এইদিন স্পোর্টস নিউজ,১৯ ফেব্রুয়ারী : ১৯৯৬ ওয়ানডে বিশ্বকাপের যৌথ আয়োজক ছিল পাকিস্তান। সন্ত্রাসবাদের আঁতুরঘর পাকিস্তানে তারপর আর কোনো আইসিসির টুর্নামেন্ট আয়োজিত হয়নি। এই ২৯ বছরে আইসিসির পুরুষ ও নারী মিলিয়ে ৫৬টি টুর্নামেন্ট হয়েছে। যেখানে ছিল পুরুষদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ ৭টি, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ৯টি, ৯টি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। এছাড়াও নারীদের ক্রিকেটে ওয়ানডে বিশ্বকাপ হয়েছে ৭ বার, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ৯ বার। আর জাতীয় দলের বাইরে সবচেয়ে বড় যে আসর, পুরুষদের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ, সেটিও গত তিন দশকের মধ্যে হয়েছে ১৪ বার।
মূলত পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদের বাড়বাড়ন্তের জন্য নিরাপত্তার কারণেই আইসিসি তার কোনো ইভেন্টই সেদেশে আয়োজন করার ঝুঁকি নেয়নি । ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে নাইন-ইলেভেনের হামলা এবং এরপর আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণের সরাসরি পাকিস্তানে প্রভাব পড়ে । সেই বছরই নিউজিল্যান্ড দল যখন পাকিস্তানে গিয়ে পৌছায়, তখন তাদের হোটেলের সামনে বোমা বিস্ফোরণ হয়। যার কারণে তাৎক্ষণিকভাবে সেই সিরিজ বাতিল করা হয়।এরপর একে একে আইসিসির পূর্ণাঙ্গ সদস্যের দেশগুলো পাকিস্তানে যেতে অস্বীকার জানায়। ২০০৮ সালে পাকিস্তানে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হওয়ার কথা ছিল । নিরাপত্তার কারণে তা সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে পাকিস্তান সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা খায় ২০০৯ সালে। সেই বছর শ্রীলঙ্কা দল গিয়েছিল পাকিস্তান সফরে। গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের বাইরে শ্রীলঙ্কা দলের টিম বাসে সন্ত্রাসী হামলা হয়। সেই হামলায় মারা যান ৬ পুলিশ সদস্য ও ২ পথচারী। এ ঘটনার পর কোনো দলই আর পাকিস্তানে যেতে রাজি হয়নি । ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যৌথভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানে কোনো ম্যাচ রাখা হয়নি।
নানা বাধা-বিপত্তির পর অবশেষে আইসিসির টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে যাচ্ছে পাকিস্তান। যদিও এবারও সব ম্যাচ পাকিস্তানে হচ্ছে না। ভারত পাকিস্তানে না যাওয়ায় তাদের ম্যাচগুলো হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে । তবুও কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডে তা বলতেই হবে। পিসিবি চাইবে, এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি সফলভাবে আয়োজন করে ভবিষ্যতে আইসিসির আরও অনেক ইভেন্ট আয়োজন করার অনুমতি পাওয়া। কিন্তু ক্রমবর্ধমান ইসলামি সন্ত্রাসবাদের কারনে কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে ।।