প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৪ এপ্রিল : ছোট বয়সে বাবা মা তাঁদের ছেলেকে কোলে নিয়ে আকাশের দিকে আঙুল উঁচিয়ে বলতেন ওই দেখ চাঁদ মামা। আবার কোন সময় দেখাতেন তারা ও নক্ষত্র । সেই তখন থেকেই মহাকাশ নিয়ে জানার আগ্রহ তৈরি হয় ছেলে অনুরাগ মান্নার।একই সাথে স্বপ্ন জাগে বড় হয়ে মহাকাশ বিজ্ঞানী হওয়ার।সেই স্বপ্ন পুরণের লক্ষে এবার এক কদম এগিয়ে গেল পূর্ব বর্ধমানের মেমারির মেধাবী ছাত্র অনুরাগ। সে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর মহাকাশ বিজ্ঞান সংক্রান্ত বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবিরে অংশ নেওয়ার ডাক পেয়েছে। স্বপ্ন পুরণের পথে ছেলে এগিয়ে যাওয়ায় যারপরনায় খুশি বাবা শ্যামল মান্না ও মা সাধনাদেবী। একই ভাবে খুশি অনুরাগের স্কুলের শিক্ষকরাও ।
অনুরাগদের পৈত্রিক বাসস্থান জেলার জামালপুর থানার জাড়গ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত গ্রাম আটপাড়া। অনুরাগের বাবা শ্যামল মান্না পেশায় ব্যবসায়ী । মা সাধনাদেবী সাধারন গৃহবধূ। শৈশবে ছেলেকে হুগলী জেলার দশঘরার একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ভর্তি করেন শ্যামল বাবু। সেখান থেকেই অনুরাগ চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত পঠন- পাঠন সম্পূর্ণ করে ।প্রাথমিক স্তরে ছেলা তাঁর মেধার পরিচয় দেওয়ায় বাবা তাঁকে ভর্তি করে মেমারির ক্রিস্টাল মডেল স্কুলে।অনুরাগ মান্না এখন এই স্কুলেরই দশম শ্রেণির ছাত্র । মেমারির রাধাপলীতে বাবা ও মায়ের সঙ্গে ভাড়া বাড়িতে থেকেই অনুরাগ পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে ।
অনুরাগ শুক্রবার জানায় ,ইসরোর মহাকাশ বিজ্ঞান সংক্রান্ত বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবিরে অংশ নেওয়ার ডাক সে পেয়েছে । সমগ্ৰ ভারতের লক্ষাধিক ছাত্র ছাত্রীর মধ্য থেকে মাত্র ৩৫০ জন এই সুযোগ পেয়েছে । তাই আগামী ১৪ মে সে ইসরোর সেন্টারে পৌঁছাবে । সেখানকার শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টারে ২৭ মে পর্যন্ত প্রশিক্ষণ চলবে । অনুরাগ এও জানিয়েছে,ইসরোর মহাকাশ বিজ্ঞান প্রশিক্ষণ শিবিরে প্রশিক্ষণ নেবার সূযোগ পাওয়াটা তাঁর জীবনে বড় প্রাপ্তি ।
অনুরাগের বাবা শ্যামল বাবু ও মা সাধনাদেবী বলেন,ছোটবেলা থেকেই মহাকাশের চাঁদ,তারা,
সূর্য ,নক্ষত্র এইসব কিছু ভাবাতো অনুরাগকে ।
বড় হওয়ার সাথে সাথে ছেলের মহাকাশ নিয়ে জানার আগ্রহ আরো বাড়তে থাকে। ছলে মহাকাশ বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে । স্বপ্নের পেছনে ছুটতে থাকা ছেলেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যেমন প্রেরণা যুগিয়ে চলেন তেমনি প্রেরণা যোগাতে থাকেন শ্যামল বাবু। এদিন শ্যামলবাবু বলেন, ইসরোর প্রশিক্ষন শিবিরে যোগ দেওয়ার সুযোগ পাবার জন্য অনুরাগকে অনলাইনে বিভিন্ন পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে । সেই পরীক্ষার ফল ১০ এপ্রিল প্রকাশিত হতে দেখা যায়,অনুরাগ প্রশিক্ষণ পাবার জন্য বিবেচিত হয়েছে ।
স্কুলের প্রিন্সিপাল অরুনকান্তি নন্দি বলেন,ছাত্র ছাত্রীদের প্রতিভা কে খুঁজে বার করা এবং তাদের অনুপ্রানীত করার কাজটা আমরা আন্তরিক ভাবে করে যাই ।তারই ফল স্বরুপ আবারে আমাদের স্কুলের ছাত্র ইসরোর মত প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ পাবার সূযোগ পেল । এটা আমাদের স্কুলেরও গর্ব ।।