এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),১৪ ডিসেম্বর : পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ায় এক গৃহবধুকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ উঠল । পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম পলি কোঁয়ার(২৬) । বুধবার বিকেলে খবর পেয়ে কাটোয়া শহরের স্টেডিয়াম পাড়ায় শুশুরবাড়িতে তাঁকে অচৈতন্য অবস্থায় দেখতে পায় বধুর বাবার বাড়ির লোকজন । তড়িঘড়ি তাঁরা বধুকে উদ্ধার করে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন । এই ঘটনায় মৃতার বাবা প্রদীপ কোঁয়ার তাঁর জামাই চন্দ্রশেখর দত্ত,জামাইয়ের বাবা সলিল দত্ত এবং মা রিনা দত্তের বিরুদ্ধে কাটোয়া থানার খুনের অভিযোগে একটি এফআইআর রজু করেছেন । প্রদীপবাবুর অভিযোগ জামাই ও তাঁর বাবা মিলে তাঁর মেয়ের মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে । অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ বধুর স্বামী ও শ্বশুরকে আটক করেছে বলে জানা গেছে ।
জানা গেছে,কাটোয়া পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ন্যাশানাল পাড়ায় বাপের বাড়ি পলি কোঁয়ারের । বছর তিনেক আগে কাটোয়া পুরসভার স্টেডিয়াম পাড়ার বাসিন্দা সলিল দত্তর ছেলে পেশায় প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক চন্দ্রশেখরের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয় । দম্পতির বছর দুয়েকের একটি পুত্রসন্তান রয়েছে । মৃতার বাবা প্রদীপ কোঁয়ার পুলিশের কাছে অভিযোগে জানিয়েছেন,বিয়ের সময় মেয়ের শ্বশুরবাড়ির চাহিদা মত ৫ লক্ষ টাকা নগদ,১৪ ভরি সোনার গহনা এবং অনান্য দানসামগ্রী পন বাবদ দিতে হয়েছিল । কিন্তু বিয়ের পর থেকেই বাপের বাড়ি থেকে অতিরিক্ত পন আনার জন্য তাঁর মেয়ের উপর চাপ সৃষ্টি করত চন্দ্রশেখর ও তার বাবা-মা । কিন্তু মেয়ে তা আনতে অস্বীকার করলে তার উপর শারিরীক ও মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি প্রাণে মেরে ফেলারও চেষ্টা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ । তিনি জানিয়েছেন,তাঁর মেয়ে ফোন করে সব ঘটনার কথা তাঁদের জানিয়ে দিত । তিনি বহুবার জামাই ও তার বাবা-মাকে বোঝানোর জন্য মেয়ের শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন । কিন্তু বোঝানোর পর কয়েকদিন ঠিকঠাক থাকালেও ফের তাঁর মেয়ের উপর নির্যাতন শুরু হত বলে অভিযোগ প্রদীপবাবুর ।
তিনি বলেন,’এদিন দুপুর ৩.৩৬ মিনিট নাগাদ আমার স্ত্রী সুনন্দা কোঁয়ারের মোবাইলে ফোন করে চন্দ্রশেখর । সে বলে,’আপনার মেয়ে কি করছে দেখে যান’ । এই শুনে আমরা স্টেডিয়াম পাড়ায় আমার মেয়ের বাড়িতে যাই । গিয়ে দেখি জামাই ও মেয়ের শুশুর একটা ঘরে দাঁড়িয়ে আছে । আর ওই ঘরের খাটে অচৈতন্য অবস্থায় শুয়ে আছে আমার মেয়ে । তারপর আমরা মেয়েকে উদ্ধার করে কাটোয়া হাসপাতালে নিয়ে যাই । কিন্তু চিকিৎসকরা আমার মেয়েকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । আমাদের সন্দেহ জামাই ও তার বাবা মিলে মেয়ের মুখে বালিশ দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে ।’
যদিও অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে এনিয়ে কোনো মতামত পাওয়া যায়নি । এদিকে এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায় ।।