এইদিন ওয়েব ডেস্ক,ভাতার,১৭ নভেম্বর ঃ সম্প্রতি ভাতার থানার মাহাচান্দা গ্রামের কাছে বিদ্যুৎ সাবস্টেশনে চুরির ঘটনা ঘটনা ঘটে । তার জেরে ৪ জন নিরাপত্তারক্ষীকে ছাঁটায়ের সুপারিশ করে বিদ্যুৎ দপ্তরের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট সিকিউরিটি এজেন্সির কাছে নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ । এদিকে এই খবর জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন নিরাপত্তারক্ষীরা ৷ মঙ্গলবার তাঁরা ছাঁটাইয়ের বিরোধিতা করে বিদ্যুৎ সাবস্টেশনের গেটের সামনে তুমুল বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন । তাঁদের দাবি,ছাঁটাই না করে ওই চারজনকে অন্যত্র বদলি করে দেওয়া হোক । যে চারজনকে ছাঁটাইয়ের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে তাঁদের মধ্যে রয়েছেন গানম্যান শেখ কামরুজ্জামান ও তিন সিকিউরিটি গার্ড সৈয়দ মহম্মদ পান্না, বিকাশ কোলে ও সফিউল আলম । চুরির ঘটনার দিন রাতে তাঁরা সাবস্টেশনে দায়িত্বে ছিলেন বলে জানা গেছে ।
ওই চারজনের ছাঁটাইয়ের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট এজেন্সির এরিয়া ম্যানেজার অচিন্ত্য বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,’আমরা বিদ্যুৎ দফতরের নির্দেশ অগ্রাহ্য করতে পারিনা । দফতর থেকে নোটিশ পাওয়ার পরেই আমাদের সংস্থার বোর্ডে এনিয়ে আলোচনা হয় । তারপর ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । কারন ওদিনের চুরির ঘটনায় কাজে গাফিলতি প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।’
জানা গেছে,মাহাচান্দা গ্রামের কাছে বিদ্যুৎ সাবস্টেশনের নিরাপত্তার জন্য প্রায় দশ নিরাপত্তারক্ষীকে রাখা হয়েছে । তাঁদের কারোর বাড়ি পুর্ব বর্ধমানে। কেউ বীরভুম জেলার বাসিন্দা । তাঁরা যে সিকিউরিটি এজেন্সির অধীনে কাজ করেন তার সদর দপ্তর বীরভুম জেলায় ।
দফতর সূত্রে খবর, অক্টোবরের ২৭ তারিখের রাতে মাহাচান্দা সাবস্টেশন চুরির ঘটনা ঘটে । প্রায় ১২ টি আইসোলেটরসহ লক্ষাধিক টাকার যন্ত্রাংশ চুরি করে নিয়ে পালায় দুষ্কৃতিরা । ওই ঘটনার পর ওই দিন সাবস্টেশনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা চারজনের বিরুদ্ধে গাফেলতির অভিযোগ তুলে সংশ্লিষ্ট সিকিউরিটি এজেন্সির কাছে রিপোর্ট পাঠান সাবস্টেশনের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক । এরপরেই এজেন্সির তরফ থেকে চারজনকে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ।
চার নিরাপত্তা রক্ষীর ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ্যে আসতেই এদিন ওই চারজন ছাড়াও বাকি নিরাপত্তারক্ষীরা বিদ্যুৎ সাবস্টেশনের গেটের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করেন । আন্দোলনকারী নীলাদ্রি শেখ,জীবন সান্ডিল্যরা বলেন, ‘আমরা প্রত্যকেই দরিদ্র ঘরের সন্তান । এই কাজ করে আমাদের পরিবার চলে। এই অবস্থায় যদি কাজ চলে যায় তাহলে আমাদের পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে । তাই কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ যে চারজনকে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা প্রত্যাহার করা হোক । তার পরিবর্তে শাস্তিস্বরূপ ওদের অন্যত্র কোথাও বদলি করা হোক। তাতে ওদের পরিবারটা অন্তত বেঁচে যাবে ।’
আন্দোলকারীদের দাবি প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ দফতরের ভারপ্রাপ্ত আ্যসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার অর্ঘ্যদীপ মণ্ডল বলেন, ‘আমরা চাই না কারও পেটের ভাত চলে যাক। আমরা শুধু দফতরের নিয়ম অনুযায়ী ফরম পূরণ করে এজেন্সির কাছে পাঠিয়েছি। ওই সিকিউরিটি এজেন্সি তাদের মতন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’