এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),০৯ ডিসেম্বর : পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার বাজারে রয়েছে স্টেট আয়ুর্বেদিক ডিসপেনসারি “আয়ুষ সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র”৷ ভাতার মাধব পাবলিক হাইস্কুলের একেবারে গায়ে উত্তর-পূর্ব কোনে রয়েছে এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভবনটি । কিন্তু এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবনটিকে ছোট ছোট পড়ুয়ারা কার্যত আড্ডা দেওয়ার ঠেকে পরিনত করেছে বলে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ উঠছে । শুধু তাইই নয়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বারান্দায় লাগানো ধাতব বেড়া খুলে বিক্রি করে নেশা করার অভিযোগ পর্যন্ত তুলেছেন স্বাস্থ্যকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ । বিষয়টি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সচ্চিদানন্দ হাঁসদার নজরে আনবেন বলে জানিয়েছেন ভাতার আয়ুষ সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক ডঃ সনত কুমার মল্লিক । অভিযোগ পেলে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক ।
জানা গেছে,ভাতারের স্টেট আয়ুর্বেদিক ডিসপেনসারিটি বহু প্রাচীন । ভাতার রেলস্টেসনের পশ্চিমদিকে ভাতার মাধব পাবলিক হাইস্কুলেরর ঠিক পাশেই রয়েছে এই আয়ুর্বেদিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি । ব্লকের দুরদুরান্তের গ্রাম থেকে রোগীরা এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করাতে আসেন । স্কুলের ঠিক পাশে নিরিবিলি জায়গা হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরেই এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবনটা স্কুল পড়ুয়া প্রেমিক যুগলের মিলনক্ষেত্র ও আড্ডা দেওয়ার জায়গায় পরিনত হয়েছে বলে অভিযোগ । অনেক সময় পড়ুয়াদের ভবনের আড়ালে ধুমপানও করতে দেখা যায় ।
জানা গেছে,আগে ভাতার মাধব পাবলিক হাইস্কুলের স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অংশের অনেকটাই উন্মুক্ত ছিল । ফলে অবাধ বিচরণ ছিল পড়ুয়াদের । কিন্তু বেশ কয়েক বছর আগে বিশাল স্কুল ভবন নির্মান ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দিকে বিশাল উচ্চতার সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে । কিন্তু স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পড়ুয়াদের দৌরাত্ম বন্ধ হয়নি ।
ডঃ সনত কুমার মল্লিক বলেন,স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আমাকে নিয়ে মোট ৩ জন স্টাফ রয়েছেন । আমরা সব সময় থাকি না । তখন পড়ুয়ারা এসে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বারান্দায় লাগানো ধাতব বেড়া খুলে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে । সদ্য বেড়া লাগানো হয়েছিল । কিন্তু ভবনের পূর্ব দিকের অংশের বেড়া আর আর নেই ।’
জানা গেছে,ভাতারের স্টেট আয়ুর্বেদিক ডিসপেনসারিতে স্থায়ী চিকিৎসক নেই । ডঃ সনত কুমার মল্লিক সপ্তাহে তিনদিন করে এসে চিকিৎসা করেন । তিনি ছাড়াও ফার্মাসিস্ট ডঃ অলোক কুমার রায়চৌধুরী পরিষেবা দেন । এছাড়া, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঝাঁট দেওয়া সহ বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করার জন্য অনিমা দাস নামে স্থানীয় এক প্রৌঢ়াকে রাখা হয়েছে । আজ মঙ্গলবার কয়েকজন অষ্টম শ্রেণীর পড়ুয়াকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বারান্দায় আড্ডা দিতে দেখে সনতবাবু তাদের তেড়ে যান । তাদের একজনের সাইকেল কেড়ে নিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার ভয়ও দেখান । যদিও পড়ুয়ার কাকুতিমিনতি দেখে তিনি তার সাইকেলটি দিয়ে দেন ।
অনিমা দাস বলেন,’শুধু ধাতব বেড়া খুলে বিক্রি করে দিয়ে নেশা করাই নয়,ডাক্তারবাবু টবে যে ফুলগাছ লাগিয়েছেন সেগুলি পর্যন্ত তুলে নিয়ে যায় পড়ুয়ারা । ওদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গেছি আমরা ।’ এসব বন্ধ করতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে নজরদারি চালানোর দাবি জানান তিনি । চিকিৎসক ডঃ সনত কুমার মল্লিক বলেন,’আজই প্রধান শিক্ষকের কাছে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো ।’।

