এইদিন ওয়েবডেস্ক,কুলতলি,৩১ অক্টোবর : পশ্চিমবঙ্গে নারী নির্যাতনের ঘটনা কার্যত নিয়মিত হয়ে পড়েছে । উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গের কোনো না কোনো জেলাতে প্রায় দিনই ঘটে চলেছে নারী নির্যাতনের ঘটনা । মঙ্গলবার সন্ধ্যা ও বুধবার ভোরে গনধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে যথাক্রমে বর্ধমানের এক তরুনী ও কল্যাণীর এক গৃহবধূকে । এবারে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার কুলতলিতে জোড়া যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে । বছর চল্লিশের এক মূক ও বধির মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক প্রতিবেশী ব্যক্তির বিরুদ্ধে । বিষয়টি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ২ লক্ষ টাকা দিয়ে রফা করা চেষ্টার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল ।
পাশাপাশি একই থানা এলাকায় অশ্লীল ভিডিও দেখিয়ে এক গৃহবধূকে দিনের পর দি ধর্ষণ, ব্ল্যাকমেইল করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি পরিবারের লোককে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি শিকার হয়েছেন এক গৃহবধূ ।
অগ্নিমিত্রা পাল এনিয়ে নিজের ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘আবারও কুলতলিতে ধর্ষণের অভিযোগ!মূক এবং বধির মহিলাকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ প্রতিবেশী এক যুবকের বিরুদ্ধে।এই বাংলায় প্রতিদিন ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটেই চলেছে।মমতা ব্যানার্জীর দলের স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য নির্যাতিতার পরিবারকে ২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল।মমতার সরকার নারীদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ।আর জি কর থেকে কুলতলি সর্বত্রই মমতা ব্যানার্জী টাকা দিয়ে নির্যাতিতার পরিবারকে মুখ বন্ধ করতে চেয়েছে।মমতা ব্যানার্জী মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী হিসাবে সম্পূর্নরূপে ব্যর্থ।মহিলাদের নিরাপত্তার স্বার্থে মমতা ব্যানার্জী কি পদক্ষেপ নিয়েছে?বাংলার মানুষ উত্তর চায়।’ পাশাপাশি তিনি হ্যাশট্যাগ পদত্যাগ মমতা ব্যানার্জি ব্যবহার করেছেন ।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে,নির্যাতিতা মূক ও বধির মহিলা মা-ভাইয়ের সঙ্গে থাকেন । বুধবার দুপুরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিনি আর বাড়ি ফেরেননি । দীর্ঘক্ষণ বাড়ি না ফেরায় মহিলার মা ও ভাই তাঁকে খুঁজতে বের হন । পরে একটা পরিত্যক্ত বাড়ি গিয়ে বছর আটান্ন এর প্রৌঢ়কে কুকর্ম করতে দেখেন তারা । তারা চুপচাপ ফিরে এসে গ্রামের লোকজন ডেকে নিয়ে যান । এরপর গ্রামবাসীরা প্রৌঢ়কে হাতেনাতে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয় ।
দ্বিতীয় ঘটনায় জানা গেছে,কুলতলির নির্যাতিতা গৃহবধূর স্বামী কেরলে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন । সেই সুযোগে গ্রামেরই এক যুবক বধূকে কুপ্রস্তাব দিচ্ছিল । রাজি না হওয়ায় এক রাতে বাড়িতে ঢুকে বধূকে জোর করে ধর্ষণ করে৷ সেই ভিডিও নিজের মোবাইল ক্যামেরায় রেকর্ড করে রেখে দেয় সে । তারপর থেকে শুরু হয় ব্লাকমেলিং৷ ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে শুধু ধর্ষণই নয়,বেশ কিছু টাকা হাতিয়ে নেয় । পাশাপাশি প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকিও দিতে থাকে অভিযুক্ত যুবক ।
বধূর অভিযোগ, বছর খানেক আগে তিনি কুলতলি থানাতে এনিয়ে অভিযোগ দায়েও করেছিলেন । কিন্তু পুলিশ সেভাবে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি । একারনে হতাশাগ্রস্ত হয়ে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন । কিন্তু বেঁচে যান । শেষে বিষয়টা তিনি তার স্বামীকে বলতে বাধ্য হন । অবশেষে বুধবার রাতে স্বামীর সাথে কুলতলি থানাতে গিয়ে ফেরনলিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই নির্যাতিতা। পুলিশ জানিয়েছে,অভিযুক্ত পলাতক । তার সন্ধান চলছে ।।