প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৪ এপ্রিল : অষ্টাদশ লোকসভা ভোটে বিজেপিকেই মূল প্রতিপক্ষ হিসেবে চিহ্নিত করে প্রচারে ঝাঁপিয়ে ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিম ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এখন তার প্রতিপক্ষ তালিকায় বিজেপির পাশাপাশি জায়গা করে নিয়েছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন এবং আদালত। সেটাই বুধবার পূর্ব বর্ধমানের আউসগ্রাম এবং গলসির জনসভা থেকে আরও একপ্রকার স্পষ্ট করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।এদিন দুটি জনসভাতেই তার নিশানায় বিজেপি যেমন ছিল তেমনই ছিল কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন ও কলকাতা হাইকোর্ট।
তীব্র দহনের মধ্যেও এবার বঙ্গে লোকসভা ভোট হবে সাত দফায়। তানিয়ে এদিন সরব হন তৃণমূল সুপ্রিয় তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি বলেন, বিজেপিকে সন্তুষ্ট করতে ইলেকশন কমিশন মানুষকে কষ্ট দিয়ে তিন মাস ধরে ইলেকশন করছে। অন্যবার আমরা দেখতাম ৭-৮ মে এর মধ্যে নির্বাচন হয়ে যেত। মমতা প্রশ্ন রাখেন এবার কি এমন হলো যে জুন মাস পর্যন্ত ইলেকশন ।এরপরেই মমতা বলেন,এবারের দিল্লি ইলেকশনে বিজেপিকে হারাতেই হবে। তাই দহনের মধ্যেও ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছি।যাতে বিজেপি একটা সিট না পায়। এক একটা সিট আমাদের চোখের মনির মত রক্ষা করতে হবে। বাংলায় বিজেপির দুটো চোখ, একটা কংগ্রেস আর একটা সিপিএম। ওই দুটোকে দাঁড় করায় কিছু টাকা দিয়ে। যদি কিছু ভোট কাটা যায়, তাহলে তৃণমূলের থেকে কিছু ভোট চলে যাবে। এটাই ওদের (বিজেপির)মনস্কামনা। এইসব কথা বলার সাথে সাথে মমতা তার ভাষণে এও বলেন, একমাত্র তৃণমূলের এমপিরাই পার্লামেন্টে বিজেপি কে জব্দ করে রাখে।তৃণমূল কংগ্রেস না থাকলে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়বার কেউ নেই।
এসএসসি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে, এই রাজ্যের ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি চলে যাওয়া নিয়ে এদিনও বিজেপি এবং আদালতকে নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তিনি বলেন,চাকরি দেবার ক্ষমতা নেই, চাকরি কেড়ে নেওয়ার ক্ষমতা আছে।আমাদের সরকার কোন ডিপার্টমেন্টে কিভাবে চাকরি দেয় সেটা সেই ডিপার্টমেন্টের ব্যাপার। আমি ইন্টারফেয়ার করি না।বিজেপি নেতারা কেস করে শিক্ষক শিক্ষিকাদের চাকরি খাচ্ছে। সরকারি কর্মচারীদের চাকরি খাচ্ছে। মমতা প্রশ্ন তোলেন, বাংলায় কি সব স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে। বাংলায় কি স্কুল চলবে না। টিচারের চাকরি তার মানে কি আর হবে না। আমি বলে রাখি, এখনো ১০ লক্ষ এক্সট্রা চাকরি আছে শুধু সরকারি দপ্তরে।
এরপরেই বিজেপি ও কলকাতা হাইকোর্টের নাম মুখে না এনে মমতা বলেন, কোর্টে গেলেই আটকে দিচ্ছে।এদিন ঘুরিয়ে তিনি ,আদালতকে বিজেপির মহাতীর্থ কেন্দ্র বলে কটাক্ষ করেন। একই সঙ্গে বলেন, এখানে বিজেপি আপিল করলেই একেবারে যা বলবে তাই। অন্য কেউ যদি বিচার চায়, তাদের জন্য দরজা বন্ধ। ডাকাতদের বেল দিয়ে দিচ্ছে। মাফিয়াদের বেল দিয়ে দিচ্ছে। আর সবচেয়ে বড় গাদ্দার, তার বিরুদ্ধে মার্ডার কেস থাকা সত্ত্বেও বলছে তাকে এরেস্ট করা যাবে না। এটা কি আইন। এসএসসি চাকরি হারা দের পাশে দাঁড়িয়ে মমতা তার ভাষণে এদিনও বলেন, আমি জাজদের নিয়ে কথা বলবো না।জজমেন্ট নিয়ে কথা বলার অধিকার আমার আছে। যদি কোন অন্যায় কেউ করে থাকে, তুমি কুটিনি করাতে পারতে। তুমি পরামর্শ দিতে। তা না করে এক কথায় ২৬ হাজার ছেলে মেয়ের চাকরি খেয়ে নিলে। এটা কি মজার মুল্লুক।।