এইদিন ওয়েবডেস্ক,০৬ ডিসেম্বর : রোহিঙ্গা মুসলিমরা যে দেশেই গেছে সেই দেশেই সন্ত্রাসবাদ ও অপরাধ প্রবণতা বহু গুণ বেড়ে গেছে । এজন্য কোনো দেশই এখন রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে রাজি হচ্ছে না । সম্প্রতি ইসলামি রাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ার বাসিন্দারা পর্যন্ত নৌকায় চড়ে আসা আট শতাধিক রোহিঙ্গা মুসলিম আশ্রয়প্রার্থীর হাতে খাবারের প্যাকেট ধরিয়ে দিয়ে পত্রপাঠ বিদেয় করে দিয়েছিল । এদিকে সব দেশ মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় আনুমানিক ৪০০ রোহিঙ্গা মুসলিম আন্দামান সাগরে দুটি নৌকায় চড়ে সমুদ্রে ভেসে বেড়াতে বাধ্য হচ্ছে । জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ও ত্রাণকর্মীরা বলছেন,তাদের কাছে পর্যাপ্ত খাবার ও পানীয় জল নেই,অবিলম্বে উদ্ধারের ব্যবস্থা না নিলে তাদের মৃত্যু হতে পারে । সংস্থাটির ব্যাংকক-ভিত্তিক আঞ্চলিক মুখপাত্র বাবর বালুচ অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেন,এই মানুষদের বাঁচানোর জন্য কোনও পদক্ষেপ না নিলে প্রায় ৪০০ শিশু, মহিলা এবং পুরুষ চোখের সামনে মারা যাবে ।
ওই রোহিঙ্গার দলটি সপ্তাহ দুয়েক আগে বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির থেকে দুটি নৌকায় চড়ে অন্য কোনো দেশে আশ্রয় নেবার জন্য রওনা হয়েছিল । তারপর থেকে নৌকা দুটি সমুদ্রেই ভেসে বেড়াচ্ছে । একটি নৌকার ক্যাপ্টেনের সঙ্গে জাতিসংঘের তরফে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, নৌকাটিতে প্রায় ১৯০ জন যাত্রী আছে। তাদের খাবার ও জল ফুরিয়ে গেছে। সেই সাথে নৌকার ইঞ্জিনটিও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে । সাহায্য না পেলে আরোহীরা সবাই মারা যাবে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। নকিম রবিবার জানান, নৌকাটি থাইল্যান্ডের পশ্চিম উপকূল থেকে ৩২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। যদিও সোমবার থাই নৌবাহিনীর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন যে নৌকাগুলো সম্পর্কে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।
বাবর বালুচ জানান,অন্য নৌকাটি ১৩৯ জন যাত্রী নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় আচেহ প্রদেশ থেকে প্রায় সমান দূরত্বে অবস্থিত সুমাত্রার শেষ প্রান্তে সাবাং দ্বীপে অবতরণ করে গত শনিবার । এর মধ্যে রয়েছে ৫৮ জন শিশু, ৪৫ জন নারী ও ৩৬ জন পুরুষ । গত মাসে আচেহ শহরে আরও কয়েকশ মানুষ এসে পৌঁছানোর খবরও জানা গেছে।
প্রসঙ্গত,বিচ্ছিন্নতাবাদী মানসিকতা ও সন্ত্রাসবাদে জড়িয়ে পড়ার কারনে ২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গা মুসলমানদের খাদ্য রেশন কমিয়ে দেয় মিয়ানমার সরকার । পাশাপাশি ব্যাপক হারে শুরু হয় ধরপাকড় অভিযান । তার জেরে ১০ লাখের অধিক রোহিঙ্গা পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশ ও ভারতে আশ্রয় নেয় । রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ সরকার নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে গেলেও কিছুতেই তাদের ফেরত নিতে রাজি হচ্ছে না বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমার ।।