মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ও জহরলাল নেহেরুর সময় থেকেই ভারতে মুসলিম তোষামোদি রাজনীতি চলে আসছে । ভোটব্যাংক ভরাতে বামপন্থী, তৃণমূল কংগ্রেস, আম আদমি পার্টির মত রাজনৈতিক দলগুলি গান্ধী- নেহেরুর সেই নীতিকে আত্মসাৎ করে শাসন ক্ষমতা কুক্ষিগত করার খেলা চালিয়ে যাচ্ছে । ‘তোষামদি নীতি’র স্রষ্টা কংগ্রেসের এই নীতি কার্যত তাদের ডিএনএ-তে ঢুকে গেছে । কংগ্রেসের যুবরাজ রাহুল গান্ধী ভোট এলে মাঝে মধ্যে সাধুসন্ত সেজে হিন্দুদের প্ররোচিত করার কাজ করেন ঠিকই, কিন্তু মুসলিম তোষামোদি নীতি তারা ছাড়েনি । স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে কংগ্রেসের মুসলিম প্রীতির একটা নজির এখানে তুলে ধরা হল :
আপনারা কি জানেন সৈয়দ গোলাম মহিউদ্দিন আহমেদ বিন খাইরুদ্দিন আল হুসাইনি কে ছিলেন?হুসেইনি কংগ্রেসের একজন বড় নেতা ছিলেন। কংগ্রেস তাকে হিন্দু মুসলিম ঐক্যের পোস্টার বয় এবং ধর্মনিরপেক্ষতার সবচেয়ে বড় ঠিকাদার বানিয়েছিল। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পরপরই, হুসেইনি তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বল্লভভাই প্যাটেলের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। কারণ ছিল, দিল্লি পুলিশ সেই সময়ে দিল্লিতে সংঘটিত ভয়াবহ দাঙ্গায় জড়িত দাঙ্গাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর আচরণ করছিল।
হুসেইনি দাবি করেছিলেন যে দিল্লি পুলিশের তৎকালীন কমিশনার, যিনি একজন শিখ ছিলেন, তাকে তার পদ থেকে অপসারণ করা হোক এবং শাস্তি দেওয়া হোক। হুসেইনি সর্দার প্যাটেলকে বলেন যে, মুসলিমরা দিল্লি পুলিশ কমিশনারের উপর ক্ষুব্ধ এবং তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে, তাই পুলিশ কমিশনারকে অবিলম্বে অপসারণ করে শাস্তি দেওয়া উচিত। কিন্তু সর্দার প্যাটেল তার এই অযৌক্তিক দাবি মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান। কারণ দিল্লির দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে সফল প্রচেষ্টার জন্য সেই শিখ পুলিশ কমিশনার সারা দেশে তখন প্রশংসিত হচ্ছিলেন।
তারপর কয়েকদিন পর, তিনি আবার উচ্ছ্বসিত মুখে প্যাটেলের কাছে গেলেন। এবার তাঁর দাবি ছিল, দেশভাগের কারণে পাকিস্তানে চলে যাওয়া মুসলমানদের জমি এবং ঘরবাড়ি ভারতে থাকা মুসলমানদের দেওয়া হোক। হুসেইনির দাবির সহজ অর্থ ছিল, সরকার যেন পাকিস্তানে পালিয়ে যাওয়া বিশ্বাসঘাতকদের জমি এবং বাড়িঘর বাজেয়াপ্ত না করে কেবল মুসলমানদেরই দিয়ে দেয়। এই অযৌক্তিক এবং হাস্যকর দাবির জন্য সর্দার প্যাটেল তাকে তীব্র তিরস্কার করেছিলেন। এবার বুঝতে পারছেন হুসেইনি কে ছিলেন?
হুসেইনি নামের এই যুবকের জন্ম আসলে সৌদি আরবে এবং ভারতে এসে বসতি স্থাপন করেন। তিনি ১৯১৯ সালে ভারতে শুরু হওয়া খিলাফত আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা ছিলেন। হুসেইনি মাদ্রাসাতেই শিক্ষা লাভ করেছিলেন। তিনি এমন কোনও স্কুলে পড়াশোনা করেননি যেখানে জ্ঞান, বিজ্ঞান, ইতিহাস, ভূগোল ইত্যাদি বিষয়ে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা দেওয়া হত । কিন্তু যখন দেশ স্বাধীন হয়, কানহাইয়া লাল মানিক লাল মুন্সি এবং ডঃ রাধাকৃষ্ণণের মতো মহান পণ্ডিতদের উপস্থিতি সত্ত্বেও, জওহরলাল নেহেরু দেশের প্রথম শিক্ষামন্ত্রীর পদ হুসেনিকে দিয়েছিলেন। ১৯৫৮ সালে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত হুসাইনি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রধান ছিলেন। যেকারণে আজ আমরা বিকৃত ইতিহাস পড়ি।কল্পনা করুন,যে কংগ্রেস দেশের শিক্ষানীতির দায়িত্ব এমন একজন ব্যক্তির হাতে তুলে দিয়েছিল যিনি কখনও জ্ঞান, বিজ্ঞান, ইতিহাস, ভূগোল ইত্যাদি বিষয়ে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা দেওয়ার মতো কোনও স্কুলের মুখ পর্যন্ত দেখেননি।
হুসেইনি ছিলেন খিলাফত আন্দোলনের অন্যতম বড় নেতা। সেই আন্দোলনের একমাত্র লক্ষ্য ছিল তৎকালীন তুর্কিতে ইসলামের খলিফা সুলতানের সিংহাসন এবং তার মৌলবাদী ইসলামী সাম্রাজ্য রক্ষা করা। হাস্যকর এবং লজ্জাজনক তথ্য হলো, তুরস্কেই ইসলামের সেই খলিফা সুলতানের উগ্র রক্ষণশীল ধর্মীয় চিন্তাভাবনার বিরুদ্ধে জনরোষের তীব্র আগুন জ্বলে উঠেছিল। ফলস্বরূপ, ১৯২৩ সালে, ইসলামের খিলাফত এবং এর শাসন তার উগ্র রক্ষণশীল ধর্মীয় নীতি সহ চিরতরে শেষ হয়ে যায়। কামাল আতাতুর্ক পাশা তুর্কিয়ের ক্ষমতা দখল করেন। কিন্তু ১৯১৯ থেকে ১৯২৩ সাল পর্যন্ত, হুসেইনি ভারতের মুসলমানদের সংগঠিত করছিলেন এবং তুর্কিয়ের ইসলামী খলিফার ইসলামী রাষ্ট্র রক্ষার জন্য হট্টগোল সৃষ্টি করছিল ।আজ আমরা হুসেইনিকে দেশের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী মওলানা আবুল কালাম আজাদ হিসেবে চিনি।।