এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০২ মার্চ : বর্তমানে “ভুয়া ভোটার” নিয়ে তোলপাড় চলছে এরাজ্য । বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সন্দেহ যে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের নাম ভোটার তালিকায় অখুন্ন রেখে হিন্দিভাষী ভারতীয় নাগরিকদের নাম বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে রাজ্যের শাসকদল । পালটা কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে এরাজ্যের ভোটার তালিকায় ভুয়া ভোটার ঢুকিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । বর্তমানে শাসক ও বিরোধী দলের মধ্যে এনিয়ে চাপানউতোর চলছে । এরই মধ্যে রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার সহ-সভাপতি তথা কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী তরুনজ্যোতি তিওয়ারি মমতা ব্যানার্জির ‘আর একটি মিথ্যা ফাঁস’ হওয়ার দাবি করেছেন ।
এনিয়ে তিনি আজ এক্স-এ লিখেছেন,’মমতা ব্যানার্জির আর একটি মিথ্যা ফাঁস হয়ে গেল। নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট জানিয়ে দিল এপিক নম্বর একই হলেও তা কোনোভাবেই ভোটার জালিয়াতি প্রমাণ করে না। নোটিফিকেশনের সাধারণ বাংলায় অনুবাদ করলে দাঁড়ায় : “নির্বাচন কমিশন অফ ইন্ডিয়া নির্বাচন সদন, অশোকা রোড, নয়াদিল্লি-১১০০০১, 02.03.2025, নং: ECI/PN/187/2025 , প্রেস নোট :
এপিক নম্বরের পুনরাবৃত্তি মানেই ভুয়ো/নকল ভোটার নয় । দুটি ভিন্ন রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দ্বারা অভিন্ন আলফানিউমেরিক সিরিজ ব্যবহারের কারণে কিছু এপিক নম্বরের পুনরাবৃত্তি হয়েছে । নিবন্ধিত ভোটারদের অনন্য এপিক নম্বর বরাদ্দ নিশ্চিত করবে নির্বাচন কমিশন৷ নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্ট ও সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনগুলি খতিয়ে দেখেছে, যেখানে দুটি ভিন্ন রাজ্যের ভোটারদের অভিন্ন এপিক নম্বর থাকার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই বিষয়ে স্পষ্ট করা হচ্ছে যে, যদিও কিছু ভোটারের এপিক নম্বর অভিন্ন হতে পারে, তবে তাদের অন্যান্য বিবরণ যেমন জনসংখ্যাগত তথ্য, বিধানসভা কেন্দ্র এবং ভোটকেন্দ্র সম্পূর্ণ আলাদা।
এপিক নম্বর যাই হোক না কেন, কোনো ভোটার শুধুমাত্র সেই রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নির্দিষ্ট ভোটকেন্দ্রেই ভোট দিতে পারবেন, যেখানে তিনি ভোটার তালিকায় নাম নথিভুক্ত করেছেন এবং অন্য কোথাও নয়। একই এপিক নম্বর বরাদ্দ করার ঘটনা ঘটেছে কারণ নির্বাচনী তালিকা ডাটাবেস ERONET প্ল্যাটফর্মে স্থানান্তরের আগে কিছু রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিকেন্দ্রীভূত এবং ম্যানুয়াল পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছিল। এর ফলে কিছু রাজ্যের সিইও অফিস অভিন্ন এপিক নম্বর সিরিজ ব্যবহার করে, যা ভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটারদের মধ্যে একই এপিক নম্বর বরাদ্দ করার সম্ভাবনা তৈরি করেছে।
তবে, ভোটারদের মনে কোনো সন্দেহ দূর করতে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, সমস্ত নিবন্ধিত ভোটারকে অনন্য এপিক নম্বর বরাদ্দ করা হবে। যদি কোনো ভোটারের একই এপিক নম্বর থাকে, তবে তাকে নতুন অনন্য এপিক নম্বর দেওয়া হবে। এই প্রক্রিয়ায় সহায়তার জন্য ERONET 2.0 প্ল্যাটফর্ম আপডেট করা হবে। আনুজ চন্দক, পরিচালক৷’
তরুনজ্যোতির কথায়,আসলে মমতা জানেন ২০২৬-এ বাংলার মানুষ তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেবে, তাই এখন থেকেই মিথ্যাচার করে মানুষের মনে বিভ্রান্তি তৈরি করতে চাইছেন।’ তিনি লিখেছেন প্রশ্ন হচ্ছে, দ্বিজেন মুখার্জি প্রয়াত হওয়ার পরও কীভাবে ভোট দিলেন? যেখানে লোকসংখ্যা নগণ্য, সেখানে তৃণমূল কিভাবে হাজার হাজার ভোট পায়? তৃণমূল নেতাদের কাছে দুটো করে ভোটার কার্ড থাকে কেন? বাংলাদেশি আর রোহিঙ্গাদের ভোটার কার্ড বানিয়ে দেওয়ার জন্য তৃণমূল কেন সাহায্য করে? মমতার তৃণমূল কংগ্রেস রোহিঙ্গা আর বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ভোটার তালিকায় ঢোকাচ্ছে, আর হিন্দু উদ্বাস্তুদের নাম বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে।’
তিনি নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানিয়ে লিখেছেন, আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানাচ্ছি – ১. বাংলাদেশি আর রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। ২. মতুয়া, নমঃশূদ্র আর হিন্দু উদ্বাস্তুদের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ৩. তৃণমূলের তৈরি করা ভুয়ো ভোটার কার্ড গুলি বাতিল করতে হবে।’ তরুনজ্যোতি তিওয়ারির কথায়,’মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন প্রতিষ্ঠিত মিথ্যেবাদী। তিনি জানেন বাংলার মানুষ তাকে আর চাইছে না, তাই এখন থেকেই নিজের হারের দায় চাপানোর অজুহাত খুঁজছেন। বাংলা এবার তৃণমূল মুক্ত হবেই!’ পাশাপাশি ‘মমতা লায়ার’, ‘বাংলায় চাই পরিবর্তন’,’টিএমসি ক্যুইট বেঙ্গল’,’রোহিঙ্গা ভোট আউট’,’মতুয়াস ভোট রাইট’ প্রভৃতি হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেছেন ।।
‘