এইদিন ওয়েবডেস্ক,বীরভূম,১৫ মার্চ : শুক্রবার বীরভূম জেলার নানুর বিধানসভা কেন্দ্রের কীর্ণাহার থানার অন্তর্গত আনাইপুর গ্রামে হোলি খেলার সময় হামলার অভিযোগ উঠেছে । মুসলিমদের একটি দল বাড়ি বাড়ি ঢুকে মহিলাদের নিগ্রহ করে বলে অভিযোগ । ঘটনার জেরে আগামী ১৭ মার্চ পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । বিজেপির সর্বভারতীয় আইটি ইনচার্জ অমিত মালব্য উত্তেজনার মুহূর্তের কয়েকটি ভিডিও ওই ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া রাজ্য সরকারের স্বরাষ্ট্র এবং পার্বত্য বিষয়ক বিভাগের প্রধান সচিবের নির্দেশিকার কপি এক্স-এ শেয়ার করে মন্তব্য করেছেন,’পশ্চিমবঙ্গ ক্রমশ বাংলাদেশের মতো হয়ে উঠছে ।’
অমিত মালব্যর শেয়ার করা একটা ভিডিওতে একজন মহিলা পুলিশ আদিকারীদের উদ্দেশ্যে জনৈক এক গ্রামবাসীকে প্রশ্ন করতে শোনা যায়,’কিছু মুসলিম বাড়ি বাড়ি ঢোকে । মেয়েদের উপর অত্যাচার করে । সাধারণ মানুষকে ব্যাপক নির্যাতন করে । পুলিশ এসে তাদেরকে নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে যায় এবং উলটে সাধারণ মানুষের গায়ে হাত তোলে৷’ ওই মহিলা পুলিশ আধিকারিক বলেন, যে চারজনের নাম আছে তাদের নাম বলুন ।’ যদিও গ্রামবাসীদের অভিযোগ যে চারজন নয় ১৮ থেকে ১৯ জন ছিল । অন্য একটা ভিডিওতে একজন গ্রামবাসী পুরুষ পুলিশ আধিকারিককে জিজ্ঞাসা করেন, ‘আজ আমাদের দোল, মুসলমান এসে হিন্দুদের উপর হামলা করল কেন বলুন ?’ প্রশ্ন শুনে অস্বস্তি বোধ করেনওই পুলিশ আধিকারিক । তিনি কিছু একটা বলার চেষ্টা করেন৷ তখন রঙ মাখা গ্রামবাসীরা হাততালি দিয়ে বলে ওঠেন,’বাহ্, এটাই গণতন্ত্র ।’
অমিত মালব্য লিখেছেন,বীরভূমে হোলি উদযাপনের জন্য হিন্দুদের উপর আক্রমণ করা হয়েছিল! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনকালে, পশ্চিমবঙ্গ ক্রমশ বাংলাদেশের মতো হয়ে উঠছে। গতকাল, নানুর বিধানসভা কেন্দ্রের কীর্ণাহার থানার অন্তর্গত আনাইপুর গ্রামে দোল পূর্ণিমা এবং হোলির মহাউৎসব চলাকালীন, একটি সহিংস আক্রমণ ঘটে। স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের নেতৃত্বে এই আক্রমণ করা হয়েছিল, যেখানে মুসলিমরা “জয় শ্রী রাম” স্লোগান দেওয়ার জন্য হিন্দুদের লক্ষ্য করে এবং এমনকি প্রশ্ন তোলে, “তোমাদের এই স্লোগান তোলার সাহস কিভাবে হয়?” (যেমনটি ভিডিওতে শোনা যাচ্ছে)।’
তিনি লিখেছেন,’আশ্চর্যজনকভাবে, পুলিশের উপস্থিতি সত্ত্বেও, আক্রমণগুলি আরও বেড়ে যায় এবং সহিংসতা রোধ করার পরিবর্তে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আক্রমণকারীদের রক্ষা করে বলে জানা গেছে। ঘটনার ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে হিন্দুরা দাবি করছে যে পুলিশ পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় তাদের উপর হামলা করা হয়েছে।’
অমিত মালব্যর কথায়,’অনুরাধা ভাসিন বনাম ভারত ইউনিয়ন মামলায়, সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে যে অনির্দিষ্টকালের জন্য ইন্টারনেট নিষেধাজ্ঞা অবৈধ, এবং যেকোনো বন্ধ অবশ্যই প্রয়োজনীয়তা এবং আনুপাতিকতার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি ব্যাখ্যা করতে পারেন যে চলমান পরীক্ষার সময় ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত করার কোন জরুরি সংকট যুক্তিসঙ্গত? কে আসলে বেআইনি কার্যকলাপে জড়িত? আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তার সাম্প্রদায়িক ভোট ব্যাংক রাজনীতির জন্য পশ্চিমবঙ্গের সামাজিক কাঠামো ছিন্ন করতে দেব না। তাকে অবশ্যই সরতে হবে!’
অমিত মালব্যর শেয়ার করা রাজ্য সরকারের স্বরাষ্ট্র এবং পার্বত্য বিষয়ক বিভাগের প্রধান সচিবের নির্দেশিকায় স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে,কিছু এলাকায় সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে, বীরভূম রাজস্ব জেলার সাঁইথিয়া কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট ব্লকের সাঁইথিয়া থানার আওতাধীন সাঁইথিয়া পৌরসভার সাঁইথিয়া শহর এলাকা, হাতোরা জিপি, মাঠপালসা জিপি, হরিসারা জিপি, দরিয়াপুর জিপি এবং ফুলুর জিপি এলাকায় আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বেআইনি কার্যকলাপের জন্য ইন্টারনেট ট্রান্সমিশন এবং ভয়েস ওভার ইন্টারনেট টেলিফোনি ব্যবহার করা হতে পারে এবং তাই পরিষেবাটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে ।
এটাও বলা হয়েছে, টেলিযোগাযোগ আইন, ২০২৩ এর ধারা ২০(২)(খ) এবং (৪) এবং টেলিযোগাযোগ (সাময়িক পরিষেবা স্থগিতকরণ) বিধিমালা, ২০২৪ এর উপ-বিধি ২(১)(খ), ৩(১), (২) এবং (৪) এর অধীনে একটি আদেশের মাধ্যমে আইনত নিযুক্ত কোনও ব্যক্তির বাধা, বিরক্তি বা আঘাত, অথবা মানুষের জীবন, স্বাস্থ্য বা নিরাপত্তার জন্য বিপদ, অথবা জনসাধারণের শান্তির বিঘ্ন, অথবা দাঙ্গা বা বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধ করার জন্য, এটি জারি করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে ।এই আদেশ ১৪ মার্চ, ২০২৫ (শুক্রবার) থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে এবং ১৭ মার্চ, ২০২৫ (সোমবার) সকাল ৮টা পর্যন্ত কার্যকর থাকবে বলে জানানো হয়েছে । তবে ভয়েস কল এবং এসএমএস এবং সংবাদপত্রের উপর কোনও বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে না।।