গৌরনাথ চক্রবর্তী,কাটোয়া(,পূর্ব বর্ধমান),২৬ মার্চ : পুকুর সংস্কারের জন্য মাটি খোঁড়ার কাজ চলছিল । সেই সময় পুকুরের পাঁকের সঙ্গে উঠে এল সাড়ে চার ফুট উচ্চতার প্রাচীন এক শিলামূর্তি । বৃহস্পতিবার বিকেলে বিরল ওই মূর্তিটি উদ্ধার হয় পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া থানার বেড়াগ্রামে জনৈক এক গ্রামবাসীর পুকুর খননের সময় । মূর্তিটি বৌদ্ধ আমলে নির্মিত বলে ইতিহাসবিদরা জানিয়েছেন।
কাটোয়ার দাঁইহাট শহরের পাশেই এই বেড়াগ্রাম । জানা গেছে, ওই গ্রামের বাসিন্দা জনৈক দিলীপ ঘোষ, উদয় ঘোষরা সম্প্রতি তাঁদের একটি পুকুরের সংস্কারের কাজ শুরু করেন । বৃহস্পতিবার বিকেলে চলছিল পুকুরের পাঁক কাটার কাজ । সেই সময় পাঁকের সঙ্গে উঠে আসে পাথরের এক দেবীমূর্তি । মুর্তিটি জল দিয়ে পরিষ্কার করার পর দেখা যায় দেবীর তিনটি মুখ । প্রতি মুখে তিনটি করে চোখ । দেবীর ডান দিকের মুখ ক্রুদ্ধ ভঙ্গিমায়। বাঁ দিকের মুখাবয়ব বরাহ আদলের। দেবীর মধ্য মুখটি শান্ত । দেবী অষ্টভূজা ।
ইতিহাস গবেষক কাটোয়ার বাসিন্দা স্বপন ঠাকুর জানিয়েছেন,বৌদ্ধ আমলের এই মূর্তিটি অষ্টভূজা মারিচী মূর্তি বলা হয় । দেবীর আটটি হাতে থাকে সূচ, সুতো, অঙ্কুশ, রজ্জু, তীর, ধনুক, বজ্র এবং অশোক গাছের ডাল । একটি রথের উপর দাঁড়িয়ে থাকেন দেবী । সাতটি বরাহ টেনে নিয়ে যায় সেই রথ । দেবীর রথের চাকার তলায় থাকে রাহু । আরও চারজন দেবী অষ্টভূজা মারিচী দেবীকে ঘিরে থাকেন । তিনি বলেন, ‘আনুমানিক প্রায় ১২৭০- ১৩০০ বছরের প্রাচীন এই মূর্তিটি। পাল যুগে বৌদ্ধধর্মের উত্থানের সময় এই মারিচী মূর্তির উপাসনার চল ছিল । সেই হিসাবে মূর্তিটির অনেক পুরাতাত্মিক মূল্য রয়েছে ।’
এদিকে মূর্তিটি উদ্ধারের পর বাড়িতে নিয়ে এসে পূজার্চনা শুরু করে দেন পুকুর মালিকের পরিবারের লোকজন । পরে খবর পেয়ে কাটোয়া থানার পুলিশ গিয়ে মূর্তিটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় । বর্তমানে পুলিশের হেফাজতেই রয়েছে ওই মূর্তিটি ।।