শ্যামসুন্দর ঘোষ,মন্তেশ্বর,২৩ ডিসেম্বর : পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বরে পূর্ত দপ্তর ও ডিভিসির জায়গা জবরদখল করে অবৈধ নির্মানের অভিযোগ উঠল স্থানীয় ৩ গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে । ঘটনাটি মন্তেশ্বর থানার উজনা গ্রামের । স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, উজনা, ভাগরা, কুসুমগ্রাম, ভেটি প্রভৃতি গ্রামের কৃষি জমিতে সেচের জল যাওয়ার জন্য যে পাইপ বসানো ছিল সেটি অবৈধ নির্মানের ফলে বুজে যাওয়ায় কৃষিজমিতে আর জল পৌঁছবে না । ফলে সেচের জলের জন্য বিপাকে পড়তে হবে প্রচুর সংখ্যক চাষিদের । অন্যদিকে সরকারি জায়গায় অবৈধ নির্মানের কথা স্বীকার করে নিলেও জল যাওয়ার পাইপ বোজানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিন অভিযুক্তরা ।
জানা গেছে,নবদ্বীপ-বর্ধমান সড়কপথে উজনা মোড়ে ক্যানেল পুল থেকে কুসুমগ্রাম যেতেই ডান দিকে একটি নির্মানকে কেন্দ্র করে বিতর্কের সুত্রপাত । গত বুধবার এনিয়ে ৭৮ জন কৃষকের স্বাক্ষর সম্বলিত একটি গন অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয় মন্তেশ্বরের বিডিওর কাছে । ওই অভিযোগপত্রে দাবি করা হয়েছে, ‘ডিভিসির ৬ এমএলসি ১৯৬ চেনের ডান দিকের পাইপটি দিয়ে মাঠে সেচের জল যায় । কিন্তু উজনা গ্রামের বাসিন্দা পাপু সেখ,গোলাম রসুল সেখ ও ওপিজুল মল্লিক হোটেল ও ব্যাবসার জন্য বেআইনিভাবে নির্মানের কাজ করছেন । তার ফলে একদিকে যেমন সরকারী জায়গা অবরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে মাঠে জল যাওরার রাস্তাও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ।’ তাঁরা ওই অবৈধ নির্মান অবিলম্বে বন্ধের জন্য আবেদন জানান ।
স্থানীয় সিপিএম নেতা বলরাম ঘোষ বলেন, ‘একজন ইতিমধ্যে অবৈধ নির্মান করে হোটেল খুলে বসেছে । বাকি দু’জন বাবসায়িক উদ্দেশ্যে প্রায় ১৫ কাঠা সরকারি জায়গার উপর নির্মান কাজ শুরু করেছে । আমরা এনিয়ে পূর্ত,সেচ দপ্তরের পাশাপাশি পুলিশ ও ব্লক প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি । কিন্তু এদিন পর্যন্ত কোনও সুরাহা হয়নি।’ এর পিছনে শাসকদলের মদত রয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন ।
অন্যদিকে উজনা গ্রামের তৃণমূল সভাপতি বলে নিজেকে পরিচয় দেওয়া সাইফুদ্দিন শেখ নামে জনৈক এক ব্যক্তি এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘এটা ভিত্তিহীন অভিযোগ । আসলে আমাদের ৩ শতক পরিমান জায়গা ছিল । ওই জায়গাটি আমরা রফিজুল মল্লিক ও গোলাম রসুলকে বিক্রি করেছি । যদিও এখনও মিউটেশন হয়নি ।’ তিনি বলেন, ‘ওই ৩ শতক জায়গার সামনে পূর্ত দপ্তরের যে জায়গা আছে তার মালিক কে হবে ? পূর্ত দপ্তরের জায়গার উপর নির্মানের বহু নজির আছে ।’ তবে তিনি ডিভিসির জায়গা দখল করার অভিযোগ করেছেন। সাইফুদ্দিন শেখ আরও বলেন, ‘বুধবার সেচ দপ্তরের আধিকারিক আমায় ফোন করেছিলেন । আমি ওনাকে সরেজমিনে তদন্তে আসার জন্য অনুরোধ জানাই । সেই মত উনি তদন্তে আসেন । কিন্তু আমরা গিয়ে দেখি মূল সড়ক পথ থেকে প্রায় ৭০ ফুট ছেড়ে ওরা নির্মানের কাজ করছেন ।’ রফিজুল মল্লিক ও গোলাম রসুলকে অকারন হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ওই তৃণমূল নেতার ।
এদিকে অন্যতম অভিযুক্ত গোলাম রসুল সেখ বলেন, ‘আমরা সরকারি জায়গায় নির্মান করছি ঠিকই, কিন্তু তার ঠিক পিছনে আমাদের ৩ শতক জায়গা রয়েছে । তাহলে ফ্রন্ট কার ? কিন্তু যে বা যারা অভিযোগ করছেন তাঁদের ওখানে এক ছটাও জায়গা নেই ।’।