এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১৫ মে : বাপের বাড়িতে এসে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হলেন বছর চব্বিশের এক গৃহবধু ৷ ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার ঢেঁড়িয়া গ্রামে । পুলিশ জানিয়েছে,মৃতার নাম সীমা দাস(২৪) । শনিবার দুপুরে বাপের বাড়ির একটি ঘরেই তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে পরিবারের লোকজন । তারপর তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন । পরে হাসপাতাল থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ । রবিবার ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয় । মৃতার বাবা পল্টু দাসের অভিযোগ,শ্বশুরবাড়ি থেকে মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়ার কারনেই তাঁর মেয়ে অপমানে আত্মঘাতী হয়েছে । অন্যদিকে শ্বশুরবাড়ির পালটা দাবি প্রতিবেশী এক যুবকের পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল সীমা । আর তার জেরেই সে আত্মঘাতী হয়েছে । ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ।
জানা গেছে,ঢেঁড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা পল্টু দাস ও টুনুদেবীর দুই মেয়ের মধ্যে বড় সীমা । পল্টুবাবু জনমজুরির কাজ করেন । তাঁর স্ত্রী টুনুদেবী সংসারের কাজের পাশাপাশি গবাদি পশু প্রতিপালনের সাথে যুক্ত । তাঁদের দুই মেয়েরই বিয়ে হয়ে গেছে । বছর ছয়েক আগে ভাতার থানার গ্রাম বলগোনার বাসিন্দা রক্ষা দাসের ছেলে বিজয়ের সঙ্গে সীমার দেখাশোনা করে বিয়ে হয় । বিজয় জনমজুরির পাশাপাশি বাড়ির পাশে একটি ঘুমটিতে মুদিখানা সামগ্রীর ব্যাবসা করেন । বিজয় ও সীমার ৫ ও ৩ বছরের দুটি মেয়ে রয়েছে ।
পল্টু দাসের অভিযোগ,’আমার মেয়ের এক বিবাহিত ননদ বাপের বাড়িতেই থাকে । মেয়ের বিয়ের পর থেকেই বিজয়,তার মা-বাবা রবু দাস ও রক্ষা দাস এবং দিদি মিলে কারনে অকারনে আমার মেয়ের উপর অত্যাচার করত ৷ অশান্তি এড়াতে প্রায়ই আমি টাকাপয়সা পাঠাতাম । একটা গরুও কিনে দিয়েছিলাম । গ্রামের লোকজনদের নিয়ে একাধিকবার মিমাংসায় বসা হয়েছিল । তা সত্ত্বেও মেয়ের উপর অত্যাচার বন্ধ হয়নি ।’
অন্যদিকে বিজয় দাসের জামাইবাবু অনুপ দাস বলেন,’বলগোনার এক যুবকের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল সীমা । দীর্ঘ প্রায় চার বছরের সম্পর্ক তাদের । পাড়ার লোকজন সবাই জানতো । এনিয়ে একাধিকবার অশান্তিও হয়েছিল । মীমাংসাতেও বসা হয়েছিল । তাতেও ওদের সম্পর্কে কোনো ছেদ পড়েনি । বুধবার ওই যুবকের সঙ্গে সীমাকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেছিল বিজয় । এনিয়ে অশান্তিও হয়েছিল । তারপর সীমাকে বাপেরবাড়িতে দিয়ে আসা হয় ।’ তবে কেউ সীমাকে মারধর করেনি বলে তিনি জানান ।
জানা গেছে,বুধবার সীমা দাসের সঙ্গে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের অশান্তির পর সীমা ও তাঁর দুই শিশুকন্যাকে ঢেঁড়িয়া গ্রামে বাপের বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসে শ্বশুরবাড়ির লোকজন । এরপর শনিবার বাপেরবাড়ির একটি ঘরে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায় ।।