এইদিন ওয়েবডেস্ক,বেঙ্গালুরু,২১ এপ্রিল : গত ১৮ এপ্রিল কর্ণাটকের কর্পোরেটর নিরঞ্জন হিরেমঠের ২৪ বছর বয়সী কন্যা নেহা হিরেমথকে কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যে বর্বরোচিত ভাবে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুন করে লাভ জিহাদি ফায়াজ । পুলিশ জিহাদিকে গ্রেফতার করলেও এখন তার অপরাধ লঘু করে দেখানোর চেষ্টা চলছে । ‘লাভ জিহাদ’কে আড়াল করতে ইসলামি কট্টরপন্থীদের সাথে কর্ণাটকের সিদ্দারামাইয়ার নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার কার্যত সুরে সুর মিলিয়েছে । কর্ণাটকের ধারওয়াড়ের দুই মুসলিম যুবক সাদিক তাদাকোদা এবং আদিল ইনস্টাগ্রামে নেহা এবং ফায়াজের ছবি ব্যবহার করে হ্যাশট্যাগ ‘নেহা ফায়াজ ট্রু লাভ’ এবং ‘জাস্টিস ফর লাভ’ ট্রেন্ড চালাচ্ছে । এদিকে কংগ্রেস বলেছে এটি একটি ব্যক্তিগত ঘটনা । যেকারণে লোকসভা ভোটের ঠিক মুখেই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে কর্ণাটকের হিন্দুরা । হিন্দুরা ইসলামি কট্টরপন্থী সাদিক তাদাকোদা এবং আদিলকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি তুলেছে ।
কর্ণাটকের হুব্বলির বিভিবি কলেজের ছাত্রী ছিলেন নেহা হিরেমথ । তাকে কলেজ ক্যাম্পাসে ফায়াজ নামে এক জিহাদি পড়ুয়া ৭-৮ বার ছুরিকাঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করা করে । এই ঘটনায় রাজ্যজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি রাজনৈতিক রঙ নেয় । বিজেপির অভিযোগ যে এটি ‘লাভ জিহাদ’ এর ঘটনা । জিহাদিকে অবিলম্বে ফাঁসি দেওয়া হোক । খোদ
নিহত তরুনীর বাবা নিরঞ্জন হিরেমঠও ঘটনাটিকে ‘লাভ জিহাদ’ বলে বর্ণনা করে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাবা মাকে তাদের নিজের নিজের মেয়েদের নিরাপত্তা সুরক্ষিত করার বার্তা দেন । কিন্তু কর্ণাটকের সিদ্দারামাইয়ার নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার ঘটনাটি ‘লাভ জিহাদ’ বলে মানতে নারাজ । শনিবার উপ-মুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমারকে ‘লাভ জিহাদ’ সংক্রান্ত বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে উত্তরে তিনি জানান যে তিনি অন্য কারও বক্তব্যের ব্যাখ্যা করতে পারবেন না । তবে তিনি বলেন,’কারোর প্রতি দয়া দেখানো হবে না । নেহার হত্যা মামলায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং জেলে পাঠানো হবে ।’ এই বিষয়ে তারা সংখ্যালঘু (মুসলিম) নেতাদের সঙ্গে কথাও বলেছেন বলে জানান ।
তবে কর্ণাটকের উপ-মুখ্যমন্ত্রী ‘লাভ জিহাদ’ প্রসঙ্গে সুকৌশলে এড়িয়ে গেলেও কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডঃ জি পরমেশ্বরা বলেছিলেন যে অভিযুক্ত ফায়াজ এবং নেহার প্রেমের সম্পর্ক ছিল । এই বক্তব্যের পর কর্ণাটকের হিন্দুদের মধ্যে তোলপাড় শুরু হতেই জি পরমেশ্বরা নিজের মন্তব্য থেকে সরে এসে মৃতা নেহার পিতামাতার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা করেন ।
এদিকে কর্ণাটকের মহিলা ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী লক্ষ্মী হেব্বালকর শনিবার খুন হওয়া তরুনীর বাড়িতে গিয়ে সমবেদনা জানিয়ে আসেন । সেই সময় নিহতের বাবা নিরঞ্জন হিরেমাঠ কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান । পরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে মন্ত্রী অভিভাবকদের আশ্বস্ত করেন যে,’আমাদের দল এবং আমি পরিবারের পাশে থাকব। আমরা তার মেয়ের বিচার পাব। নিরপেক্ষ তদন্ত হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। এটি একটি জঘন্য কাজ এবং এই ধরনের ঘটনা বন্ধ হওয়া উচিত।’ তিনি বলেন, তদন্তে পুলিশকে পূর্ণ কর্তৃত্ব দেওয়া হবে ।’।