এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৪ ফেব্রুয়ারী : মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি তার তৃতীয় দফার শেষ বাজেট পেশ করেছেন গত বুধবার । এই বাজেটে তিনি এরাজ্যের মাদ্রাসাগুলিকে দুহাত ঢেলে দিয়েছেন । বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস রাজ্য সরকারের লিখিত বয়ানে জানান যে আরও অন্তত ৬০০ টি নতুন মাদ্রাসা তৈরি করা হবে এরাজ্যে । পরে পশ্চিমবঙ্গের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ঘোষণা করেন, বাজেটে সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দপ্তরের জন্য ৫,৬০,২২৯ টাকা ব্যয় বরাদ্দের প্রস্তাব করা হল । তবে মাদ্রাসার জন্য মুখ্যমন্ত্রী ‘উদারহস্ত’ হলেও বাংলার পার্বত্য এলাকা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নের জন্য নামমাত্র ৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে এবারের রাজ্যের বাজেটে । যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা দিলীপ ঘোষ । তিনি এই বাজেটকে ‘পশ্চিমবঙ্গকে পশ্চিম বাংলাদেশ বানানোর বাজেট’ বলে মন্তব্য করেছেন ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিলীপ ঘোষ এনিয়ে লিখেছেন,’পশ্চিমবঙ্গকে পশ্চিম বাংলাদেশ বানানোর বাজেট৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় শিল্প, কর্মসংস্থান, রাজ্যের উন্নতি করে পশ্চিমবঙ্গকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার থেকে রাজ্যের কোণায় কোণায় মাদ্রাসা খুলে, মৌলবাদীদের হাত শক্ত করে পশ্চিমবঙ্গকে, পশ্চিম বাংলাদেশ বানানোর দিকে কয়েক ধাপ এগিয়ে দিতে চাইছেন।’ তিনি আরও লিখেছেন,’এবারের বাজেটে মাদ্রাসা এবং সংখ্যালঘু উন্নয়নে বরাদ্দ, শিল্প খাতে বরাদ্দের তুলনায় চারগুণ বেশি। কাজেই জেলায় জেলায় শিল্প নয়, বেশি করে গড়ে উঠবে মাদ্রাসা। তাঁর বাজেটে এবারেও বৈমাতৃ সুলভ আচরণ উত্তরবঙ্গের প্রতি। উত্তরবঙ্গের জন্য বরাদ্দ মাত্র ৮০০ কোটি টাকা! যা সংখ্যালঘু উন্নয়নে বরাদ্দের ৮ গুণ কম।’
উল্লেখ্য,এবারের বাজেটে আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের স্মার্টফোনের জন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হলেও সাম্মানিক বৃদ্ধির বিষয়ে নিশ্চুপ মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । ইতিমধ্যেই এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গ আশা কর্মী ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদিকা ইসমত আরা খাতুন । এছাড়া, রাজ্য সরকারের কর্মীদের মহার্ঘ্যভাতা(ডিএ) ৪ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হলেও এখনো মোট ডিএ-এর নিরিখে কেন্দ্র সরকারের কর্মীদের ধারেকাছেও নেই । এনিয়ে রাজ্য সরকারের কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ আছে ।
এদিকে,এবারের রাজ্যের বাজেটের ঘোষণা অনুযায়ী, বাংলার মাদ্রাসাগুলির পরিকাঠামোর খোলনলচে বদলে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আরো বেশি সংখ্যক মাদ্রাসায় গড়ে উঠবে স্মার্ট ক্লাসরুম। সেখানে আধুনিক গ্যাজেটের মাধ্যমে পঠনপাঠন করানো হবে। এর জন্য থাকবে ই-বুক। একই সঙ্গে আরো বেশি মাদ্রাসায় কম্পিউটার ল্যাব গড়ে তোলার ভাবনা রয়েছে। চলতি অর্থবর্ষে মাদ্রাসাগুলিতে ৬০০টি স্মার্ট ক্লাসরুম, ১০০টি ডিজিট্যাল ল্যাবরেটরি তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। এর পাশাপাশি ৭৬টি মাদ্রাসায় সায়েন্স ল্যাবের মানোন্নয়ন করা হবে। এই সংক্রান্ত অনুমোদন ইতিমধ্যে দেওয়া হয়েছে বলে জানান পশ্চিমবঙ্গের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ।।

