এইদিন ওয়েবডেস্ক,মুর্শিদাবাদ,১৭ নভেম্বর : মুসলিম অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গায় সাম্প্রদায়িক হিংসার খবর পাওয়া যায় । কার্তিক পুজোর রাতে হিন্দুদের বাড়িতে ফের হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ তুললেন বিজেপি নেতা অমিত মালব্য । তিনি একটি ভিডিও পোস্ট করে এক্স-এ লিখেছেন,’কার্তিক পুজোর দিন মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় হিন্দুদের বাড়িতে হামলা চালায় মুসলমানরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ নীরব দর্শক। পশ্চিমবঙ্গ হিন্দুদের কবরস্থানে পরিণত হয়েছে। তাদের প্রতিটি উৎসব এবং পূজা আক্রমণ করা হয়, যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্যভাবে দেখেন। যথেষ্ট।’
পাশাপাশি রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এক্স-এ অগ্নিসংযোগ উত্তেজনার মুহূর্ত এবং এক আহত যুবকের ভিডিও পোস্ট করে লিখেছেন,’সাম্প্রদায়িক মুখ্যমন্ত্রীর নির্লজ্জ তোষণের রাজত্বে গভীর রাতেও জ্বলছে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা। বাংলাদেশের কায়দায় চলছে হিন্দুনিধন যজ্ঞ! দিকে দিকে নিরীহ হিন্দুদের বেছে বেছে মারধর, বাড়িতে বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, বোমাবাজি চলছে। এমনকি বাড়িতে বলপূর্বক ঢুকে নিরীহ মহিলাদেরও দেওয়া হচ্ছে প্রাণনাশের হুমকি! রাজ্যের ব্যর্থ, নির্লজ্জ পুলিশ মন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি কি এসব শুনে শান্তিতে ঘুমোচ্ছেন ? নাকি সবটাই পশ্চিমবঙ্গকে বাংলাদেশ বানানোর গভীর ষড়যন্ত্র? আমি বেলডাঙার স্থানীয় জনগণের কাছে আর্জি জানাচ্ছি, তাঁরা যেন এই মুহূর্তে কারোর উস্কানি এবং প্ররোচনায় পা না দেন। একইসঙ্গে পুলিশ প্রশাসনের কাছেও দ্রুত এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনবার আবেদন জানাচ্ছি।’
অমিত মালব্যর শেয়ার করা ভিডিওতে এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘পুলিশ প্রশাসন থাকা সত্ত্বেও কিভাবে দেখুন হিন্দু বাড়িতে আগুন লাগিয়ে…কিরকম ভাবে আগুন জ্বালিয়েছে… কিভাবে ইঁট পড়ছে…কত ইঁট করেছে দেখুন । একটা গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে,বাড়ি থেকে বের করে ।’ প্রসঙ্গত, এর আগে মুর্শিদাবাদে রামনবমীর শোভাযাত্রায় হামলার ঘটনা ঘটেছিল । মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গা-২ ব্লকের শক্তিপুর রামনবমীর শোভাযাত্রার উপর আশপাশের বাড়ির ছাদ থেকে দেদার পাথরবাজি করা হয় বলে অভিযোগ । ছোড়া হয় বোমাও । এছাড়া চলতি বছরের এপ্রিল মাসে বেলডাঙ্গায় ভগবানের শিবের জলাভিষেকে যোগ দেওয়া পূণ্যার্থীদের ওপরেও হামলা হয় । মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙা থানার কামনগর পঞ্চায়েতের কামনগর গ্রামে ওইদিন গাজনে সন্ন্যাস নেওয়া কয়েকজন গ্রামবাসী টোটোয় চড়ে গ্রামের মন্দিরে ফিরছিলে । তারা ভগবান শিবের স্তুতি গান করার অপরাধে স্থানীয় মুসলিম জনতা তাদের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ ৷ সেই হামলায় ১৮ থেকে ২০ জন সন্ন্যাসী আহত হয়েছিলেন । পাশাপাশি একই দিনে বেলডাঙা, শক্তিপুর,সালার থানা এলাকার কুমারপুর, মির্জাপুর তালিতপুরসহ একাধিক এলাকার মন্দিরে হামলা এবং প্রতিমা ভাঙচুরের অভিযোগ রয়েছে জিহাদীদের বিরুদ্ধে । কুমারপুরের শিবমন্দিরের ভিতরে জিহদিরা প্রস্রাব করে বলে অভিযোগ ।
কামনগর পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রধান বাপন ঘোষ ‘এইদিন’কে ফোনে আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘মুর্শিদাবাদের হিন্দুরা একটা স্বাধীন রাষ্ট্রে বসবাস করেও স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত । প্রতিনিয়ত মুসলিমদের নিশানা হতে হয় আমাদের । এমনকি হিন্দুদের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার সময় খোল বাজিয়ে ‘হরিবোল’ দেওয়া নিয়ম । কিন্তু মুসলমানরা আমাদের সেই প্রথা পালন করতে দেয় না । পুলিশের সাহায্য নিয়ে আমাদের হরিবোল ধ্বনি দেওয়া বন্ধ করে দেয় ।’’ তিনি এই বিষয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশও করেন ।।