প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৭ আগস্ট : কয়লা কারবারী রাজু ঝা কে খুনের ঘটনায় জড়িত
দুস্কৃতিদের নাগাল পেতে পুলিশকে কার্যত হিমসিম খেতে হয়েছিল ।আর এবার স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে গুলি করে খুনের চেষ্টার ঘটনাতেও দুস্কৃতিদের নাগল পেতে হিনসিম খাচ্ছে পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড় থানার পুলিশকে।ঘটনার পর থেকে দু’দিন পেরিয়ে যাবার পরেও দুস্কৃতিরা অধরাই রয়ে গিয়েছে।আর তা নিয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ী মহলে আতঙ্ক বাড়তেই অভয় যোগাতে আসরে নেমেছে জেলা পুলিশ।শুরু হয়েছে জেলার বিভিন্ন থানা এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের নিয়ে পুলিশের বৈঠক।
মাত্র পাঁচ মাস আগে ভর সন্ধায় হাড়হিম করা শুটআউ্যের ঘটনা ঘটেছিল শক্তিগড়ে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে থাকা ল্যাংচার দোকানের সামনে। জনবহুল ওই জায়গাতেই পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে পরপর গুলি চালিয়ে কয়লা কারবারী রাজু ঝা কে খুন করে পালায় দুস্কৃতিরা। পয়লা এপ্রিলের
সেই ঘটনার আতঙ্ক আজও পিছু তাড়া করে বেড়ায় শক্তিগড়ের ব্যবসায়ীদের।রাজু ঝাকে খুনের
ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে ফের গত শুক্রবার
দিনে দুপুরে শুটআউটের ঘটনা ঘটে শক্তিগড়ে।
এবার দুস্কৃতিদের নিশানায় ছিলেন এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী।সোনা লুট করতে এসে বাধা পেয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ী সদীপ দাস ওরফে খোকনের পেটে গুলি চালিয়ে জখম করে পালিয়ে যায় দুস্কৃতিরা। বর্ধমানের বৈকন্ঠপুরের বাসিন্দা ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ী
এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে এই ঘটনা নিয়ে একই বিল্ডিংয়ের অপর ব্যবসায়ী বিশ্বজিত চ্যাটার্জী শক্তিগড় থানায় যে অভিযোগ জানিয়েছেন তা শিউরে ওঠার মতোই। বিশ্বজিত বাবু লিখিত অভিযোগে পুলিশকে জানিয়েছেন,শক্তিগড়ের জোতরামে দুর্গাপুরের দিকে যাওয়ার সার্ভিস রোডের পাশে একটি বিল্ডিংয়ে তাঁর কপড়ের দোকান রয়েছে । একই বিল্ডিংয়ে রয়েছে খোকন দাস ও তাঁর ভাই স্বপন দাসের অলঙ্কারের দোকান। বিশ্বজিত বাবুর অভিযোগ অনুযায়ী,’২৫ আগষ্ট বেলা সাড়ে ১১ টা নাাগাদ টায়ার বাস্ট হওয়ার মত আওয়াজ শোনেন । পরক্ষণেই তিনি শুনতে পান ’চোর চোর- ধর ধর’ বলে খোকন দাস চিৎকার করছেন।সেই চিৎকার শুনেই তিনি খোকন থাসের অলঙ্কার দোকানের দিকে ছুটে যান । তখন তিনি দেখেন,খোকন দাস একদিকে পড়ে রয়েছে। আর তার উল্টোদিকে কালো প্যান্ট ও সাদা জামা পরা ২৫-২৬ বছর বয়সী একটি ছেলে পড়ে রয়েছে। ছেলেটি পালানোর চেষ্টা করলে তাকে লক্ষ করে তিনি ইট ছুঁড়ে মারতেই ছেলেটি তার দিকে বন্দুক বের করে । ভয়ে তিনি ছেলেটিকে আর তাড়া করার শাহস পান না । ছেলেটি তুরন্ত সেখান থেকে পালিয়ে যায় । পরে মোটর বাইকে চেপে আসা আপর আর এক যুবক হাতে বন্দুক থাকা যুবককে বাইকে চাপিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় ।’
এই অভিযোগের ভিত্তিতে শক্তিগড় থানার পুলিশ ৩২৬/৩০৭ /১২০বি এবং ৩৪ আইপিসি ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে । তবে ঘটনার পর থেকে দু’দিন পেরিয়ে যাবার পরে দুস্কৃতিদের একজনেরও নাগাল পুলিশ পায় নি । রাজু ঝা কে খুনের ঘটনায় জড়িত দুস্কৃতিদের মতো এই দুই দুস্কৃতিও কি একই রকম চতুরু? তারাও কি ভিন রাজ্যে গিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে ? এই প্রশ্নই এখন ঘুরে ফিরে বেড়াচ্ছে শক্তিগড়ের ব্যবসায়ীদের মুখে মুখে। তদন্তের স্বার্থে পুলিশ যদিও এসব নিয়ে এখনই মুখ খুলতে চাইছে না।।