দিব্যেন্দু রায়,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১৫ সেপ্টেম্বর : কৃষি সমবায় সমিতির অফিস থেকে বিক্রি করা হচ্ছে ভেজাল সার ! ফলে সেই সার কিনে জমিতে দিয়ে ধানের চারার বৃদ্ধি হচ্ছে না, এই অভিযোগ তুলে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার হাড়গ্রাম কৃষি সমবায় সমিতির অফিসে তালা ঝুলিয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখালো স্থানীয় কিছু কৃষক । সমবায় অফিসের ভিতরে আটকে রেখে দেওয়া হয় সমবায়ের এক কর্মীকে । খবর পেয়ে ভাতার থানার পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে সুঝিয়ে তালা খুলে সমবায় কর্মীকে মুক্ত করে । ঘটনাকে কেন্দ্র ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায় ।
স্থানীয় কৃষকরা জানান,ভাতার থানার হাড়গ্রাম কৃষি সমবায় থেকে সার কেনে রামনগর,হাড়গ্রাম, বিজিপুর, রাধানগরসহ একাধিক গ্রামের কৃষকরা । খোলা বাজারের থেকে সারের দাম কিছুটা সস্তা হওয়ায় মূলত এই সমবায়ের উপরেই স্থানীয় কৃষকরা নির্ভরশীল । ১০:২৬: ১০ এনপিকে সার নিয়েই মূলত ক্ষোভ তাঁদের । সমবায় সুত্রে জানা গেছে,চলতি আমন চাষকে মাথায় রেখে প্রায় ১২০০ বস্তা সার তুলেছিল হাড়গ্রাম কৃষি সমবায় সমিতি । তার মধ্যে বিতর্কিত এনপিকে সার তোলা হয়েছিল ১০০০ বস্তা । সারটির আসল মূল্য বস্তা পিছু ১৪৭০ টাকা । কিন্তু বাজারে ওই সারের সরবরাহ না থাকায় বস্তা পিছু ১৫০০ টাকায় বিক্রি হয় বলে খবর । ভাতার সমবায় সমিতির অন্তভূক্ত বেশ কিছু গ্রামের চাষিও হাড়গ্রাম কৃষি সমবায় থেকে ওই সার কিনে আনে । ফলে ১০০০ বস্তার মধ্যে ৯৯৮ বস্তা বিক্রি হয়ে যায় ।
স্থানীয় কৃষক পরিমল পাঁজা,শেখ হানিফদের অভিযোগ,’যে কোম্পানির সার আমাদের বিলি করা হচ্ছিল সেই কোম্পানীটি প্রায় দু’বছর ধরে উৎপাদন বন্ধ রেখেছে । অথচ সারের বস্তায় লেখা চলতি বছরের আগস্ট মাসে উৎপাদন হয়েছে । এটা কি করে সম্ভব ? আমাদের সন্দেহ ওই সার ভেজাল । সেই কারনেই জমিতে সার প্রয়োগ করে ধান গাছের বৃদ্ধি হচ্ছে না ।’
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে,এনিয়ে এলাকায় কয়েক দিন ধরে এলাকায় কানা ঘুঁষো চলছিল । শেষে খবর পেয়ে দপ্তরের এক কর্মীকে নিয়ে হাড়গ্রাম কৃষি সমবায় সমিতির অফিসে তদন্তে গিয়েছিলেন ভাতার ব্লক সহ কৃষি অধিকর্তা বরুণ হালদার । দু’একজন স্থানীয় কৃষকও ছিলেন সেখানে । সমবায় কর্মীকে সার বিক্রি বন্ধ রাখতে বলেন কৃষি অধিকর্তা । তারপর তিনি সারের নমুনা সংগ্রহ করে ফিরে আসেন ।
জানা গেছে,এদিন হাড়গ্রাম কৃষি সমবায় সমিতির কর্মী সুভাশীষ ঘোষ অফিস খুলতেই বেশ কিছু কৃষক জড়ো হয়ে অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয় । ভিতরে আটকে পড়েন সুভাশীষবাবু । খবর পেয়ে ছুটে আসেন ব্লক কৃষি অধিকর্তা । আসে পুলিশবাহিনী । শেষে কৃষি অধিকর্তার আশ্বাসে অফিসের তালা খুলে কর্মীকে মুক্ত করা হয় । বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভাতার ব্লক সহ কৃষি অধিকর্তা বরুণ হালদার ।।