প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৮ ডিসেম্বর : বোর্ড গঠনের পর থেকে এখনও এক বছর অতিক্রান্ত হয় নি।এরই মধ্যে চেয়ারম্যানের দুর্ব্যবহার ও অনৈতিক কাজকর্ম নিয়ে চড়ান্ত অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের কালনা পৌরসভায়।কার্যত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষনা করেছেন পৌরসভার ভোটে নির্বাচিত দলেরই অধিকাংশ কাউন্সিলার ।যা নিয়ে কালনা শহরের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব।
কালনা পৌরসভার বোর্ড মিটিং ছিল বুধবার । মিটিং শেষ হতেই সংবাদ মাধ্যমের সামনে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন অধিকাংশ কাউনসিলার । তাঁরা অভিযোগে বলেন,এখন টাকার বিনিময়ে মিলছে ওয়ারিশন সার্টিফিকেট। এছাড়াও পুরসভার সই ছাড়াই বাড়ি তৈরীর অনুমতি পত্র মিলে যাচ্ছে।অভিযোগের এখানেই শেষ নয়। চেয়ারম্যান আনন্দ দত্তের বিরুদ্ধে সরকারি গাড়ি নিয়ে বিয়ে বাড়ি ও পার্টির মিটিংয়ে যাওয়া এবং বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ানোর অভিযোগও এনেছেন বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলাররা । তাঁরা এদিন জানিয়েদেন, পৌর এলাকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার পাশাযাশি কোন কাজে চেয়ারম্যান সহযোগীতা করেন না । তাই তাঁরা চান অবিলম্বে চেয়ারম্যান পদ থেকে আনন্দ দত্তকে সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা
করুক তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব ।
কাউন্সিলর সুনীল চৌধুরী কোন রাখঢাক না রেখে সংবাদমাধ্যমকে জানান,এখন ৪ হাজার টাকা দিলেই ওয়ারিশন সার্টিফিকেট বেরিয়ে যাচ্ছে।পুরসভার সই ছাড়াই ৬ হাজার টাকার বিনিময়ে বাড়ি তৈরীর অনুমতি মিলছে।দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকা কর্মচারীদের চেয়ারম্যান সমর্থন করছেন।এছাড়াও ব্যক্তি বিশেষে জমির মিউটেশনের কাজ আটকে দেওয়া ।এইসদের জন্য কালনাবাসী কাছে
তৃণমূল পরিচাঢ়িত পৌরবোর্ডের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে
। সুনীল চৌধুরী আরো বলেন,পুরসভার আয় থমকে গিয়েছে। পেনশনের টাকা দিতে অসুবিধা হচ্ছে।পুরসভার কোনও উন্নতিও হচ্ছে নাকালনা পুরসভার ভালো আয়ের পথ ছিল ফেরিঘাট।সেটিও চেয়ারম্যান আনন্দ দত্তের জন্য নষ্ট হয়েছে। রাজ্য সরকারের শিক্ষানীতি নিয়ে চেয়ারম্যানের বিরোধী বক্তব্যে দলকে অস্বস্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে। এইসব কিছু দলের উচ্চ নেত্ত্বকে জানাণো হয়েছে। দলীয় নেতৃত্ব কি ব্যবস্থা নেয় সেদিকেই এখন অধিকাংশ বিক্ষুব্ধ কাউন্ষিলার তাকিয়ে আছেন বলে সুনীল চৌধুরী জানিয়েছেন। চেয়ারম্যান আনন্দ দত্ত যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ।
কালনা শহরবাসীর কথায় জানা গিয়েছে,বোর্ড গঠনের সময় থেকেই কালনা পৌরসভায় অশান্তি শুরু হয় । গত ১৪ ই ডিসেম্বর পুরসভায় বোর্ড মিটিং চলাকালীন কাপ ছুড়ে মেরে এক কাউন্সিলারকে জখম করার ঘটনার কথা এখনও কালনাবাসী মুখে মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আবার এদিন পৌরসভার অধিকাংশ কাউন্সিলার চেয়ারম্যানের বিরদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষনা করে তার পদত্যাগ দাবি করেছেন। এমনকি বিক্ষুব্ধরা এও হুশিয়ারি দিয়েছেন ,আনন্দ দত্তকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানো না হলে তারা বৃহত্তর আন্দলণে নামবেন। এইসব ঘটনা কালনাবাসীকে সতাশ করেছে বলে বিরোধীরা দাবি করেছে। জেলা বিজেপির সহ সভাপতি সৌম্যরাজ বন্দ্যোযাধ্যায় বলেন, “করে খাওয়া নিয়ে সর্বত্রই এখন তৃণমূলের
আভ্যন্তরিন কোন্দল চরমে উঠেছে কালনা পুরসভার ঘটনা তার ব্যতিক্রম নয় ।।