এইদিন ওয়েবডেস্ক,কেতুগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),১৮ আগস্ট : ফের ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলায় । স্বাধীনতা দিবসের দিন বিহারের মতিহারি জেলার চিরাইয়া সারসওয়া ঘাট এলাকার একটি ট্যুরিস্ট বাস বর্ধমান শহরের নবাবহাট সংলগ্ন ফাগুপুরের কাছে ১৯ নম্বর জাতীর সড়কে বেআইনি ভাবে সড়ক পথের উপর দাঁড়িয়ে থাকা পণ্যবাহী লরির পিছনে সজোরে ধাক্কা দিলে দুই মহিলা সহ ১১ জন পূণ্যার্থীর মৃত্যু হয় । জখম হয় দুই শিশু সহ আরও ৪১ জন পূণ্যার্থী । তার জের মিটতে না মিটতেই আজ সোমবার সকালে জেলার আর এক প্রান্ত কেতুগ্রামে ঘটে গেল মর্মান্তিক বাস দুর্ঘটনা । প্রথম দুর্ঘটনায় রাজ্য পুলিশের ট্রাফিক ব্যর্থতাকে দায়ি করা হচ্ছিল । আর আজ কেতুগ্রামের দুর্ঘটনায় খোদ রাজ্য সরকার পরিচালিত এসবিএসটিসি (South Bengal State Transport Corporation ) বাসের বেপরোয়া গতিকে দায়ি করা হচ্ছে । যার জেরে বেঘোরে প্রাণ হারাতে হল দুই যাত্রীকে৷ নিহতরা হলেন কেতুগ্রামের দেবপুর গ্রামের বাসিন্দা সোমনাথ চোঙদার(২৮) ও মোহাম্মদ টিপু সুলতান (৫২) ।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, আজ সকালে চাকদা–কলকাতা রুটের এসবিএসটিসি বাসটি কেতুগ্রামে এলে সোমনাথ চোঙদার ও মোহাম্মদ টিপু সুলতান ওই বাসে চড়েন । কিন্তু বাসটি ছিল ভিড়ে ঠাসা । বাসটিতে এত যাত্রী চাপানো হয়েছিল যে তারা ভিতরে দাঁড়াবার মত জায়গা পর্যন্ত পাননি । যেকারণে তারা দরজায় ঝুলে যাচ্ছিলেন। বাসের দরজা খোলাই ছিল ।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান,বাসটি অস্বাভাবিক গতিতে চালাচ্ছিলেন চালক । যেকারনে বাসটি চরখি নতুন টোল প্লাজার সামনে এলে গার্ডরেলে ধাক্কা খায় বাসের দরজা ৷ ধাক্কা খাওয়ার পর দরজাটি ফিরে এসে গেটে ঝুলে থাকা দুই ব্যক্তিকে সজোরে আঘাত করে । আর সেই ধাক্কার পর সোমনাথ এবং টিপু সুলতান সড়কপথের উপর ছিটকে পড়েন । মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর আঘাত লাগে তাদের । পরে রক্তাক্ত অবস্থায় দুজনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায় । কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাদের মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এই দুর্ঘটনার পর ফের রাজ্য পুলিশের ট্রাফিক ব্যর্থতাকে দায়ি করছেন এলাকার বাসিন্দারা৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ যে দুই যাত্রীকে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে রেখেই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে দের বাসটি । যেকারণে এসবিএসটিসি বাসটির বিরুদ্ধে অতিরিক্ত যাত্রী বহন ও বেপরোয়া গতিতে বাস চালানোর অভিযোগ তোলা হচ্ছে । পাশাপাশি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে পুলিশের গাছাড়া মানসিকতা নিয়েও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গ্রামবাসী এবং মৃতদের পরিবার পরিজন । দোষী বাসচালকের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা ।।