেসব রহস্যময় ঘটনা সামনে আসে, তার ফলে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়।
স্টেপওয়েল খননের পথে কি সেই বিপদ ?
সম্ভলের চান্দৌসিতে অবস্থিত লক্ষ্মণ কুঞ্জ এলাকায় এই স্টেপওয়েলটির খনন কাজ দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। স্টেপওয়েলটির গভীরে পৌঁছানোর পর, এএসআই দল এর দ্বিতীয় তলায় বেশ কয়েকটি বিপদ লক্ষ্য করে। এখানে অক্সিজেনের অভাব এবং গরম ধোঁয়া বেরিয়ে আসতে দেখা গেছে । এর সাথে, স্টেপওয়েলটির ভেতর থেকে একটি অদ্ভুত গন্ধও আসছিল, যা কিছু মারাত্মক গ্যাসের লিকেজ নির্দেশ করে। এই পরিস্থিতি দেখে, এএসআই দল তাৎক্ষণিকভাবে খনন কাজ বন্ধ করে দেয় এবং আরও সাবধানতার সাথে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয়।
বলা হচ্ছে, হঠাৎ করেই স্টেপওয়েলটির দ্বিতীয় তলা থেকে গ্যাস বের হতে শুরু করে। এএসআই এই বিষয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কারণ গ্যাস লিকেজ হওয়ার কারণে শ্রমিকদের ভেতরে যাওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারত। এএসআই দল তাৎক্ষণিকভাবে শ্রমিকদের সরিয়ে নেয় এবং পরবর্তী খনন কাজ বন্ধ করে দেয়। দলটি এখন নিজস্ব তত্ত্বাবধানে এটি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং সম্পূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থার অধীনে পরবর্তী খনন করা হবে।
স্টেপওয়েলের ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং অতীত ইতিহাস :
এই স্টেপওয়েলটি রাজা আত্মারাম তৈরি করেছিলেন। এটি একটি প্রাচীন জলাধার, যা মধ্যযুগে নির্মিত হয়েছিল কিন্তু পরে এটি বিস্মৃতির আড়ালে চলে যায়।স্থানীয় বাসিন্দাদের দখল এবং ধ্বংসাবশেষ জমার কারণে এই স্টেপওয়েলটির অস্তিত্ব দীর্ঘদিন ধরে চাপা পড়ে ছিল। এখন যখন এটি খনন করা হচ্ছে, তখন এর ভেতর থেকে অনেক নতুন নতুন তথ্য বেরিয়ে আসছে। স্টেপওয়েলের দ্বিতীয় তলার খননের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী এই ঐতিহাসিক স্থানের গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
দ্বিতীয় তলা খননে অসুবিধা
স্টেপওয়েল ইস্যুতে অভিযোগকারী কৌশল কিশোর বলেছেন যে খননকাজে বেশ কয়েকটি প্রযুক্তিগত এবং সুরক্ষা সমস্যা রয়েছে। স্টেপওয়েলটির ভেতরে দ্বিতীয় তলার ইটের একটি অংশ ভেঙে গেছে, যার ফলে দেয়াল ধসে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এই কারণে, এএসআই আরও সতর্কতা ও সতর্কতার সাথে খননকাজ চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এএসআই স্পষ্টভাবে বলেছে যে স্টেপওয়েলটির ভেতরে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে এবং আরও খনন কেবল তাদের তত্ত্বাবধানে করা হবে। নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে, এএসআই-এর বিশেষজ্ঞদের দল এখন এই স্টেপওয়েলের ঐতিহাসিক গুরুত্ব বুঝতে আরও কাজ করবে। বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে স্টেপওয়েলের সম্পূর্ণ কাঠামোটি অধ্যয়ন এবং সংরক্ষণ করা প্রয়োজন যাতে এটি আমাদের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে থাকে।
নতুন উদ্ঘাটন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
স্টেপওয়েল খননের সময় আবিষ্কৃত নতুন তথ্য এবং ঘটনাগুলি প্রত্নতাত্ত্বিক জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। স্টেপওয়েলের ভেতরের রহস্যময় পরিস্থিতি এবং এর ঐতিহাসিক গুরুত্বের কারণে, এখন এই স্থানটি নিয়ে নতুন পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এএসআই এখন এটিকে সম্পূর্ণরূপে সুরক্ষিত করার এবং গবেষণামূলক কাজ পরিচালনার উপর মনোযোগ দিচ্ছে যাতে এই ঐতিহাসিক ঐতিহ্য ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করা যায়।
সম্ভলের চান্দৌসিতে অবস্থিত স্টেপওয়েল খননের ফলে কেবল ঐতিহাসিক তথ্যই প্রকাশ পায়নি, বরং নিরাপত্তা ও সতর্কতার গুরুত্বও তুলে ধরা হয়েছে। এই স্টেপওয়েলটি এখন এএসআই-এর সতর্ক তত্ত্বাবধানে খনন করা হবে এবং আশা করা হচ্ছে যে এর মাধ্যমে আমরা আমাদের ইতিহাসের আরও অমূল্য রত্ন আবিষ্কার করতে সক্ষম হব।।