শ্যামসুন্দর ঘোষ,সাতগেছিয়া(পূর্ব বর্ধমান),২৩ ফেব্রুয়ারী : পূর্ব বর্ধমান জেলার সাতগেছিয়ায় পুকুর খননের সময় প্রাচীন বিষ্ণুমূর্তি উদ্ধার হয়েছে । খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মূর্তিটি উদ্ধার করতে গেলে গ্রামবাসীদের বাধার মুখে পড়তে হয় । গ্রামবাসীদের দাবি ছিল যে তারা মূর্তিটি প্রতিষ্ঠা করে মন্দির নির্মান করবে৷ যদিও শেষ পর্যন্ত পুলিশ মূর্তিটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় ।
জানা গেছে,সাতগেছিয়ায় পোদ্দার পুকুর নামে একটি জলাশয়ের সংস্কারের কাজ চলছে বেশ কিছুদিন ধরে । জেসিবি মেশিন দিয়ে পুকুরের পাঁক তুলে অন্যত্র ফেলা হচ্ছে । আজ রবিবার যথারীতি পুকুরের পাঁক তোলার কাজ চলছিল । সেই সময় পাঁকের সঙ্গে উঠে আসে কষ্টিপাথরের ওই প্রাচীন চতুর্ভুজ বিষ্ণুমূর্তিটি৷ পদ্মের উপর দণ্ডায়মান মূর্তিটি তিন থেকে সাড়ে তিন ফুট লম্বা এবং ৭০-৭৫ কেজি ওজন বিশিষ্ট । শ্রীবিষ্ণুর উপরের ডান হাতে গদা ও বাম হাত খন্ডিত। নিচের দুহাতও খন্ডিত দেখা গেছে৷ শ্রীবিষ্ণুর পায়ের দুপাশে খর্বাকৃতি দুটি মূর্তি দণ্ডায়মান অবস্থায় রয়েছে । এঁরা দুই জন হল শ্রীবিষ্ণুর অস্ত্রের মূর্তরূপ বা “আয়ুধপুরুষ” বলে জানিয়েছেন গবেষকরা । যদিও দুটি খর্বাকৃতি মূর্তিই খন্ডিত । দেবতার মাথায় মুকুট এবং মস্তকের চারপাশের হাতি,সিংহ প্রভৃতি প্রাণী খোদাই করা আছে । দেবতা যে পদ্মের উপার দণ্ডায়মান তার নিচেও পশুর মূর্তি খোদাই করা আছে । গ্রামবাসীদের অনুমান মূর্তিটি পাল অথবা সেন যুগে নির্মিত ।
পোদ্দার পুকুর পাড়ের বাসিন্দা বাবুলাল ঘোষ বলেন,’মূর্তিটি উদ্ধারের পর আমরা ইঁট বিছিয়ে একটা পূজাস্থল করে মূর্তিটি পূজাও শুরু করেছিলাম । কিন্তু পুলিশ এসে বললো মাটির নিচে পাওয়া সমস্ত বস্তুই সরকারি সম্পত্তি । একথা বলে তারা মূর্তিটা গাড়িতে চাপিয়ে থানায় নিয়ে যায় ।’
জানা গেছে,পুলিশ মূর্তিটি নিয়ে যাওয়ার পর বেশ কিছু মহিলা ও পুরুষ থানায় যান । তারা মূর্তিটি গ্রামবাসীদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান৷ এনিয়ে পুলিশের সাথে গ্রামবাসীর অল্পবিস্তর বাকবিতণ্ডাও হয় । স্থানীয় গৃহবধূ ভাগবতী ঘোষ বলেন, ‘শ্রীবিষ্ণুর মূর্তিটি আমাদের হাতে তুলে দেওয়া হোক । আমরা দেবতার নিত্যসেবা করব । চাঁদার টাজায় মন্দির নির্মান করে দেবতাকে প্রতিষ্ঠা করব ।’ এদিকে মূর্তিটি ঠিক কত বছরের প্রাচীন এবং তার ইতিহাস নিয়ে গবেষণার জন্য পুলিশ পুরাতত্ত্ব বিভাগকে খবর দিয়েছে বলে জানা গেছে ।।