এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২০ নভেম্বর : মহিলাদের জন্য লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার । প্রতি মাসে ২০ থেকে ৬০ বছর বয়সী মহিলাদের অ্যাকাউন্টে এককালীন সরকারি অনুদান দেওয়া হয় । নিয়ম অনুযায়ী সাধারণ শ্রেণির মহিলারা মাসে ১০০০ টাকা এবং তফসিলি জাতি ও উপজাতির মহিলারা মাসে ১৫০০ টাকা পান। এদিকে এই সরকারি প্রকল্পের সুবিধা বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী মহিলারাও পাচ্ছে বলে দীর্ঘ দিন ধরে অভিযোগ তুলে আসছে বিজেপি । বিজেপির সর্বভারতীয় আইটি ইনচার্জ অমিত মালব্য জানিয়েছেন, লক্ষ্মী ভান্ডারের জন্য রাজ্য সরকার ৪৮,০০০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে । তার মধ্যে কত টাকা বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা পেয়েছে ? এই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি ।
বুধবার কলকাতায় দলীয় কার্যালয়ে বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের সাংবাদিক বৈঠকের ভিডিও ক্লিপটি এক্স-এ শেয়ার করে অমিত মালব্য লিখেছেন,’পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অংশ থেকে, অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশকারী বাংলাদেশিরা এখন SIR প্রক্রিয়ার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাদের অনেকেই, বিশেষ করে মহিলারা স্বীকার করেছেন যে তারা লক্ষ্মী ভান্ডার প্রকল্পের অধীনে অর্থ পাচ্ছেন। লক্ষ্মী ভান্ডারের জন্য রাজ্য সরকারের ৪৮,০০০ কোটি টাকার কতটা ব্যয় এই অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের কাছে পাঠানো হয়েছে তা অবিলম্বে তদন্তের দাবি করছি। রাজ্য সরকার কেন পশ্চিমবঙ্গের করদাতাদের অর্থ অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের হাতে তুলে দিয়েছে ? কোন নথিতে এই সুবিধাগুলি অনুমোদিত এবং বিতরণ করা হয়েছিল?’ সাংবাদিক বৈঠকে একই কথা জানিয়েছেন অগ্নিমিত্রা পাল ।
রাজ্যের শাসকদলের কথায় এখানে কোনো রোহিঙ্গা বা বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী নেই । কিন্তু গত ৪ নভেম্বর থেকে ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়া শুরু হতেই কাতারে কাতারে অনুপ্রবেশকারীদের পালিয়ে যাওয়ার খবর সামনে আসছে । বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলা হচ্ছে যে এসআইআর-এর ভয়ে রাজ্যের বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে মূলত অনুপ্রবেশকারীদের পালানোর দৃশ্য নজরে পড়ছে । উত্তর ২৪ পরগণার হাকিমপুর সীমান্তে প্রচুর ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে জানিয়েছে টিভি ৯ বাংলা । অবশ্য ওই সংবাদমাধ্যমটি বাংলাদেশিদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারে যে তাদের ভোটার কার্ড, আধার কার্ড সবই আছে । কিন্তু ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তাদের নাম নেই । সেই কারনে তারা ধরা পড়ার ভয়ে পালাচ্ছে । অন্য একটা টিভি চ্যানেল জানিয়েছে যে উত্তর ২৪ পরগণা জেলার মধ্যমগ্রাম ৩- নম্বর ওয়ার্ডের ‘বিশ্বাস পাড়া’ অঞ্চলের কিছু মানুষজন নাকি এলাকা ছেড়েে চলে গেছেন বাংলাদেশে৷ তারাও SIR এর কারণে পালিয়ে গেছে বলে দাবি করা হচ্ছে ।
টিভি ৯ বাংলা একজন বাংলাদেশি প্রৌঢ়ার সঙ্গে কথা বলেছে । অন রেকর্ড ওই প্রৌঢ়া জানিয়েছেন যে তার নাম রোকিয়া বিবি । তিনি বাংলাদেশের সাতক্ষীরার বাসিন্দা । বছর দশেক আগে তিনি ভারতে অনুপ্রবেশ করেন । তারপর কলকাতার সল্টলেক সেক্টর ৫ এ একটা ঝুপড়িতে বসবাস করছিলেন । বছর দুয়েক আগে তার ভোটার ও আধার কার্ড ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হয় । তারপর থেকে তিনি নিয়মিত ভোটও দিয়ে যাচ্ছেন । বাংলাদেশি রোকিয়া বিবি জানান যে তিনি লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে প্রথমে মাসে ৫০০ টাকা এবং সম্প্রতি ১০০০ টাকা করে পাচ্ছিলেন । কিন্তু এসআইআর চালু হওয়ায় ধরা পড়ার ভয়ে তারা নিজের দেশে ফিরে যাচ্ছেন।।
Author : Eidin.

