আজিজুর রহমান,গলসী(পূর্ব বর্ধমান),১১ সেপ্টেম্বর : কেন্দ্র সরকারের গোডাউন থেকে লরি ভর্তি সরকারী গন বন্টনের চাল স্থানীয় একটি রাইস মিলে পাচার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ । শেষ পর্যন্ত স্থানীয় বাসিন্দারা হাতেনাতে ধরে ফেললে মিলের মালিক ও কর্মীরা পালিয়ে যায় । শনিবার দুপুর ১ টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার গলসি থানার সারুল মোড় এলাকায় । ঘটনা ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ ও প্রশাসন । তবে তার আগে একটি গাড়ির চাল খালি হলেও বাকি গাড়ি এখনও মিলের ভিতরেই রয়েছে বলে জানতে পারা গেছে । ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে প্রশাসন ।
জানা গেছে,সারুল মোড়ে রয়েছে সেন্ট্রাল ওয়ার হাউস । সেখান থেকেই সরকারি গনবন্টনের চাল,গম এলাকার রেশন ডিলারদের কাছে সরবরাহ করা হয় । কিন্তু জনসাধারণের জন্য বরাদ্দ যে চাল রেশন ডিলার মারফৎ মানুষের ঘরে যবার কথা সেই চাল এদিন দুপুরে লরি ভর্তি করে পাশের একটি রাইস মিলে গোপনে পাচার করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ ।
স্থানীয় সুত্রে খবর, এদিন বেলা ১ টা নাগাদ মিলের ভিতরে সরকারী চালের গাড়ি ঢুকতে দেখে এলাকার জনা পঞ্চাশ লরির মালিক ও চালক এসে চাল বোঝাই ছয়টি গাড়িকে আটক করে খবর দেয় গলসি থানায় । তবে তার আগেই মিলের গোডাউনে এক লরি চাল খালি করা হয়ে গিয়েছিল । বাকি ৫ টি চাল ভর্তি লরি মিলের ভিতরে রয়েছে বলে জানতে পারা গেছে । খবর পেয়ে গলসি থানার পুলিশ এলে পুলিশেরও তা নজরে পড়ে ।
স্থানীয় বাসিন্দা লরি মালিক সেখ সানোয়ার বলেন, ‘গরীব মানুষের জন্য বরাদ্দ চাল গলসির সারুলের একটি রাইস মিলে পাচার করা হচ্ছিল । আমরা গিয়ে হাতেনাতে ধরেছি । মিলের গোডাউনে খালি হওয়া বস্তায় সরকারী নাম ও লোগো লাগানো আছে । তারপর আমরা পুলিশ ও প্রশাসনকে খবর দিই । প্রশাসনের তরফ থেকে তদন্তও করা হয়েছে । আমাদের দাবি গরীব মানুষকে বঞ্চিত করে যারা বেআইনিভাবে উপার্জন করছিল তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা নিক প্রশাসন ।’
অপর এক লরির মালিক নাসির মল্লিক বলেন, ‘তখন আমার গাড়ি সরকারী গোডাইনে লোড হচ্ছিল । সেই সময় খবর পাই ৬ লরি চাল গোডাউনের পাশের রাইস মিলে পাচার করা হচ্ছে । আমরা গিয়ে দেখি ততক্ষণে একটা লরি খালি হয়ে গেছে । এরপরই বাকিগাড়িগুলো আমরা আটক করি ।’ ছয়টি গাড়িতে আনুমানিক ৬০ টন চাল আছে বলে জানান তিনি । তাঁর দাবি, ‘এই চক্রে বড় কোনও মাথা আছে । ওই মিল থেকে বস্তা পরিবর্তন হয়ে খোলা বাজারে চলে যেত গন বন্টনের চাল । প্রশাসন তদন্ত করে দোষীদের উপযুক্ত সাজার ব্যবস্থা করুক।’
গোডাউন থেকে মিলে খালি করতে আসা লরির চালক সুরোজ মাল্লিক ও স্বপন চৌধুরীরা জানান, তাঁরা ট্রান্সপোর্ট মারফৎ ভাড়া এসে গাড়ি লোড করেছেন । ট্রান্সপোর্টের নির্দেশ খালি করতে এসেছেন ওই মিলে । চুরির বিষয়ে তারা কিছু জানেন না । তবে ওগুলো যে সরকারী চাল এটা তারা স্মীকার করে নেন ।
এদিকে মিলের কর্মচারী গৌর দত্ত বলেন, ‘মিলের ভিতরে গাড়িগুলি ঢোকার সময় আমি চালকদের জিজ্ঞেস করলে তাঁরা জানান লরিগুলো মিলের ভিতরে রাখাতে এসেছেন । তারপর আমি গলসি চলে যাই । তারপর কি হয়েছে আমার জানা নেই ।’ তবে তিনিও স্বীকার করেন ওই লরিগুলিতে সরকারী চাল বোঝাই করা ছিল । এনিয়ে জানতে রাইস মিলের মালিককে একাধিকবার ফোন করা হয় । তবে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তাঁর মতামত জানা যায়নি ।।