এইদিন ওয়েবডেস্ক,কেতুগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),২৬ মে : বিধানসভা ভোটের গননার দিন থেকেই আতঙ্কে বাড়ি ছাড়া ছিলেন এক বিজেপি কর্মী । সম্প্রতি তিনি বাড়ি ফেরেন । আর বাড়ি ফিরতেই ওই বিজেপি কর্মীর উপর হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমুল কর্মীদের বিরুদ্ধে । তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে পরিবারের সদস্য সদস্যারাও আক্রন্ত হন বলে অভিযোগ । বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার আন্না গ্রামে । হামলার জেরে জখম হয়েছেন বিজেপি কর্মী কলিম শেখসহ তাঁর পরিবারের ৯ সদস্য । আহতদের মধ্যে কলিম শেখের ভাই সাইদুল শেখ ও স্ত্রী কবিলা বিবির আঘাত গুরুতর । আহত বিজেপি কর্মী জানিয়েছেন, তৃণমূলের হার্মাদবাহিনীর ভয়ে তাঁরা চিকিৎসা করাতে পর্যন্ত যেতে পারছেন না । ঘটনার পর গ্রামে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ এলেও তাঁদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার কোনও উৎসাহই দেখায়নি বলে অভিযোগ তাঁর । এই বিষয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব । অন্যদিকে বিজেপি কর্মী ও তাঁর পরিবারের উপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল ।
আগরডাঙ্গা অঞ্চলের অন্তর্গত আন্না গ্রামের উত্তরপাড়ায় বাড়ি কলিম শেখ নামে ওই বিজেপি কর্মীর । কলিম শেখ জানিয়েছেন,বিধানসভা ভোটের পর থেকেই তাঁকে তৃণমূলের দুষ্কৃতিদের হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছিল । তাই গননার দিনে ভোটের ফলাফলের ট্রেন্ড দেখে তিনি আতঙ্কে গ্রাম ছাড়া হয়ে যান । দিন দুই তিন আগে তিনি বাড়ি ফিরেছিলেন । কিন্তু গ্রামে ফেরার পরেও হামলার ভয়ে তিনি বাড়ি থেকে বিশেষ বাইরে বেরুতেন না ।
কলিম শেখের অভিযোগ, ‘একটানা বাড়িতে বসে থাকতে ভালো লাগছিল না । তাই এদিন সকাল দশটা নাগাদ বাড়ির কিছুটা পাশে তুজুরি পুকুর পাড়ে গিয়ে বসেছিলাম । সেই সময় ১০-১৫ জন তৃণমূল কর্মী এসে আমাকে ঘিরে ধরে মারধর শুরু করে । তারপর ওরা আমাকে তুলে গ্রামের দু’তলা মসজিদের কাছে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে । আমার বাড়ির লোকজন এসে বাধা দিলে তৃণমূলের দুষ্কৃতিরা তাঁদের উপর হামলা চালায় ।’
জানা গেছে,হামলার জেরে বিজেপি কর্মী কলিম শেখের ভাই সাইদুল শেখের মাথা ফেটে যায় । তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়লে পরিবারের বাকি সদস্যরা তাঁকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে যায় । মারের চোটে বাম হাতের হাড় ভাঙে বিজেপি কর্মীর স্ত্রী কবিলা বিবির । অল্পবিস্তর আহত হন আহত কলিম শেখের মা কলি বিবি,বাবা আসরফ শেখ,দুই কাকা আখসার শেখ ও মুসারফ শেখ । এছাড়া আসাদুল রহমান ও হুবাদুল শেখ নামে কলিমের দুই খুড়তুতো ভাইও জখম হন বলে জানা গেছে । ঘটনার পর ওই বিজেপি কর্মী কোনও রকমে প্রাণ বাঁচিয়ে তাঁর জখম স্ত্রীকে নিয়ে গোপন ঠিকানায় আশ্রয় নেন ।
কেতুগ্রামের বিজেপি প্রার্থী মথুরা ঘোষের অভিযোগ, ‘ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকেই তৃণমূলের হামলার শিকার হচ্ছেন আমাদের দলের কর্মীরা । তার ফলে এযাবৎ আতঙ্কে প্রায় ৩০০ বিজেপি কর্মী বাড়িছাড়া রয়েছেন । এরই মধ্যে কেউ বাড়ি ফেরার চেষ্টা করলে তাঁদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে ।’
অন্যদিকে এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ সাহনাওয়াজ বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই । তবে আমাদের কর্মীদের বলা হয়েছে সংযত থাকতে। আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না।’ পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘আন্না গ্রামের ঘটনা পারিবারিক বিবাদ হতে পারে । খোঁজ নিয়ে দেখছি।’ এই ঘটনায় এদিন বিকেল পর্যন্ত থানায় কোনও নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানা গেছে ।।