এইদিন ওয়েবডেস্ক,হরিশ্চন্দ্রপুর,১২সেপ্টেম্বর : মালদহ জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেস শাসিত কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আখতারী খাতুনের স্বামী আব্দুর রশিদের উপর হামলার অভিযোগ উঠল । শনিবার রাতে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার কাপাইচন্ডী গ্রামের বাসস্ট্যান্ডের কাছে কয়েকজন দুষ্কৃতী মোটর বাইকে চড়ে এসে আব্দুর রশিদের উপর হামলা চালায় । পালিয়ে গিয়ে অল্পের জন্য তিনি প্রাণে বাঁচেন । স্থানীয় বাসিন্দাদের তাড়া খেয়ে হামলাকারীরা বাইকে চড়ে চম্পট দেয় । এদিকে এনিয়ে শুরু হয়ে গেছে রাজনৈতিক চাপানউতোর । এই ঘটনায় জাতীয় কংগ্রেসের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে আক্রান্ত প্রধানের স্বামী । তবে এই অভিযোগ পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছেন স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব । কংগ্রেসের দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও কাটমানি নেওয়ার ফলশ্রুতি এই হামলা।
কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাগমারা গ্রামে বাড়ি পঞ্চায়েত প্রধান আখতারী খাতুনের । তাঁর স্বামী আব্দুর রশিদ জানান, শনিবার রাতে তিনি থানা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন । তিনি কাপাইচন্ডী বাসস্ট্যান্ডের কাছে আসতেই তার উপরে চারজন মোটরসাইকেল আরোহী মুখ ঢাকা অবস্থায় এসে বাঁশ দিয়ে হামলা করে । তিনি কোনক্রমে প্রাণে বাঁচিয়ে স্থানীয় একটি বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন । স্থানীয় বাসিন্দারা হামলাকারীদের তাড়া করলে তারা বাইকে চড়ে পালিয়ে যায় । তিনি বলেন ‘দিন কয়েক আগে আমার গ্রাম এলাকায় একটি বাড়িতে পঞ্চায়েত সমিতির দেওয়া টিউবওয়েল বসানোর নিয়ে আমি প্রতিবাদ জানাই । সেখানেই সঞ্জুর আলী নামে জনৈক ব্যক্তি দলবল নিয়ে এসে আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় । তার জেরেই তারা আমাকে মারার চক্রান্ত করেছে বলে মনে হয় ।’ তিনি জানিয়েছেন,সঞ্জু আলীর জাতীয় কংগ্রেসের সমর্থক ।
যদিও এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন সঞ্জুর আলীর মা নূরসেবা বেবা । তাঁর পালটা অভিযোগ, ‘আমরা পঞ্চায়েত সমিতি থেকে একটি কল পেয়েছিলাম । সেটা যখন বসাতে যাই তখন পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী এসে ১০ হাজার টাকা কাটমানি দাবি করে । আমরা টাকা দিতে অস্বীকার করলে প্রধানের স্বামী কল লাগাতে বাধা দেয় । দেখে নেওয়ার হুমকিও দেয় ।’
তবে এই ঘটনার সঙ্গে জাতীয় কংগ্রেসের সঙ্গে যোগ থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কংগ্রেস নেতা আবদুস শোভান । তিনি কটাক্ষের সুর চড়িয়ে বলেন, ‘তৃণমূলে নিজেদের দলের মধ্যেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব । এর ফলেই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। এখানে আমাদের কোনো কর্মী জড়িত নয়। ওরা নিজেরাই কাটমানি দ্বন্দ্বে জর্জরিত। কাটমানির বখরা নিয়ে ওদের দলের মধ্যে প্রতিনিয়ত লড়াই চলে । আর তার জেরেই হামলার ঘটনা ঘটেছে ।’
ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূলের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লক সভাপতি মানিক দাস জানান,সঞ্জুর আলী এক সময় তৃণমূলের সদস্য ছিলেন । তখন পঞ্চায়েত সমিতি থেকে ওর নামে একটা নলকূপ বরাদ্দ হয় । বর্তমানে ওর সঙ্গে স্থানীয় প্রধানের কিছু মনোমালিন্য চলছে । তার জন্যই হয়তো ঘটনা ঘটে থাকতে পারে । দল সমস্ত দিক খতিয়ে দেখবে ।।