দিব্যেন্দু রায়,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১০ এপ্রিল : মারণ,উচাটন, স্তম্ভন,বিদ্বেষণ,বশীকরণ – মন্ত্রের দ্বারা কিনা হয় ! স্থানীয় এক যুবকের টানা অসুস্থতা নিয়ে এমনই এক দাবি করে বসেন এক মহিলা । মহিলা দাবি করেন, ওই যুবকের উপর তিনি ‘মারণ’ মন্ত্র প্রয়োগ করেছেন । তাই তিনি সুস্থ হচ্ছেন না । ফের মন্ত্র প্রয়োগে ওই ব্যক্তি সুস্থ হয়ে উঠবেন । আর একথা শুনে মহিলা ও তাঁর সহযোগীকে চেপে ধরে অসুস্থ ব্যক্তির পরিবার পরিজন । তাঁরা অসুস্থ ব্যক্তিকে ফের সুস্থ করে তোলার দাবি জানাতে থাকেন । ক্রমে এনিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ঘটনাস্থলে পুলিশ ছুটে এসে নিয়ন্ত্রণে আনে । পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার কুলচণ্ডা গ্রামের ঘটনা । রবিবার পুলিশের উদ্যোগে পরমে সোরেন নামে ওই অসুস্থ যুবককে ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । পাশাপাশি এনিয়ে ওই পাড়ায় একটি সচেতনতামূলক শিবিরও করা হয় । শিবিরে উপস্থিত থেকে গ্রামবাসীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন ভাতারের বিডিও অরুন কুমার বিশ্বাস,ভাতার থানার ওসি সৈকত মণ্ডল ।
স্থানীয় ও পরিবার সুত্রে জানা গেছে,কুলচন্ডা গ্রামের বর্ধমান-কাটোয়া রেল লাইনের ধারে বসবাস করেন পেশায় জনমজুর পরমে সোরেন নামে বছর পঁচিশের ওই আদিবাসী যুবক ও তাঁর পরিবার । স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে তাঁর সংসার । বছর খানেক ধরে রোগে ভুগছেন ওই যুবক । পরমের দাদা সুনীল সোরেন বলেন,’অনেক চিকিৎসা করানো হয়েছে,ওঝা গুনিনদের কাছেও দেখানো হয়েছে কিন্তু আমার ভাই আর সুস্থ হয়নি । এই অবস্থায় পাড়ারই এক মহিলা নিজেই স্বীকার করে সে ঝাড়ফুঁক করার কারনে পরমে অসুস্থ হয়েছে । আবার ঝাড়ফুঁক করে দিলেই সুস্থ হয়ে উঠবে আমার ভাই ।’
স্থানীয় সুত্রে খবর,ওই মহিলা ও পরমের এক বৌদির
উপর প্রথম থেকেই এনিয়ে সন্দেহ ছিল অসুস্থ যুবকের পরিবার পরিজনের । কিন্তু মহিলা নিজের মুখে স্বীকার করায় আগুনে ঘৃতাহুতি হয় । শনিবার সন্ধ্যায় পাড়ার লোকজন তাঁকে ও পরমের এক বৌদিকে চেপে ধরে যুবককে সুস্থ করে দেওয়ার জন্য । ক্রমে পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠে । শেষে পুলিশ গিয়ে দুই মহিলাকে উদ্ধার করে ।
বিডিও অরুন কুমার বিশ্বাস জানান,কুলচন্ডা গ্রামের ওই পাড়ায় মানুষের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা দুর করতে সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে ।।