এইদিন ওয়েবডেস্ক,ব্রাহ্মণবাড়িয়া,২৪ এপ্রিল : বাংলাদেশের মুসলমানের মধ্যে দ্রুত হারে বেড়ে চলেছে কট্টরপন্থী মানসিকতা । বাড়ছে ইসলামি জিহাদি কর্মকাণ্ড । মানুষের বাক স্বাধীনতা কার্যত কেড়ে নিয়েছে ইসলামি কট্টরপন্থীদের দল । ইতিমধ্যেই প্রাণ বাঁচাতে দেশত্যাগ করেছেন বহু মুক্তমনা যুবক । এবারে প্রখ্যাত ব্রিটিশ কবি পিবি শেলীর একটা বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করার অপরাধে আক্রান্ত হতে হল বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে বাসিন্দা আল আমিন মিয়া (২৫) নামের এক যুবককে ।
জানা গেছে,সম্প্রতি নিজের ফেসবুক পেজে পিবি শেলীর একটা বিখ্যাত উক্তি পোস্ট করেছিলেন আল আমিন মিয়া । সেটি হল, ঈশ্বর যদি খুব ভালো হন, তবে কেন তাকে ভয় পেতে হবে ? তিনি যদি সবকিছুই জেনে থাকেন তবে কেন আমাদের তাকে চাহিদা জানিয়ে বিরক্ত করতে হবে? কেন তাকে আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে হবে? তিনি যদি সর্বত্র থাকেন তবে কেন তার জন্য সর্বত্র উপাসনালয় করতে হবে?’ বস্তুত এই পোস্টে নির্দিষ্ট কোনো ধর্ম সম্প্রদায়ের কথা বলা হয়নি । কিন্তু স্থানীয় ইসলামিক অর্থনীতির দল এই পোস্ট দেখে তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠে । তাদের অভিযোগ যে ইচ্ছাকৃতভাবে ওই যুবক তাদের আল্লাহর অপমান করেছে ।
তার জেরে গত সোমবার রাত ৮ টা নাগাদ বিজয়নগর উপজেলার আউলিয়া বাজারে আল আমিন মিয়ার বাড়ি ঘেরাও করে স্থানীয় মুসলিমরা । যুবককে বাড়ি থেকে টেনে হাজিরে বের করে ব্যাপক মারধর করে । আক্রান্ত যুবক আর পোষ্টের স্বপক্ষে যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করেন । কিন্তু তার কোন কথাতেই কান দেয়নি মৌলবাদীরা । খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় । হামলাকারীরা অভিযোগ করে যে আল আমিন মিয়া ইসলামবিদ্বেষী মনোভাব নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিনিয়ত প্রচারণা ও ধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক বিভিন্ন পোস্ট করে যাচ্ছিল ।
বিজয়নগর থানার ওসি মোহম্মদ আসাদুল ইসলাম বলেন,অভিযুক্ত যুবককে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে । তার বিরুদ্ধে ২৯৫/২৯৮ ধারায় মামলা রজু করে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে ।’ এদিকে বাংলাদেশী মৌলবাদীদের এই তাণ্ডবে এলাকার বৃহৎ সংখ্যক মানুষ চরম ক্ষিপ্ত হয়েছে । প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, কেউ তার মতবাদের পক্ষে যুক্তি দিলে তাকে গণধোলাই দিতে হবে ? এটা একটি অসভ্য, বর্বর সমাজেই সম্ভব। যুক্তির পরিবর্তে যারা পালটা যুক্তি দিতে পারে না, তাদের পক্ষেই এগুলো সম্ভব। এটা বর্বর এবং পাশবিক আচরণ। সরকার যদি অসাম্প্রদায়িক দেশ চায় তবে প্রশাসনের উচিৎ হবে অনতিবিলম্বে হামলায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা এবং নিজের মতবাদের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপনকারী যুবককে সসম্মানে মুক্তি দেওয়া ।।