এইদিন ওয়েবডেস্ক,বারুইপুর(দক্ষিণ ২৪ পরগনা) ,১৯ মার্চ : দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বারুইপুর হল বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান ব্যানার্জির নির্বাচনী ক্ষেত্র । বিরোধী দলনেতা সহ বেশ কিছু বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করার বিরুদ্ধে বিমান ব্যানার্জির নির্বাচনী এলাকায় আজ বুধবার হাতে কালো ব্যাচ পরে পদযাত্রার ডাক দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী । কিন্তু বারুইপুর ঢোকার মুখেই তৃণমূল কংগ্রেসের “জিহাদি গুন্ডা”দের হামলার মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ । এই হামলার জেরে পদযাত্রার পথ সংক্ষিপ্ত করা হয় । পরে যাদবপুর সাংগঠনিক জেলা অফিসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে হামলার বিবরণ দেন বিরোধী দলনেতা । তার অভিযোগ,’দুই জায়গায় জমায়েত করেছে এবং অন্তত এক হাজার জন ছিল । জমায়েত হয়েছে অস্ত্র সহ । বাটাম, লোহার রড, সদ্য কাটা কাঁচা বাঁশ, হাতে পাথর ও ইঁট, জলের বোতলে লঙ্কার গুঁড়ো মেশানো । এক এক অভিনব দৃশ্যের সাক্ষী হতে হল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সহ বিধানসভার ৫০ জন বিজেপি বিধায়ককে । তিনি বলেন,’আমরা গাড়িতে ছিলাম । দুই জায়গায় অবরোধ করেছে । আমাদের পিএসওরা খানিকটা সরিয়ে দিয়ে গাড়িগুলো বের করেছে । ওদের নির্দেশে ছিল যে বারইপুর ঢোকার মুখে অবরোধে আমাদের আটকে দেওয়া । আমাদের প্রাণ যায় যাক, তবুও আমাদেরকে ৩০০০ কর্মী জমায়েত হয়েছিল বারুইপুর শহরের মধ্যস্থলে, আমরা সেখানে পৌঁছাব বলে অঙ্গীকারবদ্ধ ছিলাম । দ্বিতীয় বাধাতেও গাড়িতে লাঠিচার্জ করা হয়েছে । আমার গাড়িটা কনভয়ের চার নম্বরে ছিল । বারুইপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিহাদি গুন্ডাদের আমার গাড়ি চিহ্নিত করে দেয় । আমি খুব স্লো ওদের মাঝখানে এসেছি । ওরা আমার বাবা তুলে গালাগালি করেছে । ৮৮ বছরের প্রবীণ রাজনীতিবিদ শিশির অধিকারী, তার নাম ধরে অশ্রাব ও ভাষায় গালিগালাজ করেছে ।’
তিনি বলেন,’এই হামলা পূর্বপরিকল্পিত ৷ অভিষেক ব্যানার্জি পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছিল যে কোনভাবেই শুভেন্দু অধিকারী এবং তার দলীয় এমএলএদের বারুইপুরে ঢুকতে দেওয়া যাবে না । কার্যত বিমান ব্যানার্জীর নির্দেশেই এটা হয়েছে । গৌতম দাস এবং জয়ন্ত ভদ্র, একজন কর্মধ্যক্ষ এবং অন্যজন বারুইপুর পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান, এরা পুরসভায় ১০০ দিনের কাজের একটা বিশেষ সম্প্রদায়ের লোকেদের জোর করে এনেছিল এবং এসএইচ ই গ্রুপের মহিলাদেরও মনে হয় জোর করে আনা হয়েছে ।’ শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’আমার গাড়ি অ্যাডিশনাল এসপি চিহ্নিত করে দেওয়ার পরে অন্তত কুড়ি পঁচিশ বার বাঁশ এবং বাটাম দিয়ে মারা হয়েছে । কাঁচ ভাঙেনি ঠিকই তবে গাড়ির বহু জায়গায় আঘাতের চিহ্ন আছে । বিধায়কদেরও আটকে রাখা হয়েছিল । বাসেও হামলা করা হয়েছে এবং আমরা পরিশেষে বারুইপুরে ঢুকতে পেরেছি । এই পরিস্থিতির কারণে পূর্ব নির্ধারিত বড় রুটে মিছিল করার পরিকল্পনা বাতিল করে মাত্র ৫০০ মিটার পদযাত্রা করতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান শুভেন্দু অধিকারী ।
তিনি অধ্যক্ষ বিমান ব্যানার্জিকে নিশানা করে বলেন,’স্পিকারের আড়ালে এই বিমান ব্যানার্জি কতটা নিম্ন রুচির, নিম্ন সংস্কৃতির, শাহজাহানের মত গুন্ডায় পরিণত হয়েছে এটা বাংলার মানুষ আজকে নিজের চোখে দেখলেন ।’
কেন পূর্বপরিকল্পিত হামলা তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী । তিনি বলেন,’আগে যে কোন কর্মসূচিতে আমাকে হাইকোর্টের কাছে অনুমোদন নিতে হতো। এই প্রথম পুলিশ আমাকে অনুমতি দিয়েছে । আমাকে ট্রাপে ফেলা হয়েছে । ১ টা থেকে ৩ টা পর্যন্ত কোন কারণ ছাড়াই তৃণমূলকে পারমিশন, ৩টের পরে তাদের বের না করে তোলাবাজ ও চোর অভিষেকের নির্দেশে পুলিশ আমাদের ট্রাপে ফেলেছে । উদ্দেশ্য ছিল আমাদের মেরে ফেলা । ২৬ এর আগে পথের কাঁটা সরিয়ে দেওয়া ।’ তিনি বলেন,”নির্বাচন কমিশন দেখুক, পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন ছাড়া নির্বাচন সম্ভব কি না। রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি করছি।’ পুলিশকে ‘চটিচাট’ বলে আখ্যায়িত করে ফের ২৭ তারিখে বারুইপুর এসপি অফিস অভিযানের ডাক দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা ।।