দিব্যেন্দু রায়,মঙ্গলকোট(পূর্ব বর্ধমান),০৬ মে : যুবক আত্মঘাতী হওয়ার পর পরকীয়া সন্দেহে প্রতিবেশী গৃহবধুকে খুঁটিতে বেঁধে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল নিহতের পরিবারের বিরুদ্ধে । আর সেই অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা নয়ন মাঝি (২৫) নামে ওই গৃহবধু । বীরভূম জেলার বোলপুরে বাপেরবাড়ি নয়নদেবীর । মারধরের পর তিনি বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন । সেখানেই তিনি গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন । এদিকে বধুর আত্মহত্যার খবর নারায়ণপুর গ্রামে পৌঁছতেই ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এলাকায় । মৃতার স্বামী সজল মাঝির অভিযোগ,’আমার স্ত্রীকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গ্রামের বারোয়ারি কালীমন্দিরের সামনে বেঁধে মারধর করা হয়েছিল । বাঁচাতে গেলে আমাদেরকেও মারধর করা হয় । আর সেই অপমান সহ্য করতে না পেরে আমার স্ত্রী আত্মঘাতী হয়েছে ।’ দোষীদের আইনানুগ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন মৃতার স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন ।
জানা গেছে,নারায়নপুর গ্রামের বাসিন্দা নিহত যুবক সপ্তম মাঝির (২২) সঙ্গে নয়ন মাঝি নামে ওই গৃহবধুর পরকীয়া ছিল বলে সন্দেহ ছিল যুবকের পরিবারের । সপ্তম হুগলির হরিপাল এলাকায় একটি বেসরকারি কারখানায় কাজ করতেন। গত ৩০ এপ্রিল কর্মস্থলে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন তিনি । সপ্তমের বাবা সনৎ মাঝির অভিযোগ, ‘ওই বধুর সঙ্গে আমার ছেলের সম্পর্ক ছিল । মেয়েটি আমার ছেলেকে বার বার টাকা চাইত । আর সেই ভয়ে আমার ছেলে আত্মহত্যা করেছে ।’
জানা গেছে,ওই যুবক আত্মঘাতী হওয়ার পরের দিন ভোরের দিকে বধুর বাড়িতে চড়াও হয় মৃতের পরিবারের লোকজন । বধুকে ঘুম থেকে তুলে এনে গ্রামের কালীমন্দিরের সামনে একটি বিদ্যুতের খুঁটিতে প্রথমে বাঁধা হয় । তারপর চলে অমানুষিক নির্যাতন । প্রচন্ড মারধরের কারনে অজ্ঞান হয়ে যান বধু । দীর্ঘক্ষণ ওইভাবে থাকার পরে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ গিয়ে বধুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে । কিছুটা সুস্থ হলে বধুকে বোলপুরে নিয়ে যায় তাঁর বাপের বাড়ির লোকেরা । সেখানে একটি ঘরভাড়া নিয়ে থাকছিলেন বধু । শুক্রবার ভাড়া ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে তিনি আত্মঘাতী হন ।।