প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৭ অক্টোবর : বছর ঘুরলেই এই রাজ্যে হবে পঞ্চায়েত ভোট। দীপাবলি মিটতেই শাসক দলের পাশাপাশি বিরোধীরাও পঞ্চায়েত ভোটের কর্মসূচী চুড়ান্ত করে ফেললো।এবাবের পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে “চলো গ্রামে যাই’ এই কর্মসূচী নিয়েছে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস।এর পাল্টা সিপিএমও তাদের কর্মসূচী চুড়ান্ত করে ফেলেছে। সিপিএম তাদের কর্মসূচীর নাম দিয়েছে ’গ্রাম জাগাও – বংলা বাঁচাও’।আর কাটাদিন পর থেকে শাসক ও বিরোধীদের এই প্রচার কর্মসূচী ঘিরে রাজ্যের অন্য জেলার পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমান জেলাও যে সরগরম হয়ে উঠবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
এবারের পঞ্চায়েত ভোট তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে যথেষ্টই চ্যালঞ্জের ।কারণ, বিজেপি এবং সিপিএম মিলে রাজ্যের সরকার কে ফেলে দেওয়ার চক্রান্ত করছে বলে এতিমধ্যেই তৃণমূল তাদের দলীয় মুখপত্র ’জাগো বাংলায়’ অভিযোগ করেছে।রাজ্য বিজেপি সভাপতি তথা সাংসদ সুকান্ত মজুমদার আবার ডিসেম্বরেই সরকার পড়ে যাবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এই সবের পরিপ্রেক্ষিতে এই বারের পঞ্চায়েত ভোট রাজ্যের শাসকদলের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে।তাই সময় নষ্ট না করে ’চলো গ্রামে যাই’ এই কর্মসূচীকে সামনে রেখে ১ নভেম্বর থেকেই প্রচারে নেমে পড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূলের মহিলা ব্রিগেড। টানা ১২ নভেম্বর পর্যন্ত এই কর্মসূচী চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব । তাঁদের ঘোষণা অনুযায়ী, ’চলো গ্রামে যাই’ এই কর্মসূচীকে সামনে রেখে
রাজ্যের প্রতিটি জেলায় ও বুথে বুথে হবে পঞ্চায়েতি সভা। সেই সভায় উপস্থিত থাকবেন মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই সমস্ত সভার পর ২৫ নভেম্বরের মধ্যে দলের সর্ব্বোচ্চ স্তরে বুথ ভিত্তিক রিপোর্ট জমা পড়বে।
আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে তৃণমূল তাঁদের কর্মসূচী ঘোষণা করলেও পিছিয়ে থাকেনি বামেরা। তারাও নভেম্বর মাস জুড়ে গোটা রাজ্য ব্যাপি ’গ্রাম জাগাও- বাংলা বাঁচাও’ কর্মসূচীর ডাক দিয়েছে।সেই পদযাত্রায় শাসক দলকে বিঁধে বাম কর্মীরা কি শ্লোগান দেবে তাও চুড়ান্ত করা হয়েছে। ঠিক হয়েছে পদযাত্রায় বাম কর্মীরা শ্লোগান দেবে ,“পঞ্চায়েতে কত পেলে? কত খেলে? হিসাব চাই-হিসাব দাও”। সারা ভারত কৃষক সভার পূর্ব বর্ধমান জেলা সম্পাদক তথা জেলা সিপিআইএম নেতা সমর ঘোষ বলেন,’পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে এইসব শ্লোগান দিয়ে বাম কর্মীরা বুথে বুধে পদযাত্রাতো করবেই ।এছাড়াও দুর্নীতি মুক্ত বাংলা চাই,স্বচ্ছ পঞ্চায়েত চাই ,কাজ ও শিক্ষা চাই এবং ফসলের নেজ্য দাম চাই ,প্রভৃতির দাবিও বুথে বুথে গিয়ে বাম কর্মীরা তুলে ধরবে । পাশাপাশি ’লুটেরাদের উচ্ছেদ করো- মানুষের পঞ্চায়েত গড়ো’,এই আহ্বানও ভোটারদের কাছে বাম কর্মীরা রাখবেন বলে সমর ঘোষ জানিয়েছেন।সমর বাবুর প্রত্যাশা,তৃণমূলের লাগাম ছাড়া দুর্নীতি ও স্বজন পোষণের কবল থেকে পঞ্চায়েতকে বাঁচাতে গ্রাম বাংলার মানুষ সিপিএমের প্রার্থীদেরই ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।’
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যের মুখপত্র দেবু টুডু এই প্রসঙ্গে বলেন,’বামেরা কেশপুর,নেতাই, মরিচঝাঁপি ও বর্ধমানের সাঁইবাড়িতে যে গণহতার ঘটনা ঘটিয়েছিল তা বাংলার মানুষ আজও ভোলেনি । এইসবের জন্যই বাংলার মানুষ সিপিএমকে রাজ্যের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়েছে।তৃণমূল সরকারের উন্নয়ন ও
জনহীতকর প্রকল্পের দৌলতে বাংলার বহু মানুষ উপকৃত হয়েছেন । যা ৩৪ বছর ক্ষমতায় থেকেও বামেরা করে নি । সেটা বুঝেই একুশের বিধানসভা ভোটে বাংলার মানুষ ওদের শূন্য করে দিয়েছে। শূন্য হয়ে যাওয়া সিপিএম পঞ্চায়েত ভোটে যে শ্লোগান নিয়েই পথে নামুক না কেন গ্রাম বাংলার মানুষ ওদের প্রত্যাক্ষানই করবে । সিপিএম নেতাতের পঞ্চায়েত জয়ের স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে ।’।