এইদিন ওয়েবডেস্ক,গাজিয়াবাদ,২১ এপ্রিল : ইউপির গাজিয়াবাদে মায়ের মৃত্যুর পর গত ৫ বছর ধরে মেয়ের ওপর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছেন এক বাবা। মেয়েটি যখন প্রথমবার গর্ভবতী হয়, তখন তার গর্ভপাত করা হয়। দ্বিতীয়বার গর্ভবতী হলে, বাবা তার মেয়ের চুল কেটে দেয়, যাতে সে ঘর থেকে বের না হয় এবং কোন ছেলে তার দিকে তাকাতেও না পারে। কোনোভাবে সাহস সঞ্চয় করে মেয়েটি গত ১৬ এপ্রিল রাতে বাড়ি থেকে পালিয়ে সারা রাত রেলস্টেশনে কাটায় । পরের দিন সকালে তিনি সরাসরি আদালতে যান এবং তার উপর ঘটে যাওয়া পাশবিক নির্যাতনের ঘটনা বর্ণনা করেন। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে বিষয়টি একেবারেই সঠিক বলে প্রমাণিত হয়েছে। এরপর ২০ এপ্রিল অভিযুক্ত বাবাকে গ্রেফতার করে গাজিয়াবাদ পুলিশ। নির্যাতিতার জবানবন্দি রেকর্ড করা হচ্ছে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের মোদীনগর শহরে।বর্তমানে ওই তরুনী ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ।
সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গেছে, ১৮ বছরের নির্যাতিতা দলিত তরুণী বলেছেন,’বাবা ছাড়াও বাড়িতে এক ছোট ভাই আছে। ২০১৮ সালে, আমার মা অসুস্থতার কারণে মারা যান। পরের দিন থেকেই আমার প্রতি বাবার অভিপ্রায় খারাপ হয়ে যায়। মায়ের মৃত্যুতে আমি মানসিক চাপে ছিলাম। ঘুমানোর জন্য ঘুমের ওষুধ খেতেন। এর সুযোগ নিয়ে আমার বাবা আমাকে ধর্ষণ শুরু করেন। যখন আমি প্রথম জানতে পারি আমার সাথে ঘটছে নোংরা কাজ, আমি প্রথম কাজটি আমার মাসিকে জানাই।
এরপর তিনি মোদী নগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু পরিবারের লোকজন সেখানে টাকা দিয়ে বিষয়টি ম্যানেজ করে। এর পর আমি গর্ভবতী হয়ে পড়ি। পরিবারের অন্য সদস্যরা মিলে আমাকে সাহারানপুরের একটি হাসপাতালে গর্ভপাত করান। পরিবারের সদস্যরা গর্ভপাতের সমস্ত নথিও পুড়িয়ে দেয় যাতে কোনও প্রমাণ না থাকে। এই ঘটনার পর আমি এলাকায়, টিউশনি, স্কুলে এসব বলতে থাকি, কিন্তু কেউ আমাকে সমর্থন করেনি ।
এই বিষয়ে তথ্য দিয়ে গাজিয়াবাদ পুলিশের ডিসিপি বিবেক চন্দ যাদব বলেছেন যে মেয়েটির অভিযোগের প্রাথমিক তদন্ত করা হয়েছে। তদন্তে প্রাথমিকভাবে সব অভিযোগই সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে। নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে, ১৯ এপ্রিল মোদিনগর থানায় আইপিসির ৩৭৬,৩৭৭,৩২৩,৫০৪,৫০৬,৩১৩,১২০বি এবং পকসো আইনে তার বাবা, ভাই, তিন পিসি ও কাকাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে এ মামলার প্রধান আসামি মেয়ের বাবাকে গ্রেফতার করে। ঘটনাটি আগে থেকেই অবগত থাকায় প্রতিবাদ না করায় এবং পুলিশকে না জানানোয় পরিবারের অন্য সদস্যদের আসামি করা হয়েছে । ডিসিপি জানিয়েছেন, মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে । এখন আদালতে তার গোপন জবানবন্দি নেওয়া হবে ।।