শ্যামসুন্দর ঘোষ,মন্তেশ্বর(পূর্ব বর্ধমান),০৬ জুলাই : বৃহস্পতিবার নিজের বিধানসভা এলাকা মন্তেশ্বরে আক্রান্ত হন। মন্ত্রীকে ঝাঁটা ,জুতো ও কালো পতাকা দেখানোর পাশাপাশি বহু বিক্ষুব্ধ মানুষজন তার গাড়িতে ভাঙচুর চালায় । গোটা ঘটনার দায় মন্তেশ্বরের তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আহম্মদ হোসেন শেখের উপরেই চাপান সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী । আজ রবিবার বর্ধমান শহরে দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূলের মন্ত্রী ও নেতার ‘লড়াই’-এর প্রকৃত কারন ব্যাখ্যা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তিনি বলেন, ‘এতো দর কষাকষি হচ্ছে । মন্তেশ্বরের আহম্মদ হোসেন বলছে আমি দাঁড়াবো একে ভাগা । আর ও(সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী) বলছে না আমি ছাড়বো না । আমার যতক্ষণ না দেহত্যাগ হবে আমি পদত্যাগে নেই। এই তো লড়াই ।’
প্রসঙ্গত,নিজের বিধানসভা এলাকায় আক্রন্ত হওয়ার পর ক্ষুব্ধ মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী ছুটে যান জেলার পুলিশ সুপার সায়ক দাসের কাছে।পুলিশ সুপারের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলে বেরিয়ে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী বলেন,এত বড় ঘটনার পর দল যদি কোন ব্যবস্থা না নেয় , তবে তিনি দল ছেড়ে দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন।
এই বিষয়ে বিরোধী দলনেতা মন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘দম থাকলে পদত্যাগ করে রাস্তায় বের হন না । আমি তো সব ফেলে দিয়ে পাঁচ বছর আগে বিজেপিতে ঢুকেছি । গাছের খাব আর তলার কুড়াবো এই দুটো একসঙ্গে হতে পারে না।’
ওই ঘটনার ঠিক আগের দিন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) অফিসার সেজে দেড় কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগে তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা, মন্ত্রী ও বিধায়কদের ঘনিষ্ট পূর্ব বর্ধমানের রায়নার ক্ষেমতা গ্রাম নিবাসী জিন্নার আলী গ্রেপ্তার হয় । ইডি অফিসাররা বুধবার জিন্নার আলীকে তার কলকাতার নিউটাউনের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে । ধৃত জিন্নার আলীর সঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক, বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস, জামালপুরের বিধায়ক অলোক মাঝি ও ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ূন কবিরের ছবিগুলি নিজের এক্স হ্যান্ডেলে শেয়ার করে তৃণমূলের মন্ত্রী ও বিধায়কদের গ্রেপ্তারের দাবি তুলেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । আজ এই বিষয়ে তিনি বলেন,’অপরাধীদের সঙ্গে তৃণমূলের নেতাদের ছবি থাকবেই তো । মলয় ঘটক আর খোকন দাস থাকবে না হয় নাকি কখনো ? এরা চোর, চিটিংবাজ, ডাকাতদের সঙ্গে থাকবে না এটা কখনো হয় নাকি ৷’ তিনি বলেন, ‘কোন নদীর অস্তিত্ব আছে পূর্ব বর্ধমানে ? কিভাবে লুট করছে আপনারা দেখছেন না । সমস্ত নদী ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে ।’ তিনি বলেন, ‘জামালপুরের দামোদর নদের বালি কেন শেষ হয়ে গেল সেটা তৃণমূল নেতা মেহবুব খান ভালো বলতে পারবে ।’
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক দুর্নীতি প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন,কোন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে আর্থিক দুর্নীতি নেই ? প্রত্যেক কলেজের গভর্নিং বডিতে ওরা প্রেসিডেন্ট হয়ে বসে আছে । আর বিগত ১০ বছরে যত নন টিচিংয়ে নিয়োগ হয়েছে সব অবৈধ ।’।

