এইদিন ওয়েবডেস্ক,আহমেদাবাদ,০১ এপ্রিল : রাজস্থানের একট ‘হনিট্রাপ গ্যাং’ সারা দেশে কার্যত ত্রাসের সৃষ্টি করে রেখেছে । সুন্দরী মহিলার প্রোফাইল পিকচার লাগিয়ে পুরুষদের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্ধুত্ব গড়ে তুলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ওই গ্যাংটি । ভিডিও কল করে নগ্ন মহিলার সঙ্গে নগ্ন হয়ে কথপোকথন করতে গিয়ে ফেঁসে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন বয়সের মানুষ । সেই ভিডিওর দৃশ্য হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে শুরু হচ্ছে ব্লাকমেলিং । কখনো ইউটিউবে ভিডিও পোস্ট করার হুমকি, অথবা কখনো দিল্লি, রাজস্থান বা মহারাষ্ট্রসহ অন্যান্য রাজ্যের পুলিশের নাম করে ফোন করে চাওয়া হচ্ছে বিপুল অঙ্কের টাকা । এনিয়ে দেশ জুড়ে সাইবার ক্রাইম ব্রাঞ্চগুলিতে কয়েক লক্ষ অভিযোগ জমা পড়েছে । তবুও বেপরোয়া ওই প্রতারক গ্যাং তাদের কর্মকাণ্ড বহাল তবিয়তে চালিয়ে যাচ্ছে । এবার ওই হনিট্রাপে ফেঁসে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা হারালেন আহমেদাবাদের বছর পঁচিশের এক যুবক । ঘটনাটি ঘটে গত ৬ মার্চ ।
মিডিয়া রিপোর্টে জানা গেছে,পেশায় চ্যাটার্ড অ্যাকাউনট্যান্ট (সিএ) ওই যুবকের সঙ্গে ফেসবুকে বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছিল রাজস্থানের ওই ‘হনিট্রাপ গ্যাং’-এর মক্ষীরানি । তারপর ওই মহিলা নিজের কিছু উলঙ্গ ছবি ফেসবুক মেসেঞ্জারে পাঠিয়ে যুবককে বসে করে তার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর নিয়ে নেয় । একদিন যুবকের হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ আসে । তাতে লেখা হয়,’তুমি কী করতে চাও ?’ হোয়াটসঅ্যাপের ডিপিতে মেয়েটির ছবি থাকায় যুবক ভিডিও কল করার কথা জানায়। কিন্তু ভিডিও কল আসার পর ওই যুবক কল রিসিভ করতেই মহিলার নগ্ন ভিডিও চলে আসে স্ক্রীনে । মেয়েটি যুবককেও নগ্ন হতে বলে । যুবকও উত্তেজিত হয়ে তার কথা মেনে কাপড় খুলে ফেলে । ফের দুই নগ্ন তরুন তরুনীর মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ কথাবার্তা চলে । কিন্তু সেই মুহুর্তের ভিডিও যে মহিলার দিকে একটি কম্পিউটারে রেকর্ড হয়ে গেছে তা কল্পনাও করতে পারেনি ওই যুবক । যখন সেই ভিডিও কিছুক্ষণ পরে তার হোয়াটসঅ্যাপে আসে তখন তার মাথায় কার্যত বাজ পড়ে যায় । হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে হুমকি দিয়ে লেখা হয়, ‘ইউটিউব না ডিলিট ?’
রিপোর্ট অনুযায়ী,যুবকের অনুরোধে ভিডিও ডিলিট করার কথা বলে প্রথমে তার কাছে ৫ হাজার টাকা নিয়ে নেয় রাজস্থানের ওই ‘হনিট্রাপ গ্যাং’ । তারপর বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে বা ভিডিওটি ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে যুবকের কাছ থেকে মোট ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় ওই চক্রটি । কিন্তু তারপরেও ব্লাকমেলিং বন্ধ হয়নি । পরে একটি একটি অচেনা নম্বর থেকে যুবকের মোবাইলে ফোন আসে । বলা হয়, ‘আমি দিল্লি ক্রাইম ব্রাঞ্চের এসপি গৌরব মালহোত্রা বলছি, আপনার নগ্ন ভিডিও ইউটিউবে ভাইরাল হয়েছে এবং ইউটিউব থেকে একটি অভিযোগ এসেছে, তাই আপনাকে গ্রেপ্তার করা হবে ।’ এর পরে আর কোনো টাকা না দিয়ে সোজা আহমেদাবাদ পুলিশের সাইবার ক্রাইম ব্রাঞ্চের দ্বারস্থ হয় ওই যুবক ।
এই সমস্ত ঘটনার ক্ষেত্রে সাইবার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, প্রথমত,সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো অচেনা মহিলার সঙ্গে বন্ধুত্ব পারতপক্ষে এড়িয়ে যাবেন ।
দ্বিতীয়ত,কোনো অচেনা নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে আসা ভিডিও কল রিসিভ করবেন না । রিসিভ করলেও তার আগে স্মার্টফোনের ফ্রন্ট ক্যামেরায় টেপ লাগিয়ে রাখুন । তৃতীয়ত,ব্লাকমেলিং-এর শিকার হলে কোনো প্রকার টাকা দেবেন না । বরঞ্চ ওই সমস্ত কল রিসিভ না করে বা নম্বর ব্লক করে দ্রুত স্থানীয় থানার পুলিশের কাছে বিষয়টি খুলে বলুন ৷।