এইদিন ওয়েবডেস্ক,কেতুগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),১০ জুলাই : পূর্ব বর্ধমানে ভোটের সন্ত্রাসের বলি হলেন ফের এক ব্যক্তি । মৃতের নাম পুলক সরকার (৫৬) । কেতুগ্রামের উত্তরদাসপাড়ার বাসিন্দা পুলকবাবুকে শনিবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় নির্মমভাবে পেটানো হয় । আজ সোমবার কলকাতায় নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয় । এদিকে মৃতের পরিবার যখন শোকে বিহ্বল, তারই মাঝে মৃত ব্যক্তির রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে সিপিএম ও তৃণমূলের মধ্যে রীতিমতো দড়ি টানাটানি শুরু হয়ে গেছে । তবে মৃতের আত্মীয়দের একাংশের দাবি করেছেন যে পুলকবাবু বছর দশেক আগে কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন । বর্তমানে কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে তিনি যুক্ত ছিলেন না । ঘটনার দিন তিনি দুই দলের সংঘর্ষের মাঝে পড়ে অকারণ হামলার শিকার হন তিনি ।
এদিকে পুলিশ জানিয়েছে,মৃতের পরিবারের তরফে রবিবার দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে ৩ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে ।ধৃতদের নাম সুব্রত দে, সঞ্জিত দাস ও চাঁদ শেখ ৷ তিনজনেরই বাড়ি কেতুগ্রামের উত্তর পাড়া ও দাসপাড়া এলাকায়। আজ সোমবার দুপুরে ধৃতদের কাটোয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক সকলকে ১৪ দিন বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন । বাকি অভিযুক্তদের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ।
জানা গেছে,পুলক সরকার রেলের ঠিকাদারের অধীনে কাজ করতেন । ভোটের জন্য কয়েকদিন আগে বাড়িতে ফিরেছিলেন । শনিবার শনিবার বিকেল তিনটে নাগাদ তিনি যখন ভোট দিতে যাচ্ছিলেন সেই সময় সিপিএম-তৃণমূলের সংঘর্ষের মাঝে পড়ে তিনি গুরুতর জখম হন । নিহতের স্ত্রী পূর্নিমা সরকার এদিন বলেন,’প্রতিবেশী এক মহিলার কাছে জানতে পারি আমার স্বামীকে উত্তরপাড়ার মোড়ে সুব্রত দে ও ফোঁচা দাসসহ কয়েকজন মিলে মারধর করছে ৷ ইঁট দিয়ে থেঁতলে মারা হয়েছে ।’
জানা গেছে, প্রতিবেশীরা পুলকবাবুকে উদ্ধার করে প্রথমে কাঁদরা হাসপাতালে নিয়ে যান । সেখানে থেকে তাঁকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয় । অবস্থার অবনতি হওয়ায় বর্ধমান থেকে কলকাতায় নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল তাঁকে । কিন্তু এদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয় ।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়ের দাবি করেছেন,পুলক সরকার আমাদের দলের সমর্থক ছিলেন । তৃণমূল আশ্রিত দুস্কৃতিরা চড়াও হয় সিপিএমের বুথ ক্যাম্পে। আর তখনই তৃণমূলের দুস্কৃতিদের হামলায় গুরুতর জখম হন পুলকবাবু ।’ অন্যদিকে কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ শাহনেওয়াজের দাবি,’পুলক সরকার আমাদের দলের কর্মী ছিলেন । সিপিএম মৃত্যু নিয়ে অযথা রাজনীতি করছে ।’
প্রসঙ্গত,এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া ও আউশগ্রাম মিলে এনিয়ে ৩ জনের মৃত্যু হল । ভোটের দিন কাটোয়া থানার নন্দীগ্রামে এক তৃণমূল প্রার্থীর পোলিং এজেন্টকে মারধর করার পর তার মৃত্যু হয় । তার আগের দিন বিকেলে সিপিএম ও তৃণমূলের সংঘর্ষের সময় গুরুতর জখম হন আউশগ্রামে এক সিপিএম কর্মী৷ পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁর।।